Friday, September 15, 2023

আমার সেই ১০টি প্রশ্ন ও তার আজকের উত্তর


১৯৯৮ থেকে ২০০২ সাল মানে ৫টি বছর আমি এই ১০টি প্রশ্নের উত্তর খুঁজার চেষ্টা করেছি। একটা বিষয় হলো প্রশ্নগুলো ছিল আজ থেকে ২৪ বছর আগের যখন আমার বয়স ছিল ২৮ । সবে মাত্র বিয়ে করেছি বাচ্চার বাবা হওয়ার সময় হয়ে গিয়েছিল । ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ প্রথম কন্যা সন্তানের বাবা হই। বয়সটা নিতান্তই কম ছিল তাই তখনকার কিছু কিছু প্রশ্ন এখনকার প্রেক্ষাপটে হাস্যকর রকম হালকা মনে হতে পারে অনেকের কাছে। আজ ফিরে তাকালে ১০টার মধ্যে বেশির ভাগ প্রশ্ন কম গুরুত্ববহ মনে হয় না আমার কাছে। অন্যর আছে কি মনে হলো তা নিয়ে আমার চিন্তা করার অবসর নাই, আমার কাছে ২৮ বছর আগের প্রশ্নগুলোর গুরুত্ব আজও আছে, তাই পুরাণ সিডিতে সংরক্ষিত ওই ১০টি প্রশ্ন তুলে এনে গুগল ট্রান্সলেটর দিয়ে বাংলায় অনুবাদ করে পুনরায় আলোচনাটা আমার নিজের জন্যই করা প্রয়োজন। আমার মনের ভিতরকার পরিবর্তন গুলো আরো ভালো করে বুঝে দেখাটা আমার জন্যই জরুরী। 

আমার লেখা আর্টিকেল যা ২রা জানুয়ারি ২০২১ সালে ব্লগে আপলোড করেছিলাম ”তিঁনি কেবল পাশাই খেলেন না, পাশার ঘুঁটিগুলোও হারায়ে ফেলেন!” তার মধ্যে এই প্রসঙ্গটা এনেছিলাম, তা থেকেই শুরু করি, কারণ না হলে একই কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে হয়। ছোটবেলা থেকেই জীবন ও জগত সম্পর্কে গভীর চিন্তার প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। কৈশোর থেকে জীবনের মৌলিক প্রশ্নগুলো নিয়ে নানা প্রশ্ন সমাধানের চেষ্টা শুরু হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবনে মিলন ভাই এর বাংলাদেশ এস্ট্রোনোমিকাল এসোসিয়েশন এর সাথে জড়িত ছিলাম যা একটি বামপন্থী সংগঠন। আমি তখন তা জানতাম না। আমার পড়া শুনায় শরিফ হারুনের “দান্দিক বস্তুবাদ”বইটি পরে দার্শনিক টার্ম গুলো সম্পর্কে স্পষ্ট একটা ধারণা পাই। এ বিষয়ে অন্যদের লেখা বইগুলো খুব জটিল করে লেখা কিন্তু শরিফ হারুনের “দ্বান্দিক বস্তুবাদ” বইটা অত্যন্ত সরল ভাষায় লেখা তাই বুঝতে খুব সুবিধা হয়েছিল। একটা সাধারণ সূত্র উনার বইতে উনি পাঠককে ধরায়ে দিয়েছিলেন আর তা হলো অনেকটা নিম্নরূপঃ-


উনি প্রতিটির ব্যাখ্যাও সুন্দর করে লিখেছেন তার বইয়ে। তারপর বলেছেন যে বহুকাল ধরে দার্শনিকেরা অধিবিদ্যক বস্তুবাদ আর ভাববাদিক দ্বান্দিকতা এই দুই শিবিরে বিভক্ত ছিল কিন্তু যখন দ্বান্দিক বস্তুবাদ এর মতবাদ এ উন্নয়ন ঘটলো তখন অধুনিক চিন্তা চেতনার সূত্রপাত হলো। বাদ-প্রতিবাদ, সংবাদ (থিসিস-এন্টিথিসিস, সিনথেসিস) এর প্রক্রিয়াটি শুরু হলো। তখন আমি বুঝলাম যে আসলে অদিবিদ্য ভাববাদে সকল ধর্মের অবস্থান আর দ্বান্দিক বস্তুবাদে আধুনিক বিজ্ঞান মনষ্কতার পুরটাই বর্তমান। মেটা দাগে এই শ্রেনীকরণটি আমাকে দর্শনের বহু জটিল বিষয় বুঝতে সহযোগিতা করেছিল তখন। বর্তমানে আরো বুঝি যে বিষয়গুলো আরো গভীরে গেলে আরো অনেক ধারা উপধারার সৃষ্টি হয় তবে শরিফ হারুনের ওই বইটার কাছে আমি ঋণী কারণ তা বুঝার দরজাটা খুলে দিয়েছিল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সত্য বইটি আমি হারায়ে ফেলেছি কিন্তু তাতে বর্ণিত জ্ঞান আজো আমার মৌলিক ধারণা গুলোর একটা হয়ে রয়ে গেছে।

