Monday, February 26, 2024

চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমার মন্তব্য

 

রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে ভদ্রলোকেরা ভয় পায় কারণ তারা ঝামেলায় জড়াতে চায় না। “আমি বাবা আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিয়ে আমার কি লাভ” এই মানুষিকতা তাদের। এদেশে যারা ক্ষমতায় যায় তারা সব লুট পাট করে নিয়ে যায়, চিরকাল তাই তো চলছে এই দৃঢ় বিশ্বাস। যেই যায় লংকায় সেই হয় রাবণ, এই রকম একটা ধারণা সাধার মধ্যবিত্ত শহুরে জনসমষ্টির মাঝে হাজার বছর ধরে বিরাজমান। অবাক করার মত বিষয় হলো এই ধারণাটা বা জনমতটা আপনা আপনি সবার মধ্যে ভাইরাসের মত ছড়ায়ে গেছে। অনেকের কাছে আঙ্গুর ফল টক তাই খাব না, মানে রাজনীতি বুঝি না তাই এ নিয়ে কথা বলবো না, এই রকম মানুষিকতাও দেখতে পাওয়া যায়। আমার আগের একটা লেখা, রাজনীতি কি যেন তেন ব্যাপার? এ বলেছিলাম ভদ্রলোকেরা যদি মাঠ ছেড়ে দেয় তবে তো দুষ্ট লোকেরা মাঠ দখল করে নিবে। তাই হচ্ছে এদেশে দুষ্ট লোকেরাই রাজনীতি করছে। রাজনীতি করতে কিছুটা ডিপ্লোম্যাসি জানতে হয় যা সাধারণ ভদ্র লোকরা জানে না। তাই বলে এমন কি তারা প্রকাশ্যে মন্তব্য করতেও ভয় পাবে? হ্যাঁ, অফিসে কলিগের সাথে, চা য়ের আড্ডায় তারা রাজনীতি নিয়ে গলাবাজি করে ঠিকেই কিন্তু একটা টিভি কেমেরা ও মাইক হতে নিয়ে কোন প্রেস মিডিয়াতে মন্তব্য করার সাহস বা গলাবাজি করার সাহস তাদের নাই সেটা তাদের তর্জন গর্জন দেখলেই বুঝা যায়। চা য়ের কাপে ঝড় তুলা পর্যন্তই রাজা উজির মারা শেষ তার পর যেই সেই চিরাচরিত পুরাতন মানুষিকতা। অনেকে বলে রাজনীতি করে সব চোরের দল। আরে বাবা রাজনীতি যতি ওই চোরের দলেরা না করতো তা হলে কি চায়ের কাপে ঝড় তুলেই দেশ টা চলতো? আমিও ভয় পাই ঝামেলায় জড়ানোর কিন্তু তাই বলে প্রকাশ্যে কিংবা গণমাধ্যমে আমার মতামত তুলে ধরতে আমি ভয় পাই না, আমার সাংবিধানিক অধিকার সম্পর্কে আমি অবহিত ও তার উপর ভিত্তি করেই আমার সমালোচনা আমি মুক্ত মঞ্চে উপস্থাপন করতে পারি বলে আমার ধারণা।

