ছোটদের মধ্যে যেমন দেখা যায় মোবাইল কিংবা ট্যেবের প্রতি প্রচুর আগ্রহ, বড়দের আগ্রহও কম যায় না। ইন্টালিজেন্ট ডিভাইসের হিউম্যান ইন্টারফেসিং দিন দিন বাড়ছেই। তাই যখন বলা হয় খুব তাড়াতাড়িই সাইবর্গদের যুগ চলে আসবে যখন মানুষ তার শরীরে প্রচুর ডিজিটাল ডিভাইস সংযোজন করবে। এখন যখন আমরা ব্লুটুথ কিংবা ইয়ার ফোন ব্যবহার করে মোবাইলে আমাদের পছন্দের গান গুলো সিলেক্ট করে তাতে স্যাফল ফাংশন দিয়ে শুনি তখন এই ইয়ার ফোনটা কিংবা ব্লুটুথ ডিভাইসটি হিউমেন ইন্টারফেস হিসেবে কাজ করে। মোবাইলটা ইন্টালিজেন্ট ডিভাইস কারণ আমি যে গানগুলো পছন্দ করি সেগুলো হয়তো আমাকেই নির্বাচন করে দিতে হয় কিন্তু ডিভাইসটির স্যাফল ফাংশন আমাকে অনিশ্চয়তার একটা আনন্দ দেয়। গনগুলো পর পর শুনলে মন ঠিক বুঝে যেত কোন গানটার পর কোন গানটা আসবে সেক্ষেত্রে বিষয়টি একঘেয়ে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু ডিভাইসটার স্যাফল ফাংশনটা ইন্টালিজেন্ট কারণ সেটা কোন গানটা সিলেক্ট করবে তা আমরা আগে থেকে জানতে পারি না, ওটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে এটা পছন্দ করে দেয় আমাদের জন্য। কম্পিউটারে আমি যে টাইপ করছি কি বোর্ড দিয়ে এই কি বোর্ডটি একটি হিউম্যান ইন্টারফেস যা দিয়ে আমি কম্পিউটারটিকে কিছু করার নির্দেশ প্রদান করতে পারছি। মনিটরটি যা আমাকে দেখাচ্ছে যা আমি টাইপ করছি সেটিও হিউম্যান ইন্টারফেস। এক কথায় যা কিছু আমাদের বুদ্ধিমত্তাকে বুদ্ধিমান যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত করে তাই বুদ্ধিমান যন্ত্রাংশের মানব সংযুক্তি বা হিউমেন ইন্টারফেস। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে তাই বুদ্ধিমান যন্ত্রের সমারহ। এই সব বুদ্ধিমান যন্ত্রের সাথে মানুষ যা দিয়ে সংযুক্ত হচ্ছে তাই মানব সংযুক্তি বা হিউম্যান ইন্টারফেস। ইন্টালিজেন্ট ডিভাইস বা বুদ্ধিমান যন্ত্রে যে বুদ্ধি সংযোজন করা হয় তাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যাকে ইংরেজিতে বলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই। আজকাল হাতে একটা ডিজিটাল ঘড়ি পড়ে থাকলে সে মেপে বলে দিতে পারে আপনি সারাদিনে কতটা পদক্ষেপ হেঁটেছেন, আপনার ওজন কত, আপনার রক্তের চাপ কত চলছে, এরকম কত কিছুই দিন দিন হিউমেন ইন্টারফেসিং এ চলে আসছে।
বিষয়টা এমন যে কিছু অতি বুদ্ধিমান মানব যন্ত্রের মধ্যে তাদের বুদ্ধিমত্তা প্রসূত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভরে দিচ্ছে যা দিয়ে কম বুদ্ধির মানবেরা প্রচুর পরিমাণ সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। এই সুবিধাটা তারা পাচ্ছে টাকার বিনিময়ে কিন্তু সামগ্রিক ভাবে পুর মানব সভ্যতা উন্নত হচ্ছে। আর এখন তো সর্বসাধারণের হাতের নাগালে বিশ্বের অন্যতম সর্বউন্নত এআই চেট-জিটিপি যা দিয়ে বহু কিছুই করা সম্ভব। গুগল এর বিস্ময়কর সব সার্ভিস গুলো পুর বিশ্বটাকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে তার