১৯৯০ এ বাবার মৃত্যু ও ২০১৬ সালে মার মৃত্যু পরবর্তী মানুষিক অবস্থা গুলর কারণে ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০১৬ সালে স্রষ্টা সম্পর্কে ধারনা আমার মধ্যে তিনবার বিরাট পরিবর্তন ঘটে। ২০১৭ সাল হতে যা ধারাবাহিক পরিবর্তনের কিংবা ঝড়, জাপটার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। পর্যায় গুল এভাবে ভাগ করা যায়, (১৯৯২ – ১৯৯৮) ৬ বছর বস্তুবাদের প্রতি আসক্তি, (২০০২ – ২০১০) ৮ বছর ইসলামের প্রতি আসক্তি, (২০১৭ হতে আজ পর্যন্ত) ৭ বছর নাস্তিকতার প্রতি আসক্তি। আনুমানিক ১৯৯২ হতে ১৯৯৮ সালে হারুন শরিফের দান্দিক বস্তুবাদ বইটি পড়া হয় । এর ফলে মারাত্মক ভাবে ধার্মিক চিন্তা চেতনা থেকে সরে যাই কিন্তু মন মানছিল না, নানা ভাই এর ধার্মিক আদর্শ আর লিবিয়ার তবরুক শহরে বাবার কলিগ পাকিস্তানের মাসুম আঙ্কেলের আমাকে আগ্রহ ভরে কোরআন, উর্দু লেখন ও ধর্ম শিক্ষা এত সহজে ভুল মনে করব এ রকম অর্বাচীন আমি না। তাই তখন (১৯৯৮) সেই তরুণ বয়সে ১০টি প্রশ্নের একটি সেট তৈরি করেছিলাম যা বিভিন্ন জনের সাথে আলোচনা করে যদি উত্তর পাই তবেই একটা কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে নিব এই ভেবে। প্রশ্ন গুলর আনুমানিক উত্তর আমার জানা ছিল কেবল নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। আমার চাকুরী জীবনে প্রবেশ ১৯৯৮ সালে আর এই প্রশ্নগুলো ছিল ঠিক ঐ সময়কার। চার বছর খোঁজাখুজির পর উত্তর আমার অফিস টেবিলে একটা লিফলেটের মধ্যে লেখা হয়ে চলে আসে। ২০০২ সালে আমি তখন Canada based বাচ্চাদের আন্তর্জাতিক মানের কম্পিউটার শিক্ষাক্রমের প্রতিষ্ঠান টেকনোকিডস, ধানমন্ডিতে চাকুরীরত। নতুন প্রতিষ্ঠান তাই কাজ কম, চা খেতে বাইরে গিয়েছিলাম, এসে দেখি একটা সাদা কাল লিফলেট আমার ডেস্কে যাতে লেখা “ব্লাইন্ড ফেইথ অর ইন্টেলেকচুয়াল বিলিফ?”। আমার মাথা পুরাই নষ্ট হয়ে গেল লিফলেট টা দেখে। এই দ্বন্দ্বই ত ওই ১০ টা প্রশ্নর মূল যা গত চার বছর যাবত সমাধান করার চেষ্টা করছি। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম যেতেই হবে এই কনফারেন্সে আর যথাসময়ে গেলামও। দু জন ব্যক্তি বক্তব্য রেখেছিলেন সেদিন সেই পুরাতন কৃষিবিদ অডিটোরিয়ামে (আজ যা ফার্মগেটের কেআইবি)। সেই কনফারেন্সের প্রথম বক্তা শাহ নেওয়াজ ভাই এর বক্তব্য মনে নাই অতটা, একজন ফিজিক্স গ্র্যাজুয়েট পেশায় শিক্ষকতা করেন লন্ডনে আর দ্বিতীয় বক্তা ইমরান ভাই যিনি লন্ডনে ডাক্তারি পড়ছেন, ইন্টার্নশিপে ছিলেন তখন। শাহ্‌ নেওয়াজ ভাই এর চৌকস ভাবভঙ্গি আর স্পষ্ট বক্তব্য মাথা ঘুরায়ে দিয়েছিল, আরে আমরা যে সব মোল্লাদের কাছ থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে শুনি তাদের চেয়ে এঁরা শত গুন শ্রেষ্ঠ আর দারুণ ব্যক্তিত্বের মানুষ। ডা. ইমরান ভাইয়ের বক্তব্যটা আমি যত দিন বেচে থাকি মনে থাকবে।  সেই অতি পরিচিত গল্প সকলেরই জানা যে ১৬ বছর বয়সের ইমাম আবু হানিফা (রহিমাল্লা)র গল্প, যেখানে তিনি এক ঘন্টা দেরি করে এক বিতর্কে উপস্থিত হয়ে পুর বিতর্ক জিতে নেন। তার দেরির কারণ বলেছিলেন যে নদী পার হতে কোন নৌকা পাচ্ছিলেন না তাই কলাগাছ গুল নিজেরাই নিজেদের কেটে ছেঁটে বেধে ভেলা বানায়ে তাকে নদীটি পারাপারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে আর তাতেই তার আসতে এক ঘণ্টা সময় দেরি হয়েছে। উপস্থিত কেউ তার বলা দেরি হওয়ার কারণটি বিশ্বাস করতে পরছিলেন না, তাদের কাছে তা সত্য বলে গ্রহণযোগ্য হচ্ছিল না। তখন তিনি প্রশ্ন রেখেছিলেন প্রকৃতি একা একাই সব সৃষ্টি করেছে (কার বা কোন বুদ্ধিমত্তার ইশারা ছাড়া) এই বিতর্কে আমাকে ডেকে এনেছ আর তেমরাই এখন বিশ্বাস করতে পারছ না সামান্য এই কলাগাছ গুল একা একা নিজেদের কেটে ছেঁটে ভেলা বানায়ে আমাকে পার করেছে !!? এই ছোট্ট স্মৃতি-গল্পটি মারাত্মক একটি সূত্র প্রদান করে। মানুষের পুর চিন্তার পটভূমিকে পাল্টে দেয়, যারা নাস্তিকতায় বদ্ধমূল তাদের জন্য এটা পুরা মাত্রার ভূমিকম্প বটে। তাদের গভীর মনের ভাবনা যে, বিশ্বচরাচর একা একাই সৃষ্টি হয়েছে ও চলমান আছে এই বদ্ধমূল ধারণায় ফাটল ধরায়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী বক্তব্য।

সেদিনের সেই সেমিনার পুরটা আমি ছিলাম না, একটা নোটে লিখে এসেছিলাম কাউকে পাঠাতে যাতে আমার প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তখন ডা.সাঈদ ভাই যোগাযোগ করলেন আমার সাথে। তাকে প্রশ্ন গুলো দিলাম এর উত্তর যাতে তিনি আমাকে দিতে পারেন। বেশ কিছুদিন পর তিনি আসলেন আমরা আবার আলোচনায় বসলাম। উনি আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেয়ার বদলে প্রশ্নগুলোর প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করে দিলেন যা থেকে আমি আমার প্রশ্নগুলোর যথার্থতা হারায়ে ফেললাম। তার পর ডা.সাঈদ ভাই এর সাথে বেস কয়েকবার আলোচনায় ইসলাম ধর্মের প্রতি ঝুঁকে গেলাম। ইসলাম ধর্মে যে ইনটেলেকচুয়াল ভাবেও প্রবেশ করা যায় তা আমার জানা ছিল না। তার পর আরো উচ্চতর জ্ঞান সম্পন্ন ও আধুনিক ভাবধারার লন্ডন ফেরত ভাইদের সাথে পাঠ সভায় অংশ নিলাম। ২০০২ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত সময়টা কাটে আমার ইসলাম সম্পর্কে আরো গভীর জ্ঞান অর্জন ও মানুষকে ইসলামে দাওয়া করার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। প্রতি সপ্তাহের সোমবার আমরা পল্টনে আলোচনা সভার আয়োজন করতাম ও ইসলামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বক্তব্য শুনতাম ও যারা তার বিপক্ষে তাদের সাথে বিতর্ক করতাম। আমরা একটা ফোরাম গঠন করি যার নাম ছিল মুসলিম প্রফেশনাল ফোরাম বা সংক্ষেপে (এমপিএফ)। এই ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা ঢাকা সহরের বিভিন্ন বড় বড় অডিটোরিয়াম ভাড়া নিয়ে সেমিনার আয়োজন করেছি। সর্বশেষ ২০০৮ সালে আমরা একটা বিশাল আয়োজন করি, যা ন্যাশনাল কনফারেন্স হিসেবে শিরোনাম ছিল “ইসলাম মিস আনডারসটুড : মিস ইন্টারপ্রিটেড” ঢাকার কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস ইনিস্টিটিউট এর অডিটোরিয়ামে দিন ব্যাপী ছিল এই অনুষ্ঠানটি যাতে ৭০০ জনের মত লোকজন সমবেত হয়। এর পরিকল্পনা, প্রচার ও সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মুসলিম প্রফেশনাল ফোরাম এর হয়ে আমি বহু কাজে অংশ নিয়েছিলাম।  