বিএনপির ধানের শিষে যে পচন ধরেছে তা কি তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ লক্ষ্য করেছেন না? সময়মত ধান না কাটলে যে তাতে পচন ধরবে তা তো প্রাকৃতিক সত্য । যারা পরাজিত হয়েও সেটা মেনে নিতে পারে না কিংবা তাদের ভুল গুলো ধরতে অপারগ হয় তবে তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাব আছে বলতেই হবে। বিএনপি সম্পর্কে আমার মন্তব্য তাদের তরুণ নেতৃত্ব প্রবণতাতে ভুল বা ত্রুটি আছে। বিরোধী দল কতটা রাজনৈতিক ভাবে সবল হলে তাদের বিপক্ষকে খাঁচায় বন্দি করে নির্বাচনের মাঠ ফাকা করে নিয়ে ক্ষমতা পুনর্দখল করে তার পর বিপক্ষদের ছেড়ে দেয় তা দেখে বিশ্বয় বোধ হয়। বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে এতটাই বিপর্যয়ের মুখে পরেছে যে কোন একটা জন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সৃষ্টি করতেই পারছে না। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য আকাশ ছোঁয়া কিন্তু বাজারে পণ্যের অভাব নাই, বিক্রেতার অভাব নাই আর ক্রেতাও আছে প্রচুর। অর্থনীতির নানা দোষত্রুটি সহ তা স্বাভাবিক না হলেও ভালই চলমান আছে দেখা যাচ্ছে। হ্যাঁ নানা দিকে বাক নিচ্ছে, উত্থান পতন হচ্ছ ঠিকই কিন্তু গাড়িটা তো চলমান আছে। বেশ কয়েক বছর আগে আমি আমার এক কলিগকে অফিসে যাওয়ার পথে বিতর্কে বলেছিলাম মাইক্রো ইকনমি সুস্থ আছে কি না বুঝবেন কিভাবে? যখন দেখবেন বাজারে পণ্য আছে প্রচুর আর তার ক্রেতাও আছে যথেষ্ট তাহলে বুঝতে হবে ইকনমি সচল আছে। আমরা আদর্শ বাজার বা পারফেক্ট মার্কেট কাকে বলি? যেখানে প্রচুর বিক্রেতা আর ক্রেতার সমারহ ও পণ্যর অবাধ প্রবাহ আছে তখন তাকে বলি। যার কাছা কাছি বাস্তব চিত্র ঢাকার বাজার গুলোতে এখন দেখা যাচ্ছে। এত পণ্য মূল্যর ঊর্ধ্বগতি কই পণ্যর তো কমতি নাই বাজারে আর ক্রেতার সংখ্যাও তো কমে নাই। কি বুঝবেন এটা থেকে? কেউ যদি বলে হায় হায় এত বাজার মূল্য, এত সিন্ডিকেশন অর্থনীতির তো বারোটা বেজে গেছে। আমরা যারা অর্থনীতির ছাত্র তারা জানি মুক্ত বাজারে সিন্ডিকেশন করে বেশি দিন বিক্রেতা টিকে থাকতে পারে না কারণ পণ্য যদি অবাধে বাজারে আসার সুযোগ পায় আর বাজারে যদি ক্রেতা থাকে প্রচুর তা হলে সিন্ডিকেশন কাজ করে না। যারা অর্থনীতি কখন পড়ে নাই তারা মুক্ত বাজারে সিন্ডিকেশন এর ভুত দেখে ভয় পায়, আমরা পাই না। বাজারে পণ্যর প্রাচুর্য আছে বিক্রেতাও আছে প্রচুর আর ক্রেতাও আছে যথেষ্ট। পণ্য – বিক্রেতা –ক্রেতা এই চক্রের গ্রিডে কোথাও ঝামেলা হলে পুর সাইকেলটাই বন্ধ হয়ে চরম দুর্গতি দেখা দিবে চোখের নিমেষে। তা কিন্তু হতে দেখা যাচ্ছে না। যেটা দেখা যাচ্ছে সেটা একটা সুস্থ অর্থনীতির চিত্র । সংবাদ মাধ্যমও অবাধ ও মুক্ত আছে। মূর্খের মত তর্ক করে অনেকে হায় হায় করে কিন্তু দেশ সঠিক ভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে এটা আমার সুস্থ মস্তিষ্কের নিরপেক্ষ মতামত। বিএনপি তাদের ভুল গুলো ধরতে পারলে আমি খুশি হতাম। দেশে একটা শক্তিশালী বিরোধি দল অবশ্যই প্রয়োজন । তবে সে বিরোধী দলকে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা সম্পন্ন হতে হবে, হুজুগে মেতে যা খুশি তাই বললে হবে না। জনগণ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজনীতি ও অর্থনীতি বোঝে। কম বেশি ৬০% জনগণ ভোট দেয় নাই মানে এই নয় যে তারা ক্ষমতাসীন দলকে প্রত্যাখ্যান করেছে এর মানে এও হতে পারে যে, ভোট নেয়ার আগেই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল আর তাতে তাদের কোন আপত্তি ছিল না বলেই তারা ভোট দেয় নাই। যদি তাই না হতো তা হলে নির্বাচনের ফলাফলের পর জনগণ রাস্তায় নেমে আসতো এর প্রতিবাদে, তা তো হতে দেখা যায় নাই। লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড দিলেও বিএনপি ঠিক মত তাতে নাচতে পারতো বলে আমার মনে হয় না। আর নাচতে না জানলে তারা তো উঠানটা বাঁকা বলবেই। আমার রাজনৈতিক মতামতে নিরপেক্ষ আর বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে আরো প্রজ্ঞার পরিচয় দিক সেটাই আমার চাওয়া।  

