৫ই আগস্ট ২০২৩ তারিখে ”এক জন অতি সাধারণের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ লেখাটা পড়ে” আমার এক কলিগের মন্তব্য ও তার প্রেক্ষিতে আমার উত্তর দিয়েই শুরু করি। এই প্রিয় কলিগটি আমাকে এই লেখার বিষয়ে রসদ ও লিংক সরবরাহ করে সহযোগীতাও করেছেন। উনার মন্তব্যর মাঝে আমার কথা গুলো সবুজ রং এ ব্র্যাকেট আবদ্ধ ও বোল্ড করা, উনি বলছিলেন “পুরো লেখাটাই পড়লাম। বলা যায়, বাংলাদেশের জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত গোটা সময়ের একটা সংক্ষিপ্ত ও ধারাবাহিক বর্ণনা। অনেকটা বার্ডস আই ভিউয়ের মতো। তাতে পাঠকের ক্ষুধাই বাড়ে কিন্তু পেট ভরে না। (পাঠককে প্রচুর জ্ঞান দেয়ার ইচ্ছা আমার ছিল না, লেখাটার কলেবর ছোট না করলে লোকজন পড়তে চায় না। আমার উদ্দেশ্য মূলত ওই ক্ষুধাই বাড়ান, পেট তারা নিজেরাই ভরে নিবে। আমার লেখা পড়ে তার মধ্যে চিন্তার শুরু হলেই আমি মনে করি আমার কাজটা হয়ে গেছে।) আপনি আরও যতটা সম্ভব বিশদ লিখতে পারতেন। অথবা ধরে নেয়া যায়, আপনি বর্তমান সময়ে এসে যে কোনো একটা পক্ষ নেওয়ার প্রারম্ভিকতা হিসেবে পূর্বের কথা এনেছেন। তাহলে বর্তমান সময়টাও আরো বিস্তারিত বিকল্পসহ লিখতে পারতেন। (হ্যাঁ তা পারতাম কিন্তু তার জন্য পরের লেখাগুলো রইলো। মানে পরের লেখা গুলোতে ওই প্রসঙ্গ গুলো আনবো বা আনতে পারি।) যেমন, আমি যদি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করি, আপনি মঈন ইউ আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে দেশের দুর্গতির কথা বলেছেন, তবে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিকাশ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন বিকল্প ফর্মুলার কথাও বলেননি। (বলিনি কারণ এখানে বলার কিছু নাই, আমাদের সংবিধান তত্ত্বাবধায়ক সরকার সমর্থন করে না। আর তাছাড়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা দেশ ও জাতির জন্য একটা বড় ফাঁদ এর মত। দেশের সব গুলো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দুর্বল হয়ে যায়। অনেকটা জাতি কিংবা দেশকে আইসিইউ তে নেয়ার মত। আমি এর বিপক্ষে কারণ, ক্ষমতার হাত বদল সাংবিধানিক প্রক্রিয়াতেই থাকতে হবে, অন্তর্বর্তী কেয়ার টেকার সরকার একটা সাময়িক ব্যবস্থা ছিল, মার্শাল ল থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সময় একটা পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা ছিল, কিন্তু তাকে চিরাচরিত প্রথা করে ফেললে হবে কেন?) আমরা জানি, Absolute Power কোনো দলের জন্যই বা দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না। দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল থাকাও দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য আবশ্যক। (সুশাসনের জন্য আবশ্যক সৎ ও দায়িত্বশীল শক্তিশালী জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন। শক্তিশালী বিরোধী দল যদি কথায় কথায় হরতাল ডেকে সরকারের কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতে চয়, যেমনটা আমরা দেখেছি লাগাতার হরতাল, অগ্নি সন্ত্রাস তা হলে সেই রকম বিরোধী দল আসলে দেশের কোন মঙ্গল আনে না।) যত উন্নয়নই হোক মত প্রকাশ ও চলাচলের অবাধ স্বাধীনতা মানুষের আরাধ্য। মানুষ ভয়ের মধ্যে থাকতে চায় না। পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান কিন্তু উন্নয়নের গণতন্ত্রের কথা বারবার বলতেন। মানুষ তাঁর কথা শোনেনি। গাদ্দাফির লিবিয়ায় জনগণের জন্য অকল্পনীয় উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা সৃষ্টি করা হয়েছিল। তবু মানুষ বিদ্রোহ করেছিল। (গাদ্দাফির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল আমেরিকার ইন্ধন পুষ্ট লোকজন।) আপনার লেখায় বলেছেন, বিএনপির আজকে দেশ চালানোর মতো নেতা নাই। কেন নাই? শুধু তারেক রহমানই কি এর জন্য দায়ী? (না বিএনপির নেতাদের তারেক রহমানকে নেতা বানানর মানসিকতা দায়ী। তারেক রহমান নেতা হিসেবে যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেন নাই, আমার মতে তাকে দলের এক পাশে সরায়ে রেখে অন্য আরো যোগ্য লোককে উঠতে দেয়া উচিত।) আমিও কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত না। লেখাটি পড়তে ভালো লেগেছে বিধায় আপনার লেখার একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে গঠনমূলক সমালোচনা করেছি। আমার এ কথা থেকেই বুঝতে পারছেন, এখন কেউ সমালোচনা সহ্য করছে না। (আমি কারো সমালোচনা করি নি, আমার মতামত গুলো তুলে ধরেছি। যাতে পাঠকের মধ্যে নিরপেক্ষ চিন্তা করার ইচ্ছা জাগে।) দলে চাটুকার ও সুযোগসন্ধানী হাইব্রিড বা কাউয়াদের জয়জয়কার চলছে। একই কারণে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর, এসব হাইব্রিডরা উচ্চবাচ্য করেনি। বরং বেশিরভাগ হাত মিলিয়েছিল খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে। বি:দ্র: জেনারেল ওসমানী বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর হত্যাকারী মেজর ও মোশতাকের পক্ষ হয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।” এই