এই অনুষ্ঠানটির পর লন্ডন ফেরত ভাইরা একে একে ফেরত চলে যান আর দায়িত্ব দিয়ে যান দেশীয় লোকদের হাতে যাদের তারা ইসলামী প্র্যাকটিসে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করে রেখে যাচ্ছিলেন। দেশীয় লোকগুলো তাদের মত করে আর সংগঠনটি ধরে রাখতে পারেননি। ২০১০ সালের পর থেকে এমপিএফ এর কার্যক্রম দুর্বল হয়ে যায় ও আমিও এর কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরি। ১৯৯০ এ বাবার মৃত্যুর কারণে মনের মধ্যে শূন্যতা ছিল, পৃথিবীর অর্ধেকটা শূন্য মনে হতো। মা বেচে ছিল তাই তখনও নিজেকে ঠিক রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন মা’ও চলে গেলেন তখন আর বাকি কিছুই যেন রইলো না। পৃথিবীর পুরটাই আক্ষরিক অর্থেই অর্থহীন হয়ে গেল আমার কাছে। যখন কেউ সান্ত্বনা দিয়ে বলতো কার বাপ মা চিরকাল বেচে থাকেন না তখন ভিতর ভিতর এত রাগ লাগতো যে বলতে ইচ্ছা হতো, যার বাপ মা নাই সেই কেবল বুঝে এর কষ্টটা কতখানি। জীবনের পুরো শিকর উপড়ে ফেলার মত মনে হয়। ভাগ্য ভাল মা খালাত বোনের সাথে কম বয়সে বিয়ে দিয়ে গেছেন আর তিনটা বাচ্চার জনক হয়ে গেছি ততদিনে। তা না হলে আমি ছন্ন ছাড়া বাউণ্ডুলে হয়ে যেতাম। নেশাগ্রস্থ হয়ে তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে দিতাম হয়তোবা। মা’র মৃত্যুর পর এতটাই নার্ভাস ব্রেক ডাউন হয়ে গিয়েছিল যে আমি মানুষিক ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম সোনালী ব্যাংকের মিরপুর প্রিন্সিপাল অফিসের আমার এক কলিগের পরামর্শে। আরনেস্ট মিলার হেমিংওয়ের “দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি” পড়া ছিল আমার তাই আমি জানতাম মানুষ ধ্বংস হয়ে যায় কিন্তু কখনও পরাজিত হয় না। এই মনোভাব থেকে আবার উঠে দাড়াই কিন্তু এবার আর কার ডর ভয় নাই। কিসের স্রষ্টা, কিসের কি, যে স্রষ্টা বাবা মা দিয়ে আবার তাদের বিনা বিচারে উঠায়ে নিয়ে যায় সেই স্রষ্টার তাঁবেদারি আমি আর করবো না। এরকম একটা মনোভাব থেকেই ধর্মীয় সব ধ্যান ধারনা প্রত্যাখ্যান করা শুরু করি। মুসলিম প্রফেশনাল ফোরামের ভাইদের সাথে যোগাযোগ ছিল তখনও কিন্তু তাদের কার্যক্রম আর কথা বার্তা আমার কাছে তখন অর্থহীন ও হাস্যকর মনে হতো। তাদের সাথে ঝগড়া করে সম্প্রতি তাদের গ্রুপ থেকে বের হয়ে এসেছি। ইউভাল নোয়া হারারীর “সেপিয়েন্স-মানুষের ইতিহাস”, ইসমাইল আল ফারুকী ও ডেভিড সফার (আসাদ ইকবাল মামুন অনুবাদ কৃত) “হিস্ট্রি অব দ্য রিলিজিয়নস” আর ওয়ালি উল মারূফ মতিনের অনুবাদকৃত ক্লাউস শোয়াব এর “চতুর্থ শিল্প বিপ্লব” বইগুলো আমার মানসিক পরিবর্তনে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
আমার চিন্তা চেতনায় পরিবর্তন গুলো টাইম লাইনে প্লট করলে নিম্নক্ত তথ্যচিত্রটি পাওয়া যাবে। 

সে যাই হোক, এবার তবে আমার সেই প্রশ্ন গুলো আর তার আজকের উত্তরের দিকে মনোযোগ দেয়া যাক।

১) আমার প্রথম প্রশ্ন ছিলঃ ইসলাম কি মেটাফিজিক্যাল আইডিয়ালিজমের (অধিবদ্যিাগত ভাববাদ) সেক্টরে দাঁড়ায় না? Doesn’t Islam stand in the sector of Metaphysical Idealism?

আমার আজকের উত্তরঃ হ্যাঁ সর্বত ভাবে সকল ধর্মই এই ডোমেনেই পড়বে তাতে কোন সন্দেহ নাই। ধর্মের সকল ব্যাখ্যাই ভাব জগতে, আবেগ ছাড়া একটা মন্ত্রও ব্যাখ্যা যোগ্য নয় আর এটা কোন পরিবর্তনশীল ধারনা নয়, বদ্ধমূল অপরিবর্তনীয় ধারণা সমষ্টি। তাই তা অধিবিদ্য ভাববাদের কোটার মধ্যেই পড়বে।

২) আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিলঃ আমি যদি বিজ্ঞানকে অস্পষ্টের দিকে মানুষের মশাল হিসাবে গ্রহণ করি তবে আমাকে ডারউইনবাদকে গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম কি প্রজাতির বিবর্তনকে মেনে নেয়?
If I accept science as the torch of human towards the obscure then I have to accept Darwinism. Does Islam accept evolution of species?

আমার আজকের উত্তরঃ না ইসলাম প্রজাত্যায়ন কিংবা বিবর্তনের কোন অংশেই বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত মানে সৃষ্টির সেরা তাই তারা বানর থেকে বিবর্তিত হয়ে আসতেই পারে না। তারা আদম হওয়ার সন্তান ও স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে এসে পড়েছে। তারা দেখতে যে শেইভ করা বেবুনের মত, তাদেরও যে গায়ে লোম আছে, দাঁত আছে, পায়ে নখ আছে তা তারা জানে, কিন্তু স্বর্গ থেকে টুপ করে পৃথিবীতে এসে পড়লে তারা প্লাস্টিক সদৃশ কিংবা ভিন্ন কোন পদার্থর শরীর নিয়ে আসার কথা ছিল, ঘর্মাক্ত, লোমশ, দাড়ি চুল ওয়ালা বানর সদৃশ্যতা তাদের থাকার কথা না। বিবর্তনবাদের প্রতি তাদের অনীহা তাদের মানব হিসেবে অহং বোধ থেকে আসে বলে আমার ধারণা। ঠিক যে কারণে পৃথিবীকে মহাবিশ্বের কেন্দ্রে ভাবতো পৌরাণিক গির্জার পাদ্রিরা আর যারা সত্য বলতো যেমন গেলেলিও, জিওরদানো ব্রুনো তাদের তারা হত্যা করতো। এখনকার কাঠমোল্লা মুসল্লিরা সেই সব ক্লার্জিদের হুবহু নকল আজকের সংস্করণ। সম্প্রতি জেরি কয়েনের “বিবর্তন বাদ কেন সত্য” বইটি থেকে বিবর্তনের স্বপক্ষে প্রচুর যুক্তিও জানতে পারি। আর বর্তমানে জীবাশ্ম রেকর্ড গুলো আগের তুলনায় অনেক বেশি বিবর্তনের স্বপক্ষে প্রমাণ হাজির করে।

৩) আমার তৃতীয় প্রশ্ন ছিলঃ দ্বাদ্দিক বস্তুবাদ বিজ্ঞান থেকে উৎপন্ন হয়, কোন ধর্মই যদি অধিবিদ্যক আদর্শবাদের সেক্টরে থাকে তাহলে ইসলাম এবং বিজ্ঞান কিভাবে একই স্থানাঙ্কে দাঁড়াবে? Dialectic Materialism is generated from Science, if any religion is in the sector of metaphysical Idealism then how can Islam and Science stand in the same quadrants?

