সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগিতা যে কোন বয়সী মানুষের মধ্যে একটি ব্রেন স্টর্মিং সেশন তৈরি করে যার ফলে তার মস্তিষ্কের চিন্তা করার ক্ষমতা, স্মৃতি, বিশ্লেষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যখন তাকে কুইজ বা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় তখন তার মনের চিন্তা চেতনা সজাগ হয় ও উত্তর খুঁজার চেষ্টা করে যার ফলে অলস মস্তিষ্ক সচল হয় ও তথ্য প্রক্রিয়াকরণ শুরু করে। উত্তরটি অংশগ্রহণকারীদের মধ্য হতে কেউ বলে দিতে পারলে সবার তা জানা হয়ে যায় আর কেউ না পারলে কুইজ পরিচালক তা বলে দেন। এই পদ্ধতিতে অংশগ্রহণকারী সকলের মধ্যে একটি ব্রেইন স্টর্মিং সেশন চলতে থাকে আর জ্ঞানের প্রবাহ তৈরি হয় যতক্ষণ কুইজ প্রতিযোগিতাটি চলে। সাধারণত যে সকল প্রশ্ন সাধারণ জ্ঞানের কুইজে বেছে নেয়া হয় সেগুলো সমকালীন ও কালোত্তীর্ণ জ্ঞান যা সকলেরই জানা থাকাটা বাঞ্ছনীয়। সেই সকল প্রশ্ন বাদ দেয়া হয় যে গুলো বিশেষায়িত কিংবা সাধারণ জ্ঞানের বিষয় বস্তু নয়। সকল বিশেষায়িত জ্ঞানের মধ্য হতে যে সকল জ্ঞান সকলেরই জানা থাকা প্রয়োজন সেগুলোই শুধু সাধারণ জ্ঞানের কুইজ প্রতিযোগিতার প্রশ্নপত্রে স্থান পায়।
১২ই ফেব্রুয়ারি অনলাইন পত্রিকা নিউজ ডেইলি তে প্রকাশিত খবর “এদেশে অনার্স মাস্টার্স পাশ করা ছেলে মেয়ে কোন কাজ জানে না কমপ্লিট অথর্ব" এরূপ রিপোর্টের প্রধান কারণ আজকের শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র পরীক্ষা পাস ও টাকা উপার্জন ক্ষম হওয়ার জন্য পড়াশুনা করে থাকে, জ্ঞানার্জনের জন্য নয়। তাই তাদের মধ্যে সাধারণ জ্ঞানের মারাত্মক অভাব লক্ষ্য করা যায়। সাধারণ জ্ঞানের জন্য প্রতিটি মানুষকে টেক্সট বুকের বাইরেও অনেক পড়াশোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়, যা তারা করে না। সাধারণ জ্ঞান মানুষকে উন্নত ও আলোকিত মানুষে পরিণত করে। সাধারণ জ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য এবং নিজের মেধা যাচাইয়ের জন্যও র্যাপিড ফায়ার কুইজ প্রতিযোগিতা একটি দারুণ কৌশল।
পাঠাগার সমূহ কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারে বড় কোন পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়ে, যেই পুরষ্কারের অর্থ অংশগ্রহনেচ্ছুরাই রেজিস্ট্রেশন ফি এর মাধ্যমে প্রদান করতে পারেন। কুইজ চলাকালীন যে ব্যক্তি কুইজ পরিচালনা করবেন তিনি ও যিনি হিসাব রাখবেন কোন দল বা ব্যক্তি কয়টি উত্তর সঠিক দিলো এই দুই জনকে তাদের কাজের জন্য সামান্য কিছু পারিশ্রমিক দিয়ে ও সকল অংশগ্রহণকারীকে সাধারণ খাবার বা নাস্তা সরবরাহ করেও লাইব্রেরির জন্য কিছু ফান্ডও কালেকশনে করা যেতে পারে।