কথোপকথন থেকেই পরবর্তী লেখাটা লিখার ইচ্ছা জাগে মনে কিন্তু পিছন ফিরে তাকাতেই অনেক কথা মনে পরে গেলেও সময়ের যাত্রায় কোনটা আগে আর কোনটা পরে তা যেন তালগোল পাকায়ে গেল তাই লেখাটা আগাতে পারছিলাম না। এরই প্রয়োজনে শুরু করলাম লিটারেচার সার্ভে বা তথ্য সংগ্রহ । ঘটনাগুলো কোনটার পর কোনটা হয়েছিল তা একে তাকে জিজ্ঞাসা করে দেখলাম তারাও আনুমানিক সময় বলছে কিন্তু নির্দিষ্ট করে তারিখ বা বছর উল্লেখ করে বলতে পারছে না। তাই এক মাস ধরে চেষ্টা করে সঠিক সময়গুলো ইন্টারনেট ঘেঁটে বের করে তথ্য চিত্র নির্মাণ করলাম যাতে করে তা আমার লেখাটিকে স্পষ্ট করবে। যারা এই নিবন্ধ পড়বেন তাদেরও সবই জানা আছে কিন্তু ওই ঘটনাক্রমে এসে অনেকের কাছেই তালগোল পাকান অবস্থাটা এই নিবন্ধ সরলীকরণ করে দিবে বলে আমার বিশ্বাস।
তাই আলোচনাটি শুরু করা উচিত নূর হোসেন এর সাহাদাত বরণ ও গণতন্ত্র মুক্তি পাক আন্দোলন দিয়ে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগে নূর হোসেন তার খালি পিঠে লিখে রেখেছিলেন “গণতন্ত্র মুক্তি পাক” এই স্লোগানটি যার কারণে তাকে পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নূর হোসেনের জীবনকাল ১৯৬১ - ১০ নভেম্বর ১৯৮৭। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব, যিনি ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগঠিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। দিনটিকে প্রথমে ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর হিসেবে পালন করা হলেও, আওয়ামী লীগ দিনটিকে "নূর হোসেন দিবস" হিসেবে পালন করতে শুরু করে।
এবার প্রসঙ্গে আসা যাক, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কখন প্রয়োজন সেটা আগে বুঝতে হবে। যখন দেশ একটা অস্বাভাবিক অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে চায় তখন পরীক্ষামূলক ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন পরেছিল, বিশেষ করে এরশাদ সরকারের অবস্থা থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের সিঁড়ি হিসেবে। সেই অবস্থাটি কি এখন আছে? আসুন ধারাবাহিক রাজনৈতিক পরিবর্তন গুলো পর্যালোচনা করে দেখি। বাংলা পিডিয়া অনুসারে “১৯৯০ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি রাজনৈতিক দলগুলির পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সমঝোতার অভাব থেকেই উদ্ভূত। একটি বিদায়ী সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার গঠনের ক্ষেত্রে আইনানুগ রীতিসিদ্ধ পদ্ধতিগুলোর কতখানি সুষ্ঠু প্রয়োগ করবে এবং সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কতটা পক্ষপাতহীনতার পরিচয় দেবে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এ সন্দেহ থেকেই মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিটি উঠে আসে।”
“১৯৯৬ সালের ২১ মার্চ ত্রয়োদশ (১৩ তম) সংশোধনীর মাধ্যমে তত্বাবধায়ক সরকার বিলটি জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয় এবং ২৬ মার্চ ২৬৮-০ ভোটে বিলটি পাস হয়। ত্রয়োদশ সংশোধনীতে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৫৮ (খ) (গ) (ঘ) (ঙ) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এসব অনুচ্ছেদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সম্পর্কে নিম্নোক্ত মৌলিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়: সংসদ বিলুপ্তির পর প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন ১১ সদস্য বিশিষ্ট নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হবে; তত্ত্বাবধায়ক সরকার যৌথভাবে রাষ্ট্রপতির নিকট দায়বদ্ধ থাকবে; প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগকৃত হবেন, অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শক্রমে ১০ জন উপদেষ্টা মনোনীত হবেন; প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর এবং উপদেষ্টাগণ মন্ত্রীর অনুরূপ পদমর্যাদার অধিকারী হবেন; নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হিসেবে এর কার্যাবলী, বিশেষত দৈনন্দিন প্রশাসনিক কার্য সম্পাদনে ব্যাপৃত থাকবে এবং নিতান্ত প্রয়োজন না হলে নীতি নির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিরত থাকবে; তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে; নতুন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের দিনই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত ঘোষিত হবে।” ৩০শে জুন ২০১১ সালে তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে ১০ম জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ (১৫) সংশোধনী বিল পাশ হয় (ফুট নোট-৯ দ্রষ্টব্য)। তথ্য সূত্র বাংলা পিডিয়া থেকে নিচের টাইম লাইন তথ্য চিত্র টি গঠন করলে যা বুঝা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো।