আমার আজকের উত্তরঃ আমি ১৯৯২ সালের দিকে মাশহুরুল আমিন মিলন ভাই এর বাংলাদেশ এস্ট্রোনোমিকাল এসোসিয়েশনে সদস্য ছিলাম তখন এক সম্মানিত বড় ভই আমাদের আলোচনা শুনে বলেছিলেন ভাববাদের পর মানব চিন্তনে উন্নয়ন হলো বস্তুবাদ তা হলে কেন আপনারা এ নিয়ে বিতর্ক করছেন, এ তো প্রমাণিত সত্য আজকের সময়ে। কোন ভাবেই ধর্ম দ্বান্দিক বস্তুবাদের সেক্টরে পড়ে না, সকল ধর্মের অবস্থান অদিবিদ্য ভাববাদে। রবীন্দ্রনাথের ভাষা ও ছন্দ কবিতায় যা বলেছেন যে, রাম তোমার মনে যা উদয় হয়েছে তাই সত্য বাস্তবে যা দেখছো তা সত্য নয়, এটাই ভাব বাদের মূল সূত্র।  ভাষা ও শব্দ কবিতায় রবিন্দ্রনাথ লিখেছেন

 ”নারদ কহিলা হাসি, "সেই সত্য যা রচিবে তুমি,

ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি

রামের জনমস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো।"

বিজ্ঞান ও ধর্ম পরস্পর বিরোধী অবস্থানে থাকে। বিজ্ঞান প্রকৃতিকে বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করে স্রষ্টা অস্তিত্ব স্বীকার বা অস্বীকার করা তার কর্মক্ষেত্র নয় বটে কিন্তু স্রষ্টা সকল কিছুর স্রষ্টা ও কারণ এটা মেনে নিলে বিজ্ঞানের আর গবেষণা করার প্রয়োজনটাই থাকে না। এই সরল সত্যটা নিয়ে বড় বড় পণ্ডিতের মধ্যেও দ্বন্দ্ব দেখা যায়। কিন্তু আজ তা আমার কাছে জলবৎ তরলং। বৈজ্ঞানিক মতাদর্শ আর ধার্মিক মতাদর্শ সহাবস্থানে থাকতেই পারে না।

৪) আমার চতুর্থ প্রশ্ন ছিলঃ অন্ধকার ছাড়া আলোর কোনো মানে নেই। আলো জানার জন্য অন্ধকার চেনা কি জরুরী নয়? Without the darkness light have no meaning.  Isn’t it important to know the dark to know the light?

আমার আজকের উত্তরঃ হ্যাঁ জানাটা জরুরী। স্টার ওয়ার মুভির শেষ পর্বটা দেখেছেন মনে হয় অনেকেই ওখানে ইভেলের উত্তরসূরি কিভাবে পয়দা হয় তা দেখান হয়েছে। শয়তানের ধারনা জরথ্রুষ্ট্রর ধর্মে প্রথম দেখা যায় তবে সেখানে তারা শয়তানকে সকল অমঙ্গলের বিধাতা মনে করে থাকে। ইসলামে শয়তান পথভ্রষ্ট হয়ে অমঙ্গলকে বেছে নিয়েছে কিন্তু এখানেও দাজ্জাল হলো প্রকৃত শয়তানি শক্তি যাকে মুসলমানরা পরাভূত করতে অপারগ হবে আর একমাত্র ঈসা মসিহ তাকে পরাস্থ করতে পারবে বলে তারা বিশ্বাস করে।  শুভকে জানতে হলে অশুভ কি তা তো জানতেই হবে। তাই কোন জিনিস পুরপুরি দেখতে হলে তাকে সব দিক থেকেই দেখা চাই। এক পেশে দৃষ্টি ভঙ্গি আপনাকে ভুল তথ্য দিবেই। গুড এন্ড ইভেল এই দুই ভাগে বিশ্বকে বিশ্লেষণের প্রয়োজন নাই প্রকৃত সব সমই নিরপেক্ষ ও রুক্ষ। প্রকৃতি কোনকিছুকেই ছাড় দেয় না। প্রকৃতিকে ভালোও বালা যায় না খারাপও বলা যায় না। এটাই বাস্তব আর এটাই আমাদের বাস্তবতা, খারাপ হোক আর ভালো হোক এটাকে মেনে নেয়া ছাড়া আমাদের হাতে আর কোন উপায় নাই। তবে প্রকৃতিকে অনেকভাবেই জয় করেছি আমরা। আজ আর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার উপর আমাদের ভাগ্য নির্ভর করে না। ভবিষ্যতে বিজ্ঞান আরো অগ্রগতি করে প্রকৃতিকে আরো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বলে আশা করা যায়।

৫) আমার পঞ্চম প্রশ্ন ছিলঃ কুরআন মুসলমানদের জন্য সমস্ত প্রশ্নের সম্পূর্ণ সমাধান। তাহলে কেন আমি সেখানে আমার সব উত্তর পাচ্ছি না? The Quran is the total solution to all the question for Muslims. Then why don’t I get all my answers there?