ইভলিউশনারী এআই দ্বারা। প্রশ্ন হচ্ছে মানব যখন কিছু সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তখন তাকে মানব সদৃশ করতে চাচ্ছে কেন? কেন মানুষ মানব সদৃশ রোবট বানাতে চাচ্ছে? রোবট আর্ম আর কম্পিউটার প্রোগ্রামিং নিয়ন্ত্রিত বহু যন্ত্রাংশ ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়ে গেছে কিন্তু মনে হয় মানুষ মানব দেহকে এতই পছন্দ করে যে, সে তার আকৃতিতে যন্ত্র মানব বা রোবট বানাতে চায়। অনেকে মানব দেহকে অপূর্ব সমন্বয় বা ইন্টেলিজেন্ট ডিজাইন মনে করে কিন্তু হলিউডের এক বিনোদনমূলক টিভি টক শোতে বেঙ্গ করে বলা হয়েছিল এতটাই দারুণ দেহ বিন্যাস যে বিনোদন কেন্দ্রের পরেই নরদমা কিংবা পয়নিষ্কাসন ব্যবস্থা। হলিউডের চাপাই মুভিটাতে দেখায় চাপাই নামক যন্ত্রমানবকে ধ্বংস করার পরও তার চেতনাকে অন্য আরেকটা যন্ত্র মানব বা রোবটে ট্র্যান্সফার করা গেল। এ.এক্স.এল মুভির সেই যান্ত্রিক নেকড়েটা সেল্ফ ডিসট্রাকশনে ধ্বংস হয়ে গেলেও তার চেতনা সফটওয়ার আকারে রয়ে গেল যা যে কোন নতুন যন্ত্র নেকড়েতে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। সোনালী ব্যাংকের আমার পরিচিত ইকবাল স্যার একবার একটা ডিভাইস আমদানি করতে চাচ্ছিলেন, ও’টা একটা কলম যা দিয়ে কোরআন শরিফের যে কোন আয়াতে পয়েন্ট করলে তা ৩৬টি বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে দিতে পারবে আয়াতটাকে। আবার একটা চশমার ছবি দেখেছিলাম অন্তরজাল বা ইন্টারনেটে যেখানে কোর’আনের যে কোন সুরা ভাসতে থাকবে আর তা দেখে দেখে নামাজে তা পড়া যাবে। কিন্তু এই নব্য ফতোয়াবাজ মুসলিম সমাজ সেই চশমা দেখে দেখে কোরআনের আয়াত পরে নামাজ পড়াকে বাতিল বলে গণ্য করলো। দিন কে দিন নতুন নতুন মানব সংযুক্তি সহ ইন্টেলিজেন্ট ডিভাইস আসতেই থাকবে যা আমাদের জীবন যাপনকে বদলে দিতে থাকবে। এটাকেই এখনকার স্বাভাবিক বাস্তবতা ধরে নিতে হবে। যারা যন্ত্র সংযুক্ত হয়ে আজব আকার ধারণ করবে তাদেরকে একসময় সাইবর্গ বলে ডাকা হবে। এটাকে মানব সভ্যতার উন্নয়ন বলা যায় নিঃসন্দেহে। উদাহারন দিচ্ছি আমাকে দিয়েই, আমার কর্ম জীবন শুরু ১৯৯৮ সালে কম্পিউটারে একটা পত্রিকা অনলাইনে আপলোড করা দিয়ে। আমি যা দুই ঘন্টায় সম্পাদন করতাম। তখনই সফটওয়ার সুইচিং এর সাথে পরিচিত হই। ওয়ার্ড স্টার ফাইলগুলো ফ্রন্ট পেইজ ৯৮ এ চট জলদি কনভার্ট করতে দুটো সফটওয়ারে এ আল্ট+টেব দিয়ে সুইচ করতে হতো। আমি যখন আমার ছোট মামার ডেক্সটপ পাবলিশিং হাউজ পল্টনের কালার রুটসে মামার হাতেই ফটোশপ ও ইলাস্ট্রেটর শিখলাম তখন আমার ১৯৯৮ সালের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে স্থাপিত ইনিস্টিটিউট অফ সাইন্টিফিক ইন্সট্রুমেন্টেশনের এক বছরের সার্টিফিকেট কোর্সের চেয়েও আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা আরো বেড়ে গেল। তার পর এন.আই.আই.