উপরের তথ্যচিত্র গুলো একমাস ধরে ধীরে ধীরে তৈরি করা হয়েছে ও দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন গুলোর পাশাপাশি যে সব দুর্ঘটনা গুলো বাংলাদেশের মানুষকে বিচলিত করেছে তাও সময়ের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে যাতে করে একটা পরিষ্কার ধারণা চিত্র তৈরি হয় মানস পটে। প্রতিটি ঘটনাই আমার জীবদ্দশায় ঘটে গেছে আর আমি তা অভিজ্ঞতা দিয়ে অনুভবও করেছি। যা বাদ গেছে তা হলো জামাতে ইসলামীর বেশ কয়েকজন নেতৃত্ব স্থানীয় নেতাকে বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার শেষে রাজাকার হিসেবে দোষী সাব্যস্ত ও মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর করা। আরো আছে ডা. ইউনুস এর গ্রামীণ ব্যাকের সাথে সম্পর্ক ছেদ ঘটিয়ে তাকে রাজনীতি থেকে দুরে সরায়ে দেয়ার মত বিতর্কিত বিষয়গুলো। অত সব বিস্তারিত বিষয়ে না গিয়ে কেবল তত্ত্ববধায়ক সরকার ব্যবস্থায় দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে দেখা যায় তা হলো আওয়ামীলীগের ২৩ মার্চ ১৯৯৬ এর জনতার মঞ্চ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিএনপি সরকার শুধুমাত্র তত্ত্ববধায়ক সরকার বৈধকরণের জন্য ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদে সংবিধানের ১৩ তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বৈধতা দেয়া হয় (১৯৯৬, ২৬ মার্চ বিএনপি সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল জাতীয় সংসদে পাস করে)। কেবল মাত্র এই ১৩ তম সংশোধনীর জন্যই অল্প সময়ের পরিসরে ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ গঠন করা হয়েছিল অথচ এই আওয়ামীলীগ সরকারই ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদে সংবিধানের ১৫ তম সংশোধীনর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল বাতিল করে দেয়। ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অর্থাৎ ১৮ বছরের মধ্যে এমন কি হয়েছিল যার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের প্রয়োজন হলো? আমার যা মনে হয় তা হলো ১ লা জানুয়ারি ২০০৭ এর জরুরী অবস্থা আর ড. ফখরুদ্দীন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর পিছন থেকে কাজ করা মঈন ইউ আহমেদের কার্যক্রম এর জন্য দায়ী। তখন বিএনপি ও আওয়ামীলীগের দুই নেত্রীকেই গৃহবন্দী করে মাইনাস টু ফরমুলা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন মঈন ইউ আহমেদ। এই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকেই আমার মনে হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমার যতদূর মনে পড়ে কোন এক বক্তব্যে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে থাকার বিপরীতে বলেছিলেন কেন মনে নাই কি বিপদ হয়েছিল এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কারণে, আমার মনে হয় তিনি মঈন ইউ আহমদের মাইনাস টু বাস্তবায়নের ইংগিতের কথাই মনে করায়ে দিতে চেয়েছিলেন তার বক্তব্যে। এ বিষয়ে আমার অভিমত হলো এরশাদ সরকার এর স্বৈরাচার থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা একটা কার্যকরী পদক্ষেপ ছিল অথচ সেই সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে সংসদে বা সংবিধানে বৈধতা না দিয়েই বাস্তবায়ন করা হয়েছিল তার পর একে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে অযথা কালক্ষেপণ করা হয়। কিন্তু দুই বা তিন টার্ম পর এর আর প্রয়োজন থাকার কথা না। সংবিধানেই নির্বাচন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের নীতিমালা থাকা অত্যন্ত আবশ্যকীয় একটি বিষয়। তাকে অন্তর্বর্তী কালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে বৈধ করণ করার ব্যবস্থাটি আমার কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়। আমরা জাতি হিসেবে কি এতটাই পশ্চাদ পদ যে বার বার লেভেল প্লেইং ফিল্ড করে তার পর নির্বাচন দিতে হবে? উন্নত জাতিগুলোর তো প্রতিবার নির্বাচনে এরকম করা লাগে না। তাদের সংবিধান মতই তো ক্ষমতা হস্তান্তর হচ্ছে কোন অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়াই। আমরা কি আজো ততটা উন্নত হতে পারি নাই। এখানে লক্ষণীয় যে, যে সংসদে তত্ত্বাবধায়ক বিল পাস হলো তা এক তরফা সংসদ ছিল আবার যে সংসদে এই বিল বাতিল হলো তাও এক প্রকার এক তরফা সংসদ। এভাবে আমাদের কেন একতরফা সংসদীয় ব্যবস্থার ফাঁদে বার বার পড়তে হচ্ছে তাই বুঝা মুশকিল। এ প্রসঙ্গে আমার ছোট বেলার অভিজ্ঞতা আমাদের দেশের এক সময়কার ফুটবল লিগের দুই দল আবাহনী আর মহাম্মডান স্পোর্টিং ক্লাবের তুমুল লড়াইয়ের কথা মনে পড়ে যায় যেখানে তৃতীয় শক্তি ছিল ব্রাদারস ইউনিয়ন। প্রত্যেক লীগ ফাইনালে হয় আবাহনী না হয় মোহম্মেডান জিততো কিন্তু ব্রাদারস ইউনিয়ন সব সময় পিছনেই পড়ে থাকতো। এরই প্রতিফলন যেন দেখতে পাই রাজনীতিতে, এখানেও আওয়ামে লীগ না হয় বিএনপি আর তৃতীয় দল বলা যায় জাতীয় পার্টি অথবা জামাত তবে জামাত যেন ছদ্ম ক্ষমতা লিপ্সু একটি ডরমেন্ট দলের মত আচরণ করে থাকে। আচ্ছা বলেন তো রাজনীতি কি ফুটবল খেলা যে বার বার সমতল মাঠ গঠন করার জন্য স্টিম রোলার চালাতে হবে? আমি সরল মনা মানুষ আমার মতে সংবিধানেই ক্ষমতা হস্তান্তরের একটা সুন্দর ব্যবস্থা থাকতে হবে আর দেশের জনগণ তা মেনে চলবে। সেটি যদি হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে তা হলে তাই সই। তবে কোনটি সঠিক তার জন্য কোন এক সরকারের উচিত গণভোট এর ব্যবস্থা করা। এভাবে কামড়া কামড়ি বা চুলা চুলি না করে পুর জনগোষ্ঠীর মতামত নেয়ার একটা ব্যবস্থা করলেই মনে হয় সমাধানটা পাওয়া যাবে। অন্তত ভানু বন্দপাধ্যায়ের মত বলতে হবে না যে, বাইশ জনকে বাইশটা বল দিয়ে দিলেই তো লেঠা চুকে যায়, একটা ফুটবল নিয়ে ২২ জনের এত মাতামাতির বা দৌড়াদৌড়ির দরকারটা কি। যে ভাবে রাজনীতি থেকে ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে এবং পরবর্তীতে ডা.