আমার আজকের উত্তরঃ কারণ আর কিছুই না, আমাকে উদ্দেশ্য করে কোরআন নাজিল হয় নাই। আরব ভুখন্ডে আইয়ামে জাহিলিয়াত মানে হলো কতগুলো বড়বড়, অসভ্য, অশিক্ষিত জাতির উন্নয়নে তা নাজিল হয়েছিল। সমগ্র বিশ্বের জন্য তা সমাধান তা মুসলমানরা বিশ্বাস করে কিন্তু এই বিশ্বাস তাদের আবেগ তাড়িত বিশ্বাস বাস্তবতা বর্জিত বিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই না। ধর্মান্ধতার আবেগের কারণে তারা তা দেখতে পায় না। ঈসা মসিহ এসেছিলেন ইহুদিদের জন্য কিন্তু তাকে পরবর্তীতে অন্য ভাবে মানব জগতে উপস্থাপন করেছে তার অনুসারীরা। ঈসা আঃ কে মসিহ মনে করে না ইহুদিরা কারণ তার পূর্বের যত ভবিষ্যৎ বানি আছে মসিহ সম্পর্কে তার সাথে ঈসা আঃ এর মিল খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। মুহাম্মদ তানিম নওশাদ তার বই “ধর্মের অন্তরালে বিশ্বাস ভিত্তিক চেতনায় শ্রেণী সংগ্রামের আভাস” বই এর পৃষ্ঠা ৩৯, দ্বিতীয় আর্টিকেল “যিশুর মসীহত্ব এবং বিতর্ক” অনুচ্ছেদে তা বহু প্রমাণ সহ বর্ণনা করেছেন। গৌতম বুদ্ধ বলে গেছে তাকে যেন তাকে পয়গম্বর মনে না করা হয় কিন্তু তার অনুসারীরা পারে তো তাকে স্রষ্টা বানায়ে ফেলে। মানুষের এই উপাসনা করার প্রবৃত্তি বড় ভয়ানক রকমের শক্তিশালী। রাঙ্গামাটির মত দুর্গম অঞ্চলেও দেখলাম পাহাড়ের উপর পিতলের বৌদ্ধ মূর্তি বানায়ে রেখেছে। কোরআন সকল প্রশ্নের উত্তর ভাবে বিশ্বাসীরা, তাদের কাছে এর একেকটা শব্দের অর্থ অনেক গভীর। এর অর্থ বিশ্লেষণ করতে করতে কত মুজতাহিদ তৈরি হয়েছে। কত তফসির রচনা হয়েছে। আর সময়ের সাথে এটা হতেই থাকবে। ভাষা যত ক্লাসিকাল হবে তত তার ব্যাপ্তি। বাংগালীর ধর্মচিন্তা বইয়ে মোহাম্মদ আবদুল হাই বলেছেন (পৃষ্ঠা ২৩) এক ওঁ বা ওম শব্দের ১৯ টি ভিন্ন ভিন্ন অর্থ আছে। ক্লাসিকাল আরবির বিভিন্ন শব্দের শতাধিক অর্থ থাকাও আশ্চুর্য কিছু না। তা হলে একেক লাইন থেকে শতাধিক বিভিন্ন অর্থ উৎপাদন তো করাই যায়। একেক অর্থের একেক বয়ান। আর তা থেকেই যত বিভেদ বিপত্তি। কথা সত্য, এটা বিশ্বাসীদের বা মুসলমানদের জন্য সকল প্রশ্নের সমাধান কিন্তু আপনি মুক্ত মন নিয়ে প্রশ্ন করলেই ধরা খাবেন, কোন প্রশ্নের উত্তরই আপনার মনপুত হবে বলে আমার মনে হয় না।

৬) আমার ষষ্ঠ প্রশ্ন ছিলঃ সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের বলেছেন, তিনি এক এবং তিনি অসীম। কিভাবে এক এবং অসীম ধারণা সিঙ্ক্রোনাইজ করা হয়?
The all mighty Allah told us, he is one and he is infinity. How does the concept of one and infinity stand synchronized?

আমার আজকের উত্তরঃ জেনোর প্যারাডক্স এর কথা মনে পড়ে যায়। হয় সব এক না হয় সব বহু কিন্তু যদি সব বহু হয় তবে তা আরো বহু হতেই থাকে যার শেষ নাই। সেলুনের আয়না প্যারাডক্স উদাহারণ হিসেবে নেন, দেখবেন আয়নার ভিতর আয়না তার ভিতর আয়না আর আপনার অনন্ত আপনি কত গুলো তাও আপনি জানতে পারবেন না। এই জায়গায় এসে এক ও বহু দুটো ভিন্ন বিষয়। এক কখনই বহু হতে পারে না। বিপরীতে বহু কখনই এক হতে পারে না। জেনোর কচ্ছপটা আজো স্টেডিয়ামের কেন্দ্রে পৌছতে পারে নাই শুধুমাত্র এই কারণেই। কারণ ১ থেকে ২ এ যাওয়ার মাঝের অর্ধেকটা পথ পর হতে তাকে অনন্ত অর্ধেকটা পথ পার হতে হয়ে চলেছে যেই অনন্ত অর্ধেক কখনই শেষ হবার নয়। তাই কচ্ছপটা কখনই ২ এ পৌছাতে পারবে না। তাই স্টেডিয়ামের কেন্দ্রেও তার আর যাওয়া হবে না। তাই এক ও অনন্ত এক সাথে কোন অর্থ বহন করে না। 

৭) আমার সপ্তম প্রশ্ন ছিলঃ আমাদের এক কুরআন, এক রসুল (সা.), এক স্রষ্টা (আল্লাহ), তাহলে তাবলীগ, জামাত, মোল্লা, শিয়া, সুন্নি, বিভিন্ন মাজহাবের মতো মুসলিমদের এত বিচিত্র গোত্র কেন?
We have One Quran, One Rasul (SM), One Creator (Allah), Then why there are so many different tribes of Muslims like Tablig, Jamat, Mullahs, Shia, Sunnia, different majhabs?

আমার আজকের উত্তরঃ নানা মুনির নানা মত। একটাই সোর্স কিন্তু তার ব্যাখ্যায় ব্যাখ্যায় সব সর্বনাশ করে ফেলেছে। যেখানে কোন দ্বিমত নাই সেখানে শত মত এনে দাড় করায়ে দিয়েছে আজকের মোল্লা শ্রেণী। এক জনের ব্যাখ্যা আবার অন্য জন মানে না। তারা আবার তাদের অনুসারী দল বানায়। এভাবে সব ধর্মেই নানা গোত্র ও শ্রেণীর উৎপত্তি হয়ে গেছে।  এভাবে তারা যে তাদের ঐক্য ভেঙ্গে ফেলছে তা বুঝার ক্ষমতা তাদের নাই। যে কোন ধর্মের মূল বানীর মর্মার্থ বা ক্রিড যদি তার অনুসারীরা তর্ক বিতর্ক করে নানা বিধ ধারায় ব্যাখ্যা করা শুরু করে তবে তা তাদের ঐক্য নষ্ট করে দেয়। ধর্মান্ধ এই বেকুবগুলার সেইটুকু জ্ঞানও নাই। সাধে কি আর ইংরেজরা ফাজিল পাসকে একটা গালিতে রূপান্তরিত করেছে। সেদিন দেখলাম বরিশালের কোন এক গ্রামের নাম ফাজিল পল্লি। ওখানে মনে হয় সব ফাজিল লোকের বাস। 

৮) আমার অষ্টম প্রশ্ন ছিলঃ পৃথিবীতে বিদ্যমান সকল ধর্মেই স্বর্গ ও নরকের ধারণা রয়েছে। আমার ছোট জীবনে খুব কম কিছু করার আছে, মৃত্যুর পরের অনন্ত জীবনে কি করব? All the religion existing in the world has the concept of heaven and hell. I have very few things to do in my small life, what should I do in the infinitive life after death?