আধুনিক পাঠাগার সমাজের মস্তিষ্কর মত কাজ করে। সমাজের মধ্যে বই পড়ার পাঠকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও এর মাধ্যমে উন্নত শিক্ষিত ও আলোকিত মানুষের সমাজ গঠন পাঠাগারের অন্যতম উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কুইজ প্রতিযোগিতা সমাজের মানুষের মধ্যে জ্ঞানের ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনার যদি কোন পাঠাগার থাকে তবে তার প্রচার ও প্রসারে ত্রৈমাসিক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পারেন যাতে আগ্রহী অংশগ্রহণকারীগণ রেজিস্ট্রেশন করবেন ও নির্ধারিত দিনে অনেকের উপস্থিতিতে সেই কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এক ঘণ্টা কিংবা ৪৫ মিনিটের কুইজ শেষে বিজয়ী ঘোষণা হবে বা বিজয়ী দল ঘোষণা করা হবে। পুরষ্কার বিতরণে এলাকার গণ্য মান্যবর অংশ নিতে পারেন। বিজয়ী দলের প্রত্যেককে একই পুরষ্কার ও সর্বচ্চ উত্তর দাতাকে বিশেষ পুরষ্কার আগে থেকে ঘোষণা করা থাকলে তা অংশগ্রহনেচ্ছুদের মাঝে বিশেষ উৎসাহ যোগাবে।
অনেক আগে বিটিভিতে ফজলেলো হানীর (যে কিনা সাইকেল নিয়ে বিশ্ব ভ্রমণে বের হয়েছিল বলে শুনেছিলাম) ”যদি কিছু মনে না করেন” ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে “কোয়েনচেন দেহি” নামে কুইজের একটা পর্ব ছিল, যাতে হানিফ সংকেত প্রথম মিডিয়াতে জনপ্রিয়তা পায়, পরে সেই হানিফ সংকেত আবদুল্লাহ আবুসাইদ (বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র) এর প্রস্তাবিত “ঈদ আনন্দ মেলা”ও পরে ইত্যাদি নিয়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে আমাদের দেশে। সেই ”কোয়েনচেন দেহি”’র অনুপ্রেরণায় কতগুলো কুইজ আমি গত কয়েক মাস আগে নিজে থেকেই তৈরি করে রেখেছি। দুটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিচালনাও করেছি।
উপরোক্ত কুইজ কম্পিটিশনের ধারণার ভিত্তিতে আমি ২৫০টি কুইজের একটি সেট তৈরি করেছি যা কোন বিসিএস গাইড কিংবা সাধারণ জ্ঞানের বই থেকে নেয়া হয় নি বরং সাম্প্রতিক বিশ্ব ও জ্ঞানের ধারণার আলোকে যা সাধারণ সকলের জানা উচিত তার ভিত্তিতে প্রণীত হয়েছে। যে পদ্ধতিতে কুইজ প্রতিযোগিতাটি পরিচালনার প্রস্তাব করতে চাই তা হলো, কুইজগুলো কুপন আকারে একটা ঝুড়িতে লটারি আকারে থাকবে। অংশগ্রহণকারীদের দুটো দলে ভাগ করে কিংবা না করে ২০০টা কুইজের যে কোন টা যেটা যে দলের বা যার ভাগ্যে পড়ে তাকে তা প্রশ্ন করা হবে, সেই দল বা সে উত্তর দিতে না পারলে বিপক্ষ দলকে অফার করা হবে, না পারলে উত্তর বলে দিয়ে পরবর্তী কুইজে যাওয়া হবে। এভাবে যে দল বা যে ব্যক্তি বেশি পয়েন্ট পাবে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রশ্ন করে কম সময় দেয়া হবে উত্তর দেয়ার জন্য, অনেকটা র্যাপিড ফায়ার রাউন্ডের মত। বয়স গ্রুপঃ ১৫ থেকে ৫২ বছর বয়সীদের এর জন্য করা যেতে পারে । সাধারণ জ্ঞানের যে সকল অঞ্চল থেকে প্রশ্ন গুলো করা হয়েছে তা হলোঃ বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য, গণিত, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ভূগোল, কম্পিউটার বা আইসিটি, দেশীয় রাজনীতি, এস্ট্রোনমি বা কসমোলজি, পদার্থ বিজ্ঞান, সমাজ বিজ্ঞান, কনভেনশনাল ব্যাংকিং ও ইসলামী ব্যাংকিং।
আগ্রহী কোন পাঠাগার কিংবা সংস্থাকে আমার সাথে যোগাযোগের মাধ্যম বলে রাখছি।
মোহাম্মদ মোস্তফা সার্জিল
সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার
সোনালী ব্যাংক পিএলসি
ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো
ওয়েজ আর্নার্স কর্পোরেট শাখা,
৬২ দিলকুশা, ঢাকা-১০০০
ফোনঃ 01911322544
No comments:
Post a Comment