ইউনুসকে সরে যেতে হয়েছে তা আমার মোটেও ভাল লাগেনি। কারণগুলো আমরা সবাই জানি কিন্তু এ বিষয়ে বক্তব্য রাখাও বিরক্তিকর বলে মনে হয় আমার কাছে। রাজনীতিকে হতে হবে সাবলীল, কার ভয়ে, কার প্রভাবে, কার অন্যায় আবদারে কেন রাজনৈতিক মতাদর্শ স্বাধীন সার্বভৌম দেশে। আগামী ১০ কি ২০ বছরের মাথায় এ দেশে ডাইনেস্টি পলিটিক্স নির্মূল হয়ে যাবে আপনা আপনিই। নতুন নেতৃত্ব উঠে আসতে বাধ্য হবে। সে দিন পর্যন্ত বেচে থাকব কিনা তা কে জানে।
২০০৯ থেকে ২০২৩ এই ১৫ বছর তিন টার্মে আওয়ামে লীগ সরকারের বেশ কিছু অর্জন বা সাফল্য আছে। আমাদের মত দেশে স্থিতিশীল সরকার ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরী তা এর থেকেই অনুমান করা যায়। নিচে কয়েকটা উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেয়া হলোঃ-
১) নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ।
২) ঢাকায় উত্তরা দিয়া বাড়ি থেকে মতিঝিল মেট্রো রেল নির্মাণ।
৩) মাওনা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত এক্সপ্রেস হাইওয়ে নির্মাণ।
৪) চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে টানেল নির্মাণ।
৫) ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পর স্মার্ট বাংলাদেশের পথে যাত্রা
৬) দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ মহাকাশে স্থাপন
৭) ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেনের প্রকল্প হাতে নেয়া
৮) বিদ্যুৎ উৎপাদনে ও বিতরণে পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সফল হওয়া।
৯) রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রর প্রকল্প হাতে নেয়া
১০) গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা স্বরূপ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫,৭০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ১৫৮ কোটি টাকা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ প্রদান করা ।
১১) ২০০৬ সালে দানাদার শস্যের উৎপাদন ছিল মাত্র ২ কোটি ৭৭ লক্ষ ৮৭ হাজার মে. টন। ২০২৩ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ ৬৮ হাজার মে. টন।
১২) ২০০৬ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষকের সংখ্যা ছিল ৫৯ হাজার ৫৫ জন। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৯০৬ জন।
১৩) ২০০৬ সালে বিধবা ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা ছিল ৬ লক্ষ ৫০ হাজার। বর্তমান সরকারের সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ২৫ লক্ষ ৭৫ হাজার।
১৪) ২০০৬ সালে আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত চা-শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ০ (শূণ্য) জন। বর্তমান সরকারের সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার।
১৫) ২০০৬ সালে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হিজড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ০ (শূণ্য) জন। বর্তমান সরকারের সময়ে তা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২০।
১৬) ২০০৮ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিল ৩১.৯১% বর্তমানে দেশে টেলিডেনসিটি ১০৫.৮১%।
লিস্টটি আরো বড় করা যায় কিন্তু তার দরকার পরে না। উপরোক্ত কয়েকটা অর্জনকে আমলে নিয়েই এ কথা বালা যায় যে, এই সরকার চেষ্টা করেছে দেশের উন্নয়নে যাতে কারো সন্দেহ থাকার কথা না। তারপরও জনগণের মতামত নিলে দেখা যাবে বলছে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামে লীগ জিতবে না। কেন সাধারণের এরকম মনভঙ্গি কিংবা চিন্তাধারা তা আমার বোধগম্য হয় না। তিন টার্মে এই সরকারের অর্জনগুলো দৃশ্যমান ও এর সুবিধাগুলো মানুষ নিতে শুরু করেছে, তা হলে কেন তাদের মনে হচ্ছে নতুন সরকার দরকার। এই মানুষিকতাও আমার কাছে যথাযথ মনে হয় না।
যেহেতু এটি একটি রাজনৈতিক নিবন্ধ তাই আমার কিছু প্রস্তাবনাও আছে যা নিম্বরূপঃ-
ক) সরকার পরিবর্তন প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা হবে কি না তা গণভোটের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
খ) সংসদে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে। এক তরফা সংসদ হলে পুন নির্বাচন দিতে হবে।