আমার আজকের উত্তরঃ বারট্রান্ড রাসেল তার “আমি কেন ধর্ম বিশ্বাসী নই” বক্তৃতায় বলেছেন, সকল ভয় থেকেই ধর্মের উৎপত্তি। মৃত্যু ভয় থেকেই অনন্ত জীবনের স্বপ্ন দেখে মানুষ। অনন্ত জীবনে কি করবে তা নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নাই, ৭০ টা হুর পরি পেলেই তাদের অনন্ত জীবন আনন্দে কেটে যাবে। আর মুখ হা করলেই খাবার এসে মুখে ঢুকে যাবে। আমি কোরআনে বর্ণিত স্বর্গ বর্ণনাও পড়েছি আবার ছোট বেলায় মার্ক টোয়েনের লেখা গল্প যতদূর মনে পড়ে এক রাজা এক আঁকিয়েকে দিয়ে নরক দৃশ্য আঁকাচ্ছেন যখন সেই আঁকিয়ের মেয়েকে রাজা আগুনে নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা করছে যাতে করে সেই নরক দৃশ্যটা সঠিক হয়। মানুষকে হাজার কোটি, কিংবা লক্ষ কোটি বললে সেই অংকটা তার মাথায় ঢুকে না আর যে সংখ্যাটাকে গুগল সংখ্যা বলা হয় তা হলো ১০০ টু দি পাওয়ার ১০০ বা ১০০১০০ মানে হলো ১ এর পর ১০০ টা শূন্য বসাতে হবে। মানুষ গুগল সংখ্যাটা তার মাথায় নিতে পারে বলে মনে হয় না আর সেই মানুষকে যদি বলা হয় অনন্ত সংখ্যা তা তার বোধগম্যতাতেই আসার কথা না। আমরা ১ বুঝি ১ থেকে ১০ও বুঝি। অক্টাল, ডেসিমাল, হেক্সা ডেসিমাল সংখ্যাও বুঝি কিন্তু গুগল সংখ্যা বুঝা আমাদের জন্য কষ্টকর। আমি ছোট বেলায় গণিতের দুটো রিডেল সল্ভ করেছিলাম একা একাই এর একটা হলো পর পর একটার উপর আরেকটা টিক চিহ্ন দিয়ে গেল মাঝখানে যে বরফি গুলো হয়, মানে তিনটা দিলে ১ টা বরফি হয়, আমি সূত্র বের করেছিলাম কতটা টিক দিলে কতগুলা বরফি হবে। আরেকটা মাজার জিনিস আমি দেখেছিলাম তা হলো ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত যোগ করলে তা হয় ৫০৫০, ১ তেকে ১,০০০ পর্যন্ত ধারাবাহিক যোগ করে গেলে হয় ৫০০৫০০ যা থেকে বুঝা যায় ১ তেকে ১০০,০০০ পর্যন্ত ধারাবাহিক যোগ করলে হবে ৫০০০৫০০০। বিষয়টা জানতে পেরে আমার তখন মজাই লেগেছিল। কার বা কোন বই এর সাহায্য ছাড়াই আমি এই গাণিতিক রিডেল দুটো বুঝতে পেরেছিলাম আমি। গণিত বিমূর্ত যা প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজনে মানুষ চিন্তন ব্যবহার করে আর এই চিন্তনে অনন্ত যে সংখ্যাটি আছে যাকে ইনফিনিটি বলা হয় তা মানুষের বোধগম্য সংখ্যা নয়। তাই যখন বলা হয় তোমকে অনন্ত জীবন দোজখে কিংবা স্বর্গে আবাসন দেয়া হবে তখন একটা সম্পূর্ণ অবোধগম্য তথ্য মানুষকে দেয়া হয়। আর ধর্মান্ধ ধার্মিকেরা তা বিনা শর্তে মেনে নেয়। ভাবে সাবে মনে হয় তারা তা বুঝেছে কিন্তু এটা সত্য যে তাদের বোঝার বাইরের একটা কথা তারা মেনে নিয়েছ।

৯) আমার নবম প্রশ্ন ছিলঃ সময়ের প্রশ্ন, প্রথমে আদম, তারপর ইব্রাহিম (আ.), তারপর দাউদ (আ.), তারপর মুসা (আ.), তারপর ঈসা (আ.) তারপর মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.), রসুলদের ট্রেন্ড একের পর এক পথ দেখাল। দুনিয়ার মানুষ, আল্লাহ তায়ালার কথামতো এক মুহূর্তে সবকিছু ঘটছে। তিনি আগে-পরে সবকিছু জানতেন। তাহলে কেন তিনি একের পর এক তাদের পাঠালেন? The question of time, First the Adam, then Ibrahim(AM), then Dived (AM), then Musa(AM), then Issa(AM) then Muhammad Mustafa (SM), The train of Rasuls came one after another to guide the peoples of the world, According to Allah, everything is happening in a moment. He knew everything before and after. Then why did he send them one after another?

আমার আজকের উত্তরঃ মহাকালের ধারণা এখনো মানুষের অজানা, আমরা কেবল বিগ ব্যাং থেকে সময় হিসাব করি। সময়ের হিসাবে মানব সভ্যতা পুরটাই এক পলকের মত মনে হয় কসমিক ক্যালেন্ডারে। ধারাবাহিক ঘটনা প্রবাহ মানব ইতিহাসের ব্যাপার, এখানে এক জনের পর আরেকজন ও তাদের মাধ্যমে মানুষকে হেদায়েতের যে কথা বলা আছে তা আমার কাছে এখন অর্থহীন মনে হয়। অনেক ধর্মীয় বুজুর্গ আছেন যারা সময়ের নানা ব্যাখ্যা দেন নানা ধর্মীয় সূত্র থেকে প্রাপ্ত তাদের বয়ান। আবার আসমান সম্পর্কে তাদের বক্তব্যও নানাবিধ। এক আসমান, দুই আসমান এভাবে চৌথা আসমান, মানে আকাশের উপর আকাশ তার উপর আকাশ এরকম কল্পনা। যার সাথে বিজ্ঞানের বর্তমানে ব্যাখ্যা মাল্টি ভার্সের কিছুটা সাদৃশ আছে। ইমরান নজর হোসেন আসমানকে ডাইমেনশন বলেছেন বা সামাওয়াত মানে স্তর যার সাথে স্ট্রিং থিওরির সাদৃশ আছে। কিন্তু না স্ট্রিং থিওরি প্রমাণিত সত্য না আকাশের উপর আকাশ। এ সবই হাইপোথিসিস। বিগ ব্যাং এর আগে সময় ছিল কি না তা আমরা জানি না কিন্তু মাল্টি ভার্স এর অধিকল্পনা বা হাইপোথিসিস মেনে নিলে বলতে হবে বিগ ব্যাং এর আগেও সময় ছিল। সেই মহাকাল সম্পর্কে মানুষের কোন ধারণাই নাই। এক চান্দ্র মাস নিয়ে কেলেন্ডার বানায়ে তাকে বিশ্বজনীন করতে পারেনি মুসলমানেরা। একেক দেশে একেক দিনে ঈদ উজ্জাপন করে তারা। ব্যবসা বাণিজ্যে এই রকম কেলেন্ডার কি কাজে আসবে তা বুঝা শক্ত। যে সব বড় বড় অর্থনীতিতে এক ঘন্টার ব্যবধানে কোটি কোটি টাকা এদিক সেদিক হয়ে যায় সেখানে এক দিন ব্যবধান হলে তো কথাই নাই। যাচ্ছে তাই একটা বিশৃঙ্খল অবস্থায় অর্থনীতি চলবে তখন সারা বিশ্বে। এটুকু বুঝার ক্ষমাতও কি তাদের বিধাতা তাদের দেন নাই?