আমার কলিগ ও বেচমেট হাবিবুর রহমান উপরের মন্তব্যে ফেইস বুকে তার প্রতিবাদী ভাষাটা ছিলো এরকম ”পকেট ভরে টাকা নিয়ে বাজারে গেলে কেমনে বুঝবা! কখনো টাকার অভাবে দুই-এক বেলা না খেয়ে থেকেছো এমন হয়েছে তোমার? অথবা, বাড়ি ভাড়া, বাচ্চাদের স্কুলের বেতন ইত্যাদি দিয়ে বেতনের টাকা শেষ কিন্তু এখনো মাসের ৫ দিন বাকি, ধার করে টাকা নিয়ে বাজারে গেছো, এমন হয়েছে তোমার? মুক্ত বাজারে সিন্ডিকেট থাকবে এটা যেমন স্বাভাবিক, আবার সরকার জনগণের স্বার্থে বাজার স্থিতিশীল রাখবে এটাও স্বাভাবিক নয়কি? কৃষক যে জিনিস বিক্রি করে ৮/১০ টাকায় সেটা খুচরা বাজারে বিক্রি ৪০/৫০ টাকায়! এটা কি মুক্ত বাজার???”
 

না আমার সেরকম হয়নি কিন্তু আমি ওই অবস্থাগুলো সম্পর্কে অনুভব করতে পারি। মুক্ত বাজারে সিন্ডিকেট বেশিদিন টিকে থাকে না সেটা স্বাভাবিক আর মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বা করা উচিত না। বাজার তার নিজস্ব গতিতে আগাবে সেটাই স্বাভাবিক। উদ্যোক্তা - মধ্যসত্তভোগী-বিক্রেতা-ভোক্তা এই চেইনে দামের হের ফের হবেই তা কতটা হবে তা মুক্ত বাজারে আমি আপনি কিংবা সরকার নিয়ন্ত্রণ করার কোন অস্ত্র রাখে না। অর্থনীতির বইগুলো পড়েন তা হলে বিষয়গুলো পরিষ্কার হবে। সরকার জনগণের স্বার্থে বিটিসি (বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন) এর বিপণন কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করতে পারে মাত্র কিন্তু তাতে যদি কাজ না হয় তবে সরকারের কিছুই করার নাই। ভোক্তা সংগঠন ক্যাব এর কিছু করার থাকলেও থাকতে পারে। সমাজ ও সংঘর গুরুত্ব গুলো পাঠ্য পুস্তক থেকে আবার ঝালাই করে নেয়ার অনুরোধ রাখলাম।  না খেয়ে থাকা লোকগুলো মুখ বুজে রোজা রেখে দিন কাটাচ্ছে তাই কি? তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে না কেন? বিএনপির মত রাজনৈতিক বিরোধীদল আছে না, তাদের লিফলেট বিলি করে জনগণকে বুঝাতে হচ্ছে যে তোমাদের পেটে খুধা নিয়ে ঘরে বসে থেকো না, রাস্তায় নামো। আপনার মতে কি এটা যে, কেউ না খেয়ে বাসায় বসে থাকবে রাস্তায় নামবে না, লিফলেট পড়েও নামছে না কেন? নিজেকে প্রশ্ন করেন কেন? কেন? কেন? – এটা ছিল আমার উত্তর, জানি না সে উত্তরটা পড়েছে কিনা, তার কোন প্রতি মন্তব্য পাই নাই।