গ) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর সকল নাগরিকের রাজনৈতিক মতামতের অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে।
ঘ) রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য কিংবা মত প্রকাশের জন্য কাউকে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে হয়রানী করা যাবে না।
ঙ) আপামর জনসাধারণের যে কোন মতামতকে বা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে উচ্চ মূল্য প্রদান করে সর্বতোভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
চ) সর্বক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতা ও পরমত সহিষ্ণুতা বজায় রাখতে হবে।
ছ) গণতন্ত্রের চারটি মূল স্বাধীনতা ১)মত প্রকাশের ২) বিশ্বাসের ৩) মালিকানার ৪) ব্যক্তিগত স্বাধীনতা কে সর্বত ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
জ) ডাইনেস্টি পলিটিক্স কিংবা রাজকীয় গণতন্ত্র বা পরিবার কেন্দ্রিক বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনৈতিক মানুষিকতা থেকে মুক্তি পেতে হবে।
ঝ) সবাইকে সামাজিক যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে প্রতিবাদ করতে হবে।
ঞ) সামাজিক প্রভাব বলয় বা প্রেশার গ্রুপ গুলোকে আরো নিরপেক্ষ হতে হবে ও দেশের স্বার্থে “সবার আগে দেশ”এই স্লোগানে বিশ্বাস করে তাদের প্রভাব খাটানোকে টিউন করতে হবে।
ট) আভ্যন্তরীন রাজনীতিতে বিদেশী রাজনৈতিক শক্তির প্রভাব যথাসম্ভব কমায়ে ফেলতে হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থেকে সাইবার নিরাপত্তা আইনে উত্তরণের এই সময়ে রাজনীতি নিয়ে কিছু লিখতেও ভয় লাগে। উপরের নিবন্ধটি কোন রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি থেকে লেখা হয় নাই। কাউকে হেয় কিংবা উন্নত বলার উদ্দেশ্যেও লেখা হয় নাই। যা লেখা হয়েছে তা মূলত লিটারেচার সার্ভে করে অতীতের ঘটনা প্রবাহকে তথ্যচিত্রর মাধ্যমে প্রকাশ করে আমার অভিমত সংযুক্ত করা হয়েছে মাত্র। এটি কারো মনে আঘাত দেয়া কিংবা কাউকে প্রভাবিত করার জন্যও লিখা হয় নাই। কেউ প্রভাবিত হয়ে থাকলে সেটি তার ব্যাপার আমি অতীতকে স্পষ্ট করে দেখে বর্তমানের প্রেক্ষাপটে আমার অভিমত ব্যক্ত করেছি মাত্র। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার সেই অধিকার আছে বলে আমি মনে করি। বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমান নিয়ে যেই প্রবন্ধই লিখেন না কেন কয়েকজনের অবদান কখনই ছোট করে দেখাতে বা বাদ দিতে পারবেন না, যেমন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার, মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ, সাত জন বির শ্রেষ্ঠ, বেগম খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা, ভারতের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই নামগুলো ও এই ব্যক্তিবর্গের মধ্যে কারো অবদান অস্বীকার করলে তা বাংলাদেশের রাজনীতির নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ হবে না। এই নিবন্ধ পক্ষপাত মুক্ত বলে আমি মনে করি। আমি উপরউল্লেখিত কারো অবদানকেই খাট করে দেখি না। উপরোক্ত নিবন্ধে আমি কোন ভুল তথ্য উপস্থাপন করে থাকলে বিজ্ঞ পাঠককে তা আমাকে জানিয়ে সংশোধনের অনুরোধ রেখে শেষ করছি।
এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ০৬আগস্ট২০২৩> ১৫আগস্ট২০২৩> ২৪ আগস্ট২০২৩> ০৩সেপ্টেম্বর২০২৩> ০৭সেপ্টেম্বর২০২৩> ২৬সেপ্টেম্বর২০২৩>
ফুট নোট – ১ যে সব কারণে আলোচিত ছিলেন জয়নাল হাজারী
রাজনৈতিক জীবনের পুরো সময়টুকুই আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন ফেনীর এক সময়ের ‘গডফাদার’ খ্যাত নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন হাজারী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। ১৯৪৫ সালের ২৪ আগস্ট ফেনী শহরের সহদেবপুরের হাবিবুল্লাহ পণ্ডিতের বাড়িতে আব্দুল গণি হাজারী ও রিজিয়া বেগমের সংসারে জন্ম নেন জয়নাল হাজারী। আলোচিত জয়নাল আবেদীন হাজারী ছিলেন একজন রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালে ২ নং সেক্টরের অধীনে ক্যাপ্টেন জাফর ইমামের পরামর্শে রাজনগর এলাকায় সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন। ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার পর রাজনগরে গিয়ে ওই এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে তিনি একটি সিভিল ডিফেন্স টিমও গঠন করেছিলেন।
জেলা পর্যায়ের নেতা হয়েও একসময় জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনায় ছিলেন জয়নাল হাজারী। কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকলেও গত ১০ বছর রাজনৈতিকভাবে অনেকটা নিঃস্ব ছিলেন তিনি। নিজের হাতেগড়া রাজনৈতিক শিষ্যদের বাধার কারণেই ফেনীর রাজনীতিতে আর প্রবেশ করতে পারেননি আলোচিত এ রাজনীতিক। ছাত্রাবস্থায় ফেনী কলেজে তৎকালীন ছাত্র মজলিশের (বর্তমান ছাত্র সংসদ) জিএস ছিলেন। এরপর বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন তিনি। পরে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পদেও দায়িত্বপালন করেন জয়নাল হাজারী।