১০) আমার দশম প্রশ্ন ছিলঃ মুসলিম আইন অনুযায়ী ইসলামে কি নারীত্ব বঞ্চিত নয়? Isn’t the womanhood is deprived in Islam according to the Muslim Law?

আমার আজকের উত্তরঃ নারীরা পুরুষের কাছে পরাভূত হয়েছে যখন পুরুষ জানতে পেরেছে নারীরা পেটে যে বাচ্চা ধরে তা মূলত তাদের সূত্রানু থেকে আসে। নারীদের তাই তারা নানা ভাবে বঞ্চিত করেছে কৃষি বিপ্লবের পরবর্তী শ্রেণী বিনাশিত সমাজ কাঠামোতে। ১৪০০ বছর আগে বেদুইন আরবের সমাজে নারীদের শিশুকালেই কবর দেয়ার প্রচলন ছিল। চিন দেশে নারীদের নেতৃত্ব দেয়ার কথা চিন্তাই করা যায় না। মুসলমানরাও নারী নেতৃত্ব অস্বীকার করে। নারীদের গৃহবন্দী করে রাখার বিষয়ে তাদের আগ্রহের শেষ নাই। বিবাহিত নারীরা পুরুষের সম্পদ। মদিনায় হিজরত করে আসা সাহাবীদের মদিনার স্থায়ী বাসিন্দারা তাদের একাধিক স্ত্রীর সবথেকে প্রিয় স্ত্রীদের দান করে দিয়েছিল। এসব থেকে বুঝা যায় তারা নারীদের বস্তু সদৃশ সম্পদ মনে করতো তারা তখন। হ্যাঁ নারীদের উত্তরাধিকার আইনে তাদের অংশ নিশ্চিত করা হয়েছে কিন্তু তাতেও ভাইদের অংশের চেয়ে বোনদের অংশ অর্ধেক দেয়া হয়েছে আর বলা হয়েছে তারা তো তাদের স্বামীর সম্পদের এক অষ্টাংশ পায়। এ সবই অকাট্য প্রমাণ যে নারীদের আগের তুলনায় ইসলাম কিছু বাড়তি সুবিধা দিলেও সেই একই ভাবে পদানত করে রাখার সুব্যবস্থাও করেছে। শুধুমাত্র নবীর স্ত্রী নেকাব পড়বে নাকি সব নারী নেকাব পড়ে তার চেহারা ঢেকে বাইরে বের হতে পারবে তা নিয়েও তাদের মধ্যে মতভেদ আছে। আমার এক কলেজ ফ্রেন্ড তত্ত্বাত্তিক পদার্থ বিদ্যায় পিএইচডি করেছে, সে আবার মহা ধার্মিক, এতটাই যে সে বিয়ে করতে ভুলে গেছে। আর মেয়ে দেখলে ভুতের মত আচরণ করে। ফেইসবুকে কোন মেয়ের পোস্টে ক্লিপ করাও নাকি জায়েজ না তার কাছে। আমি ওদের গ্রুপে মুম্বাইয়ের অভিনেত্রী দীপিকা পাদুকনের লিভ, লাভ, লাফ ফাউন্ডেশনের পত্রিকার একটা কাটিং পোস্ট করেছিলাম, সে তা মুছে দিল। দীপিকা পাদুকনের ওই ফাউন্ডেশন সমাজে মানুষিক শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে সেদিকে তার কোন লক্ষ্যই ছিল না। আমি ওকে কয়েকটা ভদ্র গালি দেয়ে গ্রুপ ত্যাগ করি। তার পর ওই গ্রুপের মডারেটরকে বলি যে, সে জ্ঞান অর্জন করেছে কিন্তু শিক্ষিত হতে পারে নাই। তার ডিগ্রি আছে বটে কিন্তু সে সত্যিকারের মানুষ হতে পারে নাই। তার উপর কট্টর ধর্মের অন্ধকার তাকে অন্ধ করে দিয়েছে। এরা রবীন্দ্রনাথের বর্ণনার সেই ঝরনার নুড়ি যার চারদিকে জল অথচ তার ভিতরে সেই জল প্রবেশ করতে পারে না। হুমায়ুন আজদের নারী গ্রন্থ দুই বার চেষ্টা করেও বেশি দুর পড়তে পারি নাই। যতদূর পড়েছি তাতে হাজার খানেক বার পুরষতন্ত্র আর নারী পরাজিত শব্দগুলো ছিল আর শেষ পর্যন্ত পড়লে হয়তো কয়েক লক্ষ বার এই শব্দ দুটো পড়তে হতো। যে দেশের নারী প্রধান মন্ত্রী, সংসদের স্পিকার নারী, প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রীও নারী সে দেশে নারী অবহেলিত তা নিয়ে বই তাও আবার গবেষণা ধর্মী বই লেখা কতটা যৌক্তিক তা আমার বোধগম্য নয়। তবে নারী যে পুরষতন্ত্রে পরাজিত ও ধর্মীয় ভাবে অবদমিত শক্তি তাতে কার সন্দেহ থাকার কথা না। শুধু ইসলামী আইন না, প্রায় সকল পুরুষ রচিত আইনেই নারী বঞ্চিত বটে। তবে এখনকার প্রেক্ষাপট পাল্টে গেছে। নারীরা সমান অধিকার পাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও প্রমীলা ফুটবল দল আছে, ক্রিকেট দলও আছে। অন্ধকার যুগ থেকে নারীরা সচেতন হয়ে বের হয়ে আসছে আর তা সমাজে বিশাল পরিবর্তন আনছে। আমাদের সোনালী ব্যাংকের মিরপুরে নারী কর্মী প্রচুর আর তারা বিভিন্ন শাখার ম্যানেজার বটে। নারীরা ব্যাংকের জিএম, ডিএমডি হচ্ছে। একদিন দুরে নাই যখন নারী এমডি হবে সোনালী ব্যাংকে। আজকের নারীরা পদানত নয় পুরুষের তবে তারা ধর্মীয় অন্ধত্বে পুরুষকেও হার মানায় ও হিজাব পড়ে ধর্মের প্রতি তাদের নিষ্ঠা প্রদর্শন করে। এরা পুরুষদের চেয়ে আরো বেশি ধর্মান্ধ বলে আমার মনে হয়েছে। 

উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় ডা.সাঈদ ভাই এভাবে আমাকে কোন উত্তরই দেন নাই, বরং আমার দৃষ্টি ইসলামের ব্যাখ্যার দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন আর তাদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিত ও চৌকস লন্ডন ফেরত ভাইদের ব্যাখ্যা গুলো আমার কাছে চমকপ্রদ মনে হয়েছিল বিধায় আমি ইসলামের দিকে ঝুঁকে পরেছিলাম। কিন্তু এখন আমি বিপরীত দিকে আমার চিন্তা চেতনার যথার্থতা খুঁজে পাচ্ছি। মুসলিম প্রফেশনাল দের হোয়াটস এ্যাপ গ্রুপ থেকে ঝগড়া করে বের হয়ে আসি আমি কিছু দিন আগে তবে এক ছোট ভাইকে খুব ভাল লাগতো তার সাথে অতি সম্প্রতি কিছু বাক্যালাপ হয়। সেটা নিচে তুলে দিচ্ছি যাতে বুঝা যাবে এখনকার আমার মানুষিক অবস্থাটা কোন পর্যায়ে।

৮-সেপ্টেম্বর-২০২৩ তারিখে এমপিইফ এর এক ছোট ভাইকে হোয়াটস এ্যাপে বলা কথাগুলো এখানে তুলে দিলামঃ ১৪০০ বছর আগের একটা বই আর আরব কালচার নিয়ে পড়ে না থেকে ৩০০ কোটি বছর আগের জীবাশ্ম নিয়ে কিছু ঘাটাঘাটি করেন তাহলে বহু কিছুই জানতে পারবেন। ভাই একই কুয়ার মধ্যের সব বই পড়লে ওই কুয়ার ব্যাঙ হয়েই থাকতে হয়, বিভিন্ন কুয়ার বই পড়লে প্রকৃত সত্যটা স্পষ্ট হয়। বাস্তবতাটা বুঝা যায়। একটা ছবিতে দেখা যায় বন্যার মধ্যে একটা বাচ্চা ছেলে গলা পানিতে গামলায় করে এক কুকুর ছানাকে বাচায়ে নিয়ে যাচ্ছে। বলালাম এটা হলো প্রকৃত মানব ধর্ম, বাকি যা আছে সব গাজাখোরী গল্প। মানুষকে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বাচতে দিন, মন্ত্র-তন্ত্রর বেড়াজালে বেধে জানোয়ার বানাবেন না।

চাল ডালের জন্য মরকেটিং দরকার পরে না। আপনার ধর্ম যদি হতো স্বতঃস্ফূর্ত তা হলে এত দাওয়ার প্রয়োজন পড়তো না। ধীরে ধীরে যে আপনার ধরমর অবক্ষয় হচ্ছে তা সমাজের দিকে তাকালেই বুঝা যায়। ফজরের নামাজে জামাতের পেরামিটার দেখুন তাহলেই এর একটা হিসাব পাবেন। আর জুম্মায় কোন রকমে দুই রাকাত পড়ে লোকজনের মোনাজাতের আগেই পলায়ন চেষ্টা লক্ষ্য করেছেন কি? এসব কি দেখেও না দেখার ভান করেন? মেসেজ দিতে হবে কেন? যা সত্য তা খালি চোখেই দেখা যায়। সকালে আলো হয় সূর্য উঠেছে বলে তার জন্য কাউকে তো মেসেজ দিতে হয় না। অন্ধ যারা তাদের বলতে হয় এখন সকাল। আপনারা মেসিভ দাওয়ার বড়ি খেয়ে দৃষ্টিশক্তি হারায়ে ফেলেছেন। সত্য তো বর্তমানেই দৃশ্যমান। যারা স্বপ্ন দেখে তারা সত্য খুঁজে বেড়ায় আকাশে বাতাসে। মনটাকে এক ইঞ্চির মত প্রশস্ত করুন, সব সত্য ধরা পরবে এখনই। তার জন্য যত্র তত্র মন্ত্র তন্ত্র ঘাটা ঘাটি করা লাগবে না। মন্ত্র তন্ত্রর ব্যখ্যায় ঘোটা মিক্স করে আপনারা যে সরবত খাওয়ান মানুষকে তাতে তাদের বদ হজম হয় কিন্তু কেউ ওই বদহজমের সাথে আপনাদের সরবতের যোগসূত্রটা দেখতে পায় না। আপনারা যেমন অন্ধ আপনাদের অনুসারীদেরও অন্ধ করে ফেলেন। এসব জগাখিচুড়ি ধ্যান ধারনা বিতরণ বন্ধ করেন, জনগণের মঙ্গল হবে। দিনে পাঁচ বার মঙ্গলের দিকে আসুন বলে বলে আপনার মানুষের অমঙ্গল করবেন তা জনগণ একসময় মেনে নিবে না। উল্টা রিএকশন হবে। তখন পালাবারও পথ পাবেন না।

১৪০০ বছর আগে আরব ভুখন্ডের গুটি কতক অসভ্য, বড়বড় বেদুয়িন জাতিতে ইসলাম একটি সভ্য জীবন বিধান ছিল তা সত্য কিন্তু আজকের সভ্য জগতে সেই পুরাতন প্রথার পুনঃ প্রচলন চেষ্টা নির্বুদ্ধিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটুকু বুঝার ক্ষমতা আপনার আছে বলে আমি মনে করি। আপনার নিজস্ব মনটাই আপনার পরশ পাথর, গত ২০২৩ বছরের মানব সভ্যতার গড়ে উঠা সব গুলো ধারণা ও মতবাদের সাথে আপনার পরশ পাথরটির টোকা লাগালে দেখবেন সত্য আপনা আপনিই ধরা দিবে। একটা ছাতার নিচে না থেকে সবগুলো ছাতা ট্রাই করে দেখেন। দেখবেন মানব মনের বিশ্বটা অনেক বড়। সবগুলো ছাতা ট্রাই করলে দেখবেন সব ছাতার নিচেই অন্ধকার, ছাতাটা সরালেই আকাশটা মুক্ত আর আলোকময় কোন মেঘ বা বৃষ্টি কিংবা ঝড়ের আশংকা নেই। সেই আলোয় আপনিও আলোকিত হয়ে উঠবেন। মানব জাতিকে যা সভ্যতার সংগ্রামে বাঁচিয়ে রেখেছে তা হলো তাদের পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা। এই মানব জাতিই একদিন তাদের মত কিন্তু গরিলাদের মত শক্তিশালী নিয়ানথারডালদের সমূলে নির্বংশ করে টিকে গেছে। আর ২০ কি ৩০ বছর পর আমার আপনার হাড্ডি গুড্ডিও কেউ খুঁজে পাবে না কিন্তু মানব সভ্যতা চলমান থাকবে।

উপরের সেই ভাইকে বলা কথাগুলো থেকেই বুঝে যায় আমি আর ধর্মের উদ্ভট ধ্যান ধারণায় ফিরবো না। আমি ধর্মের ফাকা বুলি গুলো এখন ধরতে পারি। তাই বলি আমায় ডেক না, ফেরান যাবে না, ফেরারি পাখিরা কুলায় ফিরে না। 

এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ১৯৯৯> ২০০২> ১০আগস্ট২০২৩> ৭সেপ্টেম্বর২০২৩> ১০সেপ্টেম্বর২০২৩> ১২সেপ্টেম্বর২০২৩> ১৬সেপ্টেম্বর২০২৩> ০৩ জানুয়ারী২০২৪ >

No comments:

Post a Comment