Tuesday, December 5, 2023

রাজনৈতিক মন্তব্য প্রকাশে অহেতুক ভীতি

  

আমি শৈশবে লিবিয়ার ইজিপ্ট সীমান্তবর্তী পোর্ট সিটি তবরুখে পিতামাতার সহিত তিন বৎসর কাল বসবাস করিয়াছিলাম। দেশটিতে গাদ্দাফির এক নায়কতন্ত্র সবুজ সমাজ তন্ত্র ছদ্মনামে পরিচালিত হইত। ওই দেশে প্রকাশ্যে গাদ্দাফির নাম লইতে সর্ব সাধার অত্যন্ত ভয় পাইত। যতদূর বুঝি ইরাকে সাদ্দামের এক নায়ক তন্ত্রও বোধ হয় একই রকম ছিল। যে সব দেশে এক নায়ক তন্ত্র সে সব দেশে সরকার প্রধানের নাম কিংবা প্রচন্ড প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম নিতে বা তাকে নিয়ে মন্তব্য করার ভীতি থাকাটা স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষদিগের মাঝে সেই রূপ ভীতি থাকাটা কোন বিচারে যৌক্তিক তা আমার বোধগম্য হইতেছে না। নির্বাচন আসন্ন, দেশ ও জাতি একটি বৃহৎ পট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাইবে যেখানে আপামর সকল নাগরিকের মতামত গোপন ব্যালট পেপারে ভোটের মাধ্যমে নেয়া হইবে। দেশের একাদশ তম সংসদ নির্বাচনে ৩০০ টি সিটে ভোট গ্রহণ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা উপস্থিত, এমতাবস্থায় দেশের শিক্ষিত সমাজ ভীত হইয়া কোন রূপ মন্তব্য করিতে ভয় পাইতেছে, এর চেয়ে হাস্যকর বিষয় আর কি বা হইতে পারে। আমি যদি অযথা কিংবা পক্ষপাত দুষ্ট মন্তব্য করিয়া কোন অসৎ উদ্দেশ্যে অনলাইন গণ মাধ্যমে প্রচারণা চালাইতাম তবে তা সামাজিক আইনে কিংবা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের নিকট বিব্রতকর লাগিতে পারিত ও তাহারা সেই মত ব্যবস্থা নিতেই পারে কিন্তু যখন আমি আমার সাধারণ পর্যবেক্ষণ উপস্থাপন করিতেছি আর তা আমার পরিচিত মন্ডলে মন্তব্য ভাগাভাগি করিয়া নেয়ার উদ্দেশ্যে শেয়ার করিতেছি তখন সেই সোশ্যাল মিডিয়ার অনেকে ভীত হইয়া তার প্রতিবাদ করিতেছেন আমার দৃষ্টিতে ইহাই তাহাদের অহেতুক ভীতি। 

আমার লেখা রাজনৈতিক প্রবন্ধ পড়িয়া আমরা এক সময়কার সহপাঠী ও বন্ধু যিনি বর্তমানে সপরিবারে অস্ট্রেলিয়াতে বসবাস রত, তিনি ফেইস বুকের ম্যাসেঞ্জারে আমার সহিত রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়ে বাক্যালাপ করিলেন, উভয়ের মধ্যে বেশ কিছু বিষয়ে মতৈক্যও হইলো তাহার কিছুক্ষণ পরে দেখিলাম তিনি তাহার মন্তব্য সমূহ মুছিয়া দিয়াছেন। আমাদের মন্তব্য কিংবা মতৈক্য সমূহ কোনটিই বিতর্কিত কিংবা মারাত্মক রকম ঝুঁকি সম্পন্ন বক্তব্য বা মন্তব্য ছিল না। চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনের বিচারে তাহা তেমন কোন প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতাও রাখে না। তাহার পরও কেন তিনি তাহার সকল মন্তব্য মুছিয়া দিলেন তা বিস্ময়কর বটে। অনুরূপ ভাবে আমার কর্মস্থলের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে আমি আমার কিছু রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করিয়াছিলাম তাহাতে আমাদের এক স্যার অতি সাবধানে জানাইয়া দিলেন গ্রুপটি রাজনৈতিক আলাপের জন্য করা হয় নাই বরং ব্যাংকিং বিষয়াদির ব্যাপারে আমাদের বক্তব্য পেশ করা উচিত। তাহার বক্তব্যর সারমর্ম বুঝিয়া আমি আমার মন্তব্য সরায়ে নিয়েছিলাম গ্রুপ হইতে। অথচ পরবর্তী দিনই আমার অপর এক কলিগ তাহা পড়িয়াছে ও উক্ত বক্তব্যর উচ্ছসিত প্রসংশা করিয়াছিল।

https://www.thedailystar.net/op-ed/politics/political-violence-threat-national-security-2383

দেশে যখন রাজনৈতিক ক্রান্তিকাল উপস্থিত হইয়াছে তখন শিক্ষিত ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহিলা গণ গৃহ বন্দি হইয়া পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করিতেছেন আর সমাজের জটিল-কুটিল লোকদিগের হই চই ও নাশকতা অবলোকন করিতেছেন। সমাজের নিম্নশ্রেণীর লোকদিগের খাদ্য কিনিবার আর বাসস্থানের ভাড়া জোড়ার করিতে নাভিশ্বাস উঠিয়া গিয়াছে তাহতে কাহারো নজর নাই। উচ্চ বিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর অধিকাংশই সুবিধাবাদী বিধায় কেহই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ কিংবা হস্তক্ষেপ করিতে চাহেন না, ভিত হইয়া কেবল সুযোগ সুবিধা খুঁজিয়া বেড়ান। এহেন হীন মানসিকতার জাতি পৃথিবীতে আদিকালে ছিল, বঙ্গ দেশীয়রা তাহারি ঐতিহ্য বর্তমানেও বহাল রাখিয়াছেন দেখা যাইতেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষ কেন সোশাল মিডিয়াতে তাহাদের মতামত মুক্ত ভাবে প্রকাশ করিতে পারিবেন না তাহা বোধগম্য নয় আমার কাছে। আমার অস্ট্রেলিয়ার বন্ধুবর বলিতেছিলেন তাহাদের ওখানে যখন নির্বাচন হয় তখন তেমন কোন হট্টগোল হইতে দেখা যায় না এবং তারা নির্বিবাদে এমনকি রাষ্ট্রপ্রধান সম্পর্কেও মন্তব্য করার সাহস রাখে। আমাদের দেশের সরকার সাইবার নিরাপত্তার নামে একটি আইন পুনর্গঠন করিয়াছেন ও তাহাতে যাতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দুরভিসন্ধিমূলক প্রচারণা চালাইতে না পারেন তাহার উদ