জয়নাল
হাজারী ১৯৮৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
ফেনী-২ (সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ এবং ১৯৯৬ সালে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত
হন তিনি। মূলত ১৯৯৬ সালের পর তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়
থাকার সময় ফেনীতে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে প্রায় ১২০ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী
মারা যান। এই পেক্ষাপটের পেছনে হাজারীকে সন্দেহ করা হয়। ২০০১ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের আমলে ১৬ আগস্ট রাতে হাজারীর বাসভবনে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। ১৭ আগস্ট দেশ
ছেড়ে পালিয়ে যান জয়নাল হাজারী। আরো জানতে লিংক দেখুন ”https://www.jugantor.com/politics/502423/যেসব-কারণে-আলোচিত-ছিলেন-জয়নাল-হাজারী”
ফুট নোট – ২ সন্ত্রাসবাদী বাংলা ভাই (২০০৬)
সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই (১৯৭০-৩০ মার্চ ২০০৭) একজন বাংলাদেশী সন্ত্রাসবাদী। তিনি জাগ্রত মুসলিম জনতা, বাংলাদেশ নামক উগ্রপন্থী সংগঠনের নেতা, এবং বোমা হামলা, হত্যা সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত। ৬ মার্চ ২০০৬ খ্রীস্টাব্দে পুলিশ ও র্যাব এর সম্মিলিত অভিযানে তিনি গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে বোমা হামলার অপরাধে তাকে তার সহযোগীদের সহ মৃত্যুদন্ড প্রদান করা হয়। ঝালকাঠিতে দুই সহকারী বিচারকের হত্যার দায়ে জেএমবি নেতা শেখ আব্দুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য ৫ জঙ্গিদের সাথে, ৩০ মার্চ ২০০৭ তারিখে সিদ্দিক উল ইসলামকে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। আরো জানতে লিংক দেখুন ”https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলা_ভাই”।
ফুট নোট – ৩ বিডিআর বিদ্রোহ
বিডিআর বিদ্রোহ দেশের ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়ই শুধু নয়, এই নৃশংসতা দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাঠামো বদলে দিয়েছে। বদলে গেছে এটির নাম। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির বিদ্রোহে পিলখানায় হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে। এ রক্তাক্ত বিদ্রোহের পর সরকারের পক্ষ থেকে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। পরের বছরের ১ মার্চ খসড়া আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। ২০১০ সালের ১২ জুলাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইনের খসড়া অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ বিল-২০১০ জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি নতুন পতাকা উত্তোলন এবং মনোগ্রাম উন্মোচনের মাধ্যমে বদলে গিয়ে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) হয়ে যায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুধু নামেই নয়, সেদিন থেকে পরিবর্তন এসেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পোশাকসহ আরও বেশ কিছু বিষয়ে।
আরো
জানতে লিংক দেখুন “https://www.newsbangla24.com/national/127045/বিডিআর-বদলে-যেভাবে-হলো-বিজিবি”
ফুট নোট – ৪ ২০১১ বাংলাদেশ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি
২০১১ বাংলাদেশ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি বলতে ২০০৯ থেকে ২০১১ সময়কালীন বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের অস্থির পরিস্থিতিকে বুঝানো হয়; নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয় বাংলাদেশের ঢাকা এবং চট্টগ্রাম উভয় শেয়ার বাজারে। ২০০৯ সালে বাজার ৬২% এ উন্নীত হয় যা ২০১০ ৮৩% এ পৌছায়, কিন্তু ২০১১ জানুয়ারীতে ১০% এ নেমে আসে। পরবর্তীতে ২০১১ ফেব্রুয়ারিতে ৩০% এ উন্নীত হয়।এই দর পতনটি কেলেঙ্কারি হিসাবে পরিচিতি পায় এবং সরকারের তৎকালীন ব্যর্থতায় বৃদ্ধি পায়।
২০০৯ সালের বেশিরভাগ সময় স্টক মার্কেটে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়[৩] দুই বছরের রাজনৈতিক সংকট শেষে এবং গণতন্ত্র পুনঃ উদ্ধারের (ডিসেম্বর ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় লাভের মাধ্যমে) সময় থেকেই বুলিশ ট্রেন্ড (শেয়ার দরের উদ্ধগতি) এর প্রবণতা শুরু হয়েছিল [৪] এবং এটি বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার মাঝেও অপরিবর্তিত ছিল পুঁজি বাজারে গ্রামীণফোন প্রবেশের মাধ্যমে সমগ্র বাজারে ব্যপকভাবে সহায়তার সুযোগ তৈরি হয়েছিল, ১৬ নভেম্বর ২০০৯ একদিনে মূল্যসূচক ২২% বৃদ্ধি পেয়েছিল শেয়ার মূল্যের অস্থিরতা চলতে থাকে এবং ২০০৯ এর মধ্যভাগে এই হার বাৎসরিক সর্বোচ্চে পৌছায়।[৭] ২০০৯ এর শেষভাগে দর পতনের পুর্ব মুহুর্তে খুচরা বিনিয়োগকারীরা অনশন ধর্মঘট এর হুমকি দেয় উল্লেখ্য যে, এর আগে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে শেয়ার বাজার পতনের আরো একটি অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাকতালীয় বিষয়, দুইটি পতনই সংগঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের শাসন আমলে সম্পূর্ণ ২০১০ শেয়ার বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করে, ডিএসই একই মাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ্য সূচক স্পর্শ করা এবং ১৯৯৬ সালের পরবর্তি সময়ের বিচারে কোন একক দিবসে সর্বোচ্চ্য দর পতনের অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