আমার সরল দৃষ্টিতে যা বুঝি, তা হলো, আওয়ামীলীগ সরকারের টানা তিনবার টিকে গেল ক্ষমতায়, অনেকের মতে ছলে, বলে, কৌশলে। আমার কথা হলো এই ছলে, বলে, কৌশলেই তো রাজনৈতিক ডিপ্লোম্যাসির নাম। বিরোধীরা তাদের ছল, বল ও কৌশলে হেরে গেছে দেখেই না আওয়ামীলীগ সরকার জিতে গেল। শেখ হাসিনা এখন নিজেই একজন লিজেন্ডে পরিণত হয়েছেন। তাকে আর তার বাবার পরিচয়ে পরিচিত হতে হয় না। এই অর্জনও কম কথা নয়। আওয়ামে লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের যখন সড়ক ও সেতু বিভাগের দায়িত্ব নেয় ও রাস্তাঘাটের সংস্কার শুরু করে তখন আমার মা তার প্রশংসা করেছিল সেই ২০১৬ সালেই যখন সে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পায় নাই। তাকে নিয়ে নানা জন নানা কথা বলে কিন্তু দেশ জুরে সড়ক পথের যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে তা সবার নজরে এসেছে। আমার গাড়ির বিশ্বস্ত ড্রাইভার রুবেল কে বলতাম যখন পদ্মা সেতু চালু হবে তখন এদেশের অর্থনীতি গিয়ার আপ হবে, যেমন করে তুমি গাড়ির গিয়ার আপ কর সেভাবে, হয়েছেও তাই। মেট্রোরেল, এক্সপ্রেস হাইওয়ে, ৮ লেনের ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে রাস্তা ঘাটের ব্যাপক উন্নতি চোখে পড়ার মতো। কর্ণফুলী আন্ডার ওয়াটার টানেল চালু করে দেয়াও তো একটা অর্থনৈতিক উন্নয়ন। লোকজনের ব্যস্ততা বহুগুণ বেড়েছে আর তাদের দ্রুতগতিতে স্থানান্তরের সুবিধাগুলোর কারণে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাপক গতি সঞ্চারিত হয়েছে যা বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। এত কিছুর কারণেই জনগণ আওয়ামীলীগ সরকারের তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায় আরোহণের পক্ষে মৌন সম্মতি জানিয়েছে বলে আমার মনে হয়। যে ৬০ শাতংশ ভোট পড়ে নি তারা মৌন সম্মতি দিয়েছে তা যাদের বুঝার ক্ষমতা আছে তারা ঠিকই বুঝেছে।

অপর পক্ষে বিএনপি’র সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভীর তারেক রহমানের পাঠানো বার্তা পড়ে শোনানোর মত ঘটনাও আমরা দেখছি। তারেক রহমান এর মধ্যে তারা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের ছায়া দেখতে পায় বলে শুনা যায়। কিন্তু সেই ছায়া কিসের ছায়া। তার কি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর ছায়ার অধিকার আছে? সে কি তার পিতার রাষ্ট্রপরিচালনার সাথে পরিচয় আছে, কিংবা তার মা খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রপরিচালনার সময় সে যে সব দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত তার ছায়া রুহুল কবির রিজভী, আমির খসরু কিংবা মির্যা আব্বাস রা দেখতে পান? তারেক রহমান বিদেশে বসে রবার্ট ব্রুসের মত মাকড়সার জাল বুনছে আর দেশে নানা অরাজকতার জন্য অভিযুক্ত হচ্ছে এটা কোন ধরনের রাজনীতি? তারেক রহমানকে দেশে এসে জনগণকে এ্যাডরেস করে জনসভায় বক্তব্য দেয়ার মত সাহস নিয়ে স্বদেশে ফেরত আসতে হবে। এদেশে আসলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে ও বিচার করা হবে এই ভয় পেয়ে সে দেশে কেন আসবে না? তার রাজনৈতিক দলের কি এই শক্তিটুকুও নাই যে, তার নেতাকে তারা নিরাপত্তা দিতে পারে না? আমার জীবদ্দশায় আমি বিএনপি ও আওয়ামে লীগ দু দলের রাষ্ট্রপরিচালনা দেখেছি। আমার নিরপেক্ষ অভিজ্ঞতা বলে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্র যন্ত্রের বিভিন্ন চাকা গুলো ঢিলা ঢালা হয়ে যায় অপর পক্ষে আওয়ামে লীগ ক্ষমতায় আসলে আমরা রাষ্ট্রীয় চাকাগুলোকে সঠিক ভাবে চলমান দেখতে পাই। তাই বলতে চাই কোন পক্ষে মানুষিক ভাবে আসক্ত না হয়ে নিরাসক্ত মন্তব্য করুন। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আ এসআইবিএল এর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নির্বাচনের আগে বলছিলেন তিনি আইন পড়ছেন কারণ তার দল ক্ষমতায় আসলে সে আইনের বিষয়গুলো দেখবেন। তার ধারণা ছিল এতদিন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আছে তাই এবার তাকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে। তাকে প্রশ্ন করেছিলাম আপনার সরকার গঠন করলে কি তারেক রহমানকে প্রধান মন্ত্রী বানাবেন? তার উত্তর ছিল, অবশ্যই, কারণ সে তরুণ আর অত্যন্ত যোগ্য বলে সে মনে করে। আমি তার কথা মানে পারি নাই এখনও পারি না।