টি তে কম্পিউটার এর শিক্ষকতা করতে গিয়ে গ্লোবাল নেট কারিকুলামের আরো প্রচুর কিছু শিখলাম, তার পর টেকনো কিডস এ বাচ্চাদের ক্যানাডিয়ান কম্পিউটার কারিকুলামের শিক্ষক থাকার সময়ও আমার অভিজ্ঞতা আরো বৃদ্ধি পেল। কম্পিউটার টেকনোলোজিও দ্রুত বাড়তে থাকে আমার বড় হওয়ার সাথে সাথে। মাল্টি টাস্কিং এর সময় মাল্টি লেয়ার ডেক্সটপ এর ব্যবহার আমাদের দক্ষতা আরো বাড়ায়ে দিল। তার পর আসলো এনড্রয়েড মোবাইল যা বিশাল এক লম্ফন এই ডিজিটাল বিপ্লবে। আমাদের এর প্রতিটি ধাপের সাথে খাপ খাওয়ায়ে নিতে হয়েছে। আমি যখন সোনালী ব্যাংকের এমডি’স স্কোয়াডে কাজ করি তখন প্রচুর টাইপের কাজ করতে হতো। আমি গান শুনতে শুনতে সেই কাজ করতাম। আমি খেয়াল করলাম যে, এতে আমার মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। গানটা পরিচিত বা বার বার শ্রুত হওয়ায় তা পরিপার্শ্বের মধ্যে থেকে আমাকে আলাদা করে দেয় যার ফলে আমার মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। এর মানে হলো উচ্চ ভলিউমে গানটা একটা ভারি পর্দার মত কাজ করে যা আমাকে আমার চারপাশের অযথা হট্টগোল থেকে আমার কর্মের দিকে আমার মনকে নিবিষ্ট করে দেয়। আমি যখন ছাত্র ছিলাম তখন তো আর এন্ড্রয়েড মোবাইল ছিল না কিন্তু গান শুনার জন্য ওয়াক ম্যান ছিল, ওটাতে গান শুনতে শুনতে অংক করলে ভালই লাগতো কিন্তু মা বকতেন এই বলে যে আমার মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। আসলে ভাল লাগা গানগুলো বার বার শুনলে মন তা আগে থেকেই জেনে যায় ও সেই অনুভূতির একটা বেকগ্রাইন্ড তৈরি করে কিন্তু আমার কর্ম মানে আমার মনোযোগের কোন ক্ষতি সেটা করে না বরং পরিপার্শ্বের বিশৃঙ্খল ঘটনা প্রবাহ থেকে তা আমাকে পর্দা দিয়ে আড়াল করার মতো করে অনেকটা একমুখী করে দেয়। তাই যখন আমার বড় মেয়েকে পড়ার সময় কানে ইয়ার ফোন ব্যবহার করতে দেখি তখন আমার মা’র মত তাকে ধমক দেই না। কারণ আমি জানি এই ইন্টারফেসিং টা তার মাথায় ভিন্ন ভাবে কাজ করছে, তাকে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে তার পড়ার প্রতি আরো মনোনিবেশ করতে ভারি পর্দার মত কাজ করছে।
আরেকটি হিউমেন ইন্টারফেসিং হলো ভয়েস কন্ট্রোল ডিভাইসেস। বর্তমানের স্মার্ট টিভি থেকে শুরু করে গুগল সার্চ সবই ভয়েস কমান্ড দিয়ে করা যাচ্ছে। এর পর এমন সব যন্ত্রপাতি আমাদের ব্যবহারে চলে আসবে যাকে মুখে কথা বলে চালনা করা যাবে। এটা উন্নত সভ্যতার একটা পরম সুবিধা বলা যেতে পারে। এই সুবিধার এক ভয়ংকর বিপদজনক দিকও আছে, খালেক ভাই বললো প্রায় তিন বছর আগে থেকেই ভয়েস ক্লোনিং করে টাকা আত্মসাতের চক্র সক্রিয় হয়ে গেছে। আপনার ভয়েস আরটিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে হুবহু নকল করা যায় আর তা দিয়ে আপনার পরিবারের কাউকে বোকা বানায়ে টাকা উপার্জন করা যায়। যেমন ধরেন হঠাৎ আপনার ছেলে আপনাকে ফোন করে বলছে আব্বু আমাকে টাকা পাঠাও আমি বিপদে পড়েছি। তার গলার স্বর নকল করে অন্য কেউ এই কলটি করেছে তা আপনি বুঝতেও পারবেন না। যত দিন যাচ্ছে প্রযুক্তিও উন্নত হচ্ছে তেমনি চোর বা ডাকাত ও ধাপ্পাবাজরাও তত উন্নত হচ্ছে। এটা যেন তালা চাবি যেমন উন্নত