আরো জানতে লিংক দেখুন https://bn.wikipedia.org/wiki/২০১১_বাংলাদেশ_শেয়ারবাজার_কেলেঙ্কারি
ফুট নোট – ৫ হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর ঢাকা অবরোধ
১৯ জানুয়ারি ২০১০ সালে এই সংগঠনটি চট্টগ্রামের প্রায় একশত কওমি মাদ্রাসার শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত হয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফী এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা।[৩][৫] এটি ২০১০ সালে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষানীতির বিরোধিতার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। ২০১১ সালে তারা বাংলাদেশ নারী উন্নয়ন নীতি (২০০৯) এর কয়েকটি ধারাকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক দাবি করে এর তীব্র বিরোধিতা করে।
২০২০ সালে শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর এই সংগঠনের আমির হন জুনায়েদ বাবুনগরী। জুনায়েদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী আমীর নিযুক্ত হন। ৫ মে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করে এবং ঢাকার মতিঝিল শাপলা চত্ত্বরে তাদের প্রথম সমাবেশ করে। এই সমাবেশে প্রচুর লোকের সমাগম হয়।[১২] এসময় বিভিন্ন বাধার কারণে অনেক কর্মী চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যেতে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে তারা চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়ে সমাবেশ করে। এদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগঠনের কর্মীদের সাথে আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ হয় এবং কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঢাকা অবরোধ মূল নিবন্ধ অপারেশন সিকিউর শাপলা। ৫ মে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি এবং ঢাকার মতিঝিলে তাদের দ্বিতীয় সমাবেশের আয়োজন করে। ৫ ও ৬ মে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে এই সংগঠনের কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষে বহু হেফাজতে ইসলামের কর্মী, পুলিশ, বিজিবি সদস্যসহ মোট ৪৭ জন নিহত হয় এবং সাংবাদিকসহ আরও অনেকে আহত হয়। তাদের উপর ফুটপাতের দোকান ও অন্যান্য বইয়ের সাথে কোরান শরিফ পোড়ানোরও অভিযোগ আনা হয়।] এদিন ধর্মীয় বইয়ের প্রায় ৮২টি দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়।তবে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা দেবাশীষের নেতৃত্বে কুরআন শরিফ পোড়ানো হয়।পল্টন মোড় ও সিপিবির কার্যালয়ের সামনে পুরোনো ৩৫টি বইয়ের দোকানের মধ্যে ৩টি বাদে সবগুলোই পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরো জানতে লিংক দেখুন https://bn.wikipedia.org/wiki/হেফাজতে_ইসলাম_বাংলাদেশ
ফুট নোট – ৬ হলি আর্টিজান বেকারির হত্যাকান্ড
হলি আর্টিজান বেকারি (Holey Artisan Bakery) হলো বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক একটি বেকারি প্রতিষ্ঠান ও রেস্তোরাঁ। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস একে “ঢাকার অন্যতম জনপ্রিয় রেস্তোরাঁ” হিসেবে আখ্যায়িত করে।[১] এটি ইজুমি নামক অপর একটি রেস্তোরাঁর সহযোগী প্রতিষ্ঠান। রেস্তোরাঁটি প্রতিষ্ঠার সময়ে মূলত ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ার নিকটে, গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে অবস্থিত ছিল। রেস্তোরাঁর প্রধান গ্রাহকেরা ছিলেন মূলত স্থানীয় ও ঢাকার বসবাসরত বিদেশি ব্যক্তিবর্গ। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই তারিখে জঙ্গিরা রেস্তোরাঁয় আক্রমণ চালায়। সেই হামলায় ১৮ জন বিদেশি নাগরিক প্রাণ হারান। হামলার পর সেখানকার রেস্তোরাঁটি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং গুলশানের “র্যাংস আর্কেড” নামক ভবনে রেস্তোরাঁটি স্থানান্তর করা হয়। ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১০ জানুয়ারি নতুন স্থানটিকে কর্তৃপক্ষ “নিরাপদ” বলে ঘোষণা দেয়।[৩][৪] ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে গুলশানেই রেস্তোরাঁটির আরেকটি শাখা খোলা হয়, যেটি বর্তমানে “ওরো” (ORO) নামে পরিচিত। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে আক্রমণের শিকার ভবনটিকে বেকারি কর্তৃপক্ষ নিজেদের জন্য আবাসিক ভবনে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা করেন। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে রেস্তোরাঁ পুনরায় চালুর কয়েকদিন পর, হলি আর্টিজান থাইল্যান্ডের ব্যাংককে তাদের প্রথম বৈদেশিক শাখা চালু করে। বর্তমানে ব্যাংককে বেকারির তিনটি শাখা সচল রয়েছে।