স্রেফ বাঙ্গালী নয় বাংলাদেশী জাতি গঠনে ও এপার বাংলার জাতীয়তাবাদ সংঘটনে, বাংলাদেশের গোরা পত্তনে ও রাজনৈতিক সংগ্রামে যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন এবং যারা তাকে সহযোগিতা করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যারা লড়েছেন ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মত অভাবনীয় কৌশল প্রদর্শনের পারদর্শিতা দেখিয়েছেন, একটা প্রশিক্ষিত আর্মির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে নিয়ে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তাদের সকলকেই শ্রদ্ধা ও মূল্য দিতে হবে । খুব ঠাণ্ডা মাথায় বিষয়গুলো বিবেচনা করলে এদের সকলকেই স্মরণে রেখে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে হবে। এরাই আমাদের ঐতিহ্য।

সম্পদনা ও উন্নয়ন ইতিহাসঃ ১৭ফেব্রুয়ারী২০২৪> ২০ফেব্রুয়ারী২০২৪> ২৭ফেব্রুয়ারী ২০২৪>


আমার কাছে অনেকের প্রশ্ন
আপনি এত সময় কই পান? এত বড় বড় লেখা কখন লিখেন?

উত্তরঃ আমি একটা লেখা শুরু করার পর বিভিন্ন সময় তাতে আমার চিন্তা গুলো যোগ করে যখন দেখি তা অন্যর সাথে শেয়ার করার উপযুক্ত হয়েছে তখন তা ব্লগে প্রকাশ করে মতামত আশা করি। আমার লেখার উদ্দেশ্য মূলত অন্যর সাথে আমার চিন্তা ভাবনা গুলো শেয়ার করা। অনেকের প্রশ্ন লেখার জন্য এত সময় আমি পাই কই। একটু একটু করে লিখি অনেক দিন ধরে, কোন কোন লেখা বছর গড়ায়ে যায়। তাই আমার প্রতিটি লেখার নিচে কবে কবে লিখেছি তার একটা উন্নয়ন ও সম্পাদনা ইতিহাস যোগ করা থাকে। আমার এক বন্ধুর জানার আগ্রহে বলেছিলাম, কেউ আছে যারা দুইটা বল নিয়ে জাগল করতে পারে না আবার কেউ কেউ আছে যারা ৪, ৫ টা বল নিয়ে দুই হাতে জাগল করতে পারে। এটা তার বা যার যার দক্ষতার বিষয়। তাছাড়া বিন্দু বিন্দু করেই তো সিন্ধু হয়। অল্প অল্প করে লিখি একসময় তা অনেক হয়ে যায়, তখন সম্পাদনা করে কাট ছাট করে দরকারি কথা গুলো রেখে বাকি গুলো বাদ দিয়ে দেই। আজকের জমানায় এত এত সফটওয়ার আর অনলাইন টুল চলে আসছে যে আমরা অল্প সময়ে অনেক কাজ ও অনেকের সাথে যোগাযোগ করতে পারি তবে সেটা তখনই পারি যখন আমরা এই উন্নত টুলস গুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে শিখি। সিস্টেমেটিক ভাবে কাজ করলে প্রচুর কাজ ও জটিল কাজ গুলো সহজে করা যায়। তাই যারা যত বেশি টুল ব্যবহার করতে শিখেছে তারা তত বেশি অন্যর চেয়ে বেশি কাজ করতে পারছে। আমি টুলস গুলো ব্যবহার করে অনেক কাজ দ্রুত করে ফেলতে শিখেছি তাই অন্য কারো কাছে মনে হতে পারে আমি হাইপার একটিভিটি শো করছি, প্রকৃত পক্ষে তা নয়, বরং ডিসিপ্লিন ও মেথড ব্যবহার করে আমি প্রচুর কাজ করছি স্বচ্ছন্দে ও সাবলীল ভাবেই। অন্যরা পারছে কি না সেটা আমার ধর্তব্যের বিষয় না।

আমি আমার লেখায় কম্পিউটার ব্যবহার করি আর আমার চিন্তাভাবনা গুলো লিখে রাখি বিভিন্ন সময়। আমার টাইপ স্পিড বাংলায় মিনিটে ৫০ শব্দ আর ইংরেজিতে ৫৫ শব্দ হওয়ায় প্রচুর কথা লিখতে পারি। টাইপ স্পিড বৃদ্ধির জন্য আমি মেভিস বেকন টিচার্স টাইপিং ভার্শন ফোর এর কাছে আমি ঋণী। বানান ভুল সংশোধনের জন্য আমি অভ্রর স্পেল চেকারের কাছে ঋণী। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর ট্রেক চেঞ্জ ফাংশন আমাকে আমার লেখা সম্পাদনা করতে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য করে। একটা হাইলি কাস্টমাইজড কম্পিউটার ফাইল আমার লেখাগুলো সংরক্ষণ করে যেটাতে আমি ন্যাভিগেশন টুল ব্যবহার করে যখন যে লেখাটাতে আমার কথা সংযুক্ত করতে চাই তা করতে পারি। এ সব গুলো টুল ব্যবহার করে আমার মনের কথা আপনার কাছে পৌঁছে দেই এই প্রত্যাশায় যে আপনি তা পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাকে সমৃদ্ধ করবেন। কিন্তু মানুষ পড়ে (কতগুলো হিট হলো তা আমি দেখতে পাই ব্লগের কন্ট্রোল প্যানেলে) কিন্তু কোন মন্তব্য করে না দেখে প্রায়শই হতাশ হই। বেশির ভাগ পাঠকই হয়তো এত বড় লেখা দেখে সুইপ ডাউন করে চোখ বুলায়ে যায়। পড়লে তো সে মন্তব্য করতো কিন্তু বাঙ্গালীদের মধ্যে ভারচুয়াল রিয়ালিটির কনসেপ্টটা এখনও পুরোপুরি বোধগম্য হয়নি কিংবা তারা সহজে মন্তব্য করতে চায় না, যা আমার বিশ্বের অন্যান্য অংশে দেখি না। ওখানে প্রায়শই তাদের পোস্টে মিলিয়ন মিলিয়ন রিএকশন আসতে দেখা যায়। হলিউড তারকা মরগান ফ্রিম্যান এর কাজ ও কথা আমাকে মারাত্মক প্রভাবিত করেছে তাছাড়া বারট্রান্ড রাসেল ও এলডাস হাক্সলির লেখাও আমার অত্যন্ত প্রিয়।

আপনি রাজনৈতিক ভাবে কোন মতাদর্শের অনুসারী?

উত্তরঃ আমাদের সংবিধানের মূল নীতি মতে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। ধর্মীয় গোঁড়ামির মধ্যে আমি নাই। এই কিছুদিন আগেও ছিলাম কিন্তু এখন এর চরম বিরোধিতা করি। প্রতিটি ধর্মের ছাতার  নিচেই অন্ধকার আর ঝর বৃষ্টির ভয়ে অনেকেই সেই ছাতা মাথায় দিয়ে আছে, আমি মনে করি ছাতা সরালেই তারা আলোকিত আকাশটা দেখতে পাবে। আমি ছাত্রাবস্থায় কিংবা চাকুরী জীবনে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না তবে ২০০২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত মুসলিম প্রফেশনালস ফোরাম এর সাথে যুক্ত ছিলাম। ওই সময় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাই। ২০১৬ তে মায়ের মৃত্যুর পর ধর্মের উপর সকল আস্থা হারায়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও পরবর্তীতে প্রথা বিরুদ্ধ মানুষিকতায় চলে আসি। দেশের কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই, কখন ছিলও না। যারা ভালো কাজ করে ও সঠিক পথে চলে আমি তাদের সমর্থন করি আমার লেখার মাধ্যমে তা প্রকাশও করি।

No comments:

Post a Comment