হচ্ছে চোররা তা খোলার চাবিও বানিয়ে ফেলছে। আজকের যুগের চোর ডাকাত রা হলো সাইবার হ্যাকার যারা সাইবার ক্রাইম করে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনা একটা ঐতিহাসিক কেইস স্টাডি হয়ে থাকবে যারা সাইবার ক্রাইম নিয়ে পড়াশুনা করবেন তাদের জন্য। ভয়েস কন্ট্রোলের এক মজার কাহিনী এক মুভিতে দেখিয়েছিল, ওই ব্যক্তি বাড়ির সব কিছু ভয়েস কন্ট্রোল করায় হঠাৎ একদিন বাইরে যাওয়ার পর বৃষ্টিতে তার ঠান্ডা লেগে গলা বসে যায় এখন সে যতই তার বাসার দরজা খুলতে বলে ওই বসে যাওয়া গলার স্বর তার ভয়েস কন্ট্রোল ডিভাইস গুলো আর রেকগনাইজ বা সনাক্ত করতে পারে না আর সে পড়ে যায় মহা বিপদে । আমার গাড়ির ড্রাইভারকে যখন বলি সময় আসতেছে চালক বিহীন গাড়ির তখন তোমাদের চাকরী আর থাকবে না তখন সে হেসে বলে ঢাকার শহরে চালক বিহীন গাড়ী কল্পনাই করা যায় না। তা আসলেও উন্নত দেশে আসবে কিন্তু আমাদের দেশে আসতে অনেক দেরি। আমাদের দেশে চালক বিহীন রিক্সা হতে পারে কিন্তু চালক বিহীন গাড়ি চালানর মত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স পশ্চিমারা অন্তত বানাতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে ঢাকার ধোলাই খালের কিছু দক্ষ গাড়ি মেকানিক তা চেষ্টা করে দেখতেও পারে, বলা যায় না।
আমার নানু বহু আগে থেকেই পেইস মেকার এর মধ্যমে তার হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা সমন্বয় করে ৭৫ বছর পর্যন্ত বেচে ছিলেন। তার বড় ছেলে আমার বড় মামা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের ৫ম ব্যাচের ছাত্র থাকা অবস্থায় সে সরকারী সুযোগ সুবিধা দিয়ে তার মাকে পেইস মেকার সংযোজন করতে পরেছিলেন সেই অনেক বছর আগেই। আমার মা তার ৬০ বছর বয়সে ২০১৩ সালের মধ্য ভাগে যখন হঠাৎ হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে নিয়ে গেলাম, ওখানে ডাক্তাররা তার বুকে একটা যন্ত্র লাগায়ে ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করার পর তাকে পেইস মেকার নিতে বললো। নানুর পেইস মেকার ছিল সেই পুরাতন আমলের, বুকের চামড়ার নিচে বসান একটা বেঢপ যন্ত্র যার কারণে তাকে কিছুদিন পরপর ওই জায়গা পরিষ্কার করতে ডাক্তার এর শরণাপন্ন হতে হতো কিন্তু মাকে যেটা ডাক্তার দিল তা ডাবল চেম্বার পেইস মেকার আর অনেক উন্নত। বুঝাই যায় না যে তার বুকে একটা যন্ত্র বসান আছে। ওটার ম্যানুয়ালে বলা ছিল ওই পেইস মেকার সংযুক্ত অবস্থায় ব্যক্তি এমনকি সাতারও কাটতে পারবে। এ কথা বললে মা হাসতো। মেডিকেল যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রেও নানা রকম নতুন প্রযুক্তি দিনকে দিন চলে আসছে যা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে প্রচুর পরিবর্তন আনছে। এগুলো ডাক্তারদের ইনটেলিজেন্ট ডিভাইসের হিউমেন ইন্টারফেসিং বলা যেতে পারে। এনজিওগ্রামের মাধ্যমে হৃদ যন্ত্রের মধ্যে কোথায় ব্লক আছে তা তারা দেখতে পায় ও সেখানে রিং পড়ায়ে দেয়ার মত সূক্ষ্ম টেকনোলজি এখন তাদের