আরো জানতে লিংক দেখুন https://bn.wikipedia.org/wiki/হলি_আর্টিজান_বেকারি
ফুট নোট – ৭ আওয়ামেলীগের মহা জোট গঠনঃ
১৯৯৮ সালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের দ্বি-দলীয় মেরুকরণের বাইরে বাম শক্তিকে একতাবদ্ধ করে একসঙ্গে আন্দোলন, নির্বাচন ও সরকার গঠন করার উদ্দেশে এগারোটি দল মিলে গঠন করে একটি রাজনৈতিক জোট, যা ১১ দলীয় জোট নামেই পরিচিত হয়। ২০০৪ সালে ২৩ দফা দাবিতে ১১ দলীয় জোটের সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-মশাল), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-কুঁড়েঘর) এই তিনটি দল মিলে গঠিত হয় ১৪ দলীয় জোট। পরবর্তীতে, ৪টি দল ১৪ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল,বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মাহবুব) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) - এই ৪টি দল ১৪ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যায়। তবে, বাসদের একাংশ ১৪ দলীয় জোটে থেকে যায়। ফলে, ১৪ দলীয় জোটে দলের সংখ্যা হয় ১১টি। অল্প কিছুদিন পরে, গণফোরাম বাংলাদেশ ১৪ দলীয় জোট ত্যাগ করলে দলের সংখ্যা হয় ১০টি। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে জাতীয় পার্টি (জেপি) ও তরিকত ফেডারেশন ১৪ দলীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত হলে দলের সংখ্যা হয় ১২টি। কিছুদিন আগে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ (মশাল) দুই ভাগে বিভক্ত হয়। দুই ভাগই ১৪ দলীয় জোটে আছে বিধায় ১৪ দলীয় জোটের বর্তমান সদস্য সংখ্যা ১৩টি দল। আরো জানতে লিংক দেখুন https://bn.wikipedia.org/wiki/ বাংলাদেশ_আওয়ামী_লীগ
ফুট নোট – ৮ জনতার মঞ্চঃ
১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনের নির্বাচনের প্রতিবাদে ২৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৎকালীন ঢাকার মেয়র মোহাম্মদ হানিফের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই মঞ্চ। শুরু হয় আন্দোলন। প্রথমে সাধারণ মানুষ এবং পরে জনতার মঞ্চে শামিল হয় রাজনৈতিক দল, সরকারের আমলাসহ সকল পেশাজীবী সংগঠন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রবল আন্দোলনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস করে পদত্যাগে বাধ্য হয়। ১৯৮১ থেকে গণতন্ত্রের দাবিতে দীর্ঘ নয় বছরের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতন ঘটে? এরশাদ সরকারের পতনের পর সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন? সাহাবুদ্দিন আহমেদের অধীনে ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এই নির্বাচনে সূক্ষ্ম কারচুপির অভিযোগ আনেন। তিনি এই নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন। সেই থেকে পঞ্চম সংসদের যাত্রা শুরু হয়।
সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা চলে এই অবস্থান। জনতার মঞ্চে একে একে শরিক হয় বিএনপি ছাড়া দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, আমলা, পেশাজীবী এবং সাধারণ মানুষ। মঞ্চে বক্তৃতার পাশাপাশি চলে বিপ্লবী সঙ্গীত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা চেষ্টা করা হয় মঞ্চ ভেঙ্গে অবস্থান উঠিয়ে দেয়ার। জনতার প্রতিরোধে শেষ পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী আর সাহস পায়নি। ২৬ মার্চ সরকার নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল জাতীয় সংসদে পাস করে? আরো জানতে লিংক দেখুন “https://www.dailyjanakantha.com/national/news/180924”
ফুট নোট – ৯ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৪ ও তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলকরণ
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৪ বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এছাড়াও নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ৫ জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাকী ১৪৭টি] আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার ফলে এবারের নির্বাচনে সারা দেশের মোট ৯,১৯,৬৫,৯৭৭ ভোটারের মধ্যে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান ৪,৩৯,৩৮,৯৩৮ জন।
৩০শে জুন ২০১১ সালে তত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশ হয়। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার শরিক জোটগুলো এর পর থেকেই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে।] সরকারী দল আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ঘোষণা দেন] এবং তখনই বিরোধী দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দেন।
আরো জানতে লিংক দেখুন https://bn.wikipedia.org/wiki/দশম_জাতীয়_সংসদ_নির্বাচন,_২০১৪
No comments:
Post a Comment