কাছে সহজলভ্য। ১৯৯০ সালে আমার বাবার মৃত্যুর সময় যে ইনজেকশন পাওয়া যায় নাই সেই ইনজেকশন দিয়ে আমি ২০১১ সালে হার্ট এটাক থেকে বেচে গেলাম। এখন মানুষের রক্তের চর্বি কমানোর জন্য উন্নত যত ঔষধ পাওয়া যায় আগে তা পাওয়া যেত না। যত দিন যাচ্ছে তত বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার মানুষকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। যারা কানে কম শুনে তাদের জন্য এমন শব্দ শুনার যন্ত্র বেড় হয়েছে যা দিয়ে সে কানে শুনার মাত্রা বাড়াতে কমাতে পারে। ঢাকার মত শব্দ দূষণের শহরে ইয়ার প্লাগিং করা বিদেশী পরিব্রাজককে দেখেছি আমি। এ শহরে ইয়ার প্লাগিং করাটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপাদেয় যারা শান্ত উন্নত শহর থেকে এ শহরে বেড়াতে আসেন তারা বিষয়টা ভাল বুঝবেন। আমাদের কান এই হেজারডাস শহরে মানায়ে গেছে আর ভেজাল খেতে খেতে আমরা ভেজাল প্রুফ হয়ে গেছি।
তাই বলি যারা এখনও ডিজিটাল ডিভাইস থেকে দুরে আছেন তারা ডিজিটাল ডিভাইডের পেছনের কাতারে পড়ে যাবেন অতি দ্রুত। যথাসম্ভব ডিজিটাল ডিভাইস দেহ সংযুক্ত করে সাইবার্গে পরিণত হন কারণ এটাই সময়ের দাবি। সোনালী ব্যাংকের অতি প্রিয় একজন স্যার ছিলেন সামসুল তসলিম ভূঁইয়া, উনি বলতেন আমার দুই কানে দুটা যন্ত্র লাগানো থাকবে সব সময় এটা আমি সহ্য করতে পারবো না, অথচ এখন ছেলে বুড়ো সবাই কানে ইয়ার ফোন লাগায়ে মোবাইলে সংযুক্ত হয়ে কত কি না শুনছে আর দেখছে।
Human Race is in the verge of touching the fingers of Artificial intelligence. The machine is now talking, within few days it will learn to walk, still a kid but soon will be an adult. We need to be prepared to raise the Ai child
আমি এক সময় ভাবতাম, ইলেকট্রনিক আর অনলাইন বিপ্লবের পর, মনে হয় সব বই পেপারলেস হয়ে যাবে, এখন বুঝি তা হবে না। মনোরম পরিবেশে বই পড়ার আনন্দ আর অবসর পঠন থেকে যে জ্ঞান আহরণ হয় তা ওই টিক টক, পিডিএফ, এফবি রিলস ইত্যাকার সংক্ষেপিত যত্রতত্র ছড়ান ছিটান স্বল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী আর সর্টকাট সিস্টেম দিতে পারবে না কখনই। মানব জ্ঞান আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) র জন্ম দিলেও সেটা যত আগাবে, মানব সভ্যতাকে তার চেয়ে বেশি উন্নত থাকতে হবে, আর তা হবেও। কিছু লোক ছিটকে বাইরে চলে যাবে, যেমনটা হয়েছে ডিজিটাল ডিভাইডে, অনেকেই এই নতুন ও দ্রুত অনলাইন জগতটাকে বা ভার্চুয়াল রিয়ালিটিকে এখনও ঠিকমত বুঝতেই পারছে না। সামনে যে নতুন রিয়ালিটি আসছে তার জন্য এখন থেকেই আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে বা হতে হবে। তা না হলে এই ভয়ংকর রকম সুন্দর আর দারুণ দ্রুত অলীক বিশ্বে আপনি পশ্চদপদ থেকে যাবেন।
এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ১৭জুলাই২০২৩> ২০জুলাই২০২৩> ০৩ আগস্ট ২০২৩> ১৯সেপ্টেম্বর২০২৩> ১২ফেব্রুয়ারী২০২৪> ৮জুন২০২৫>
No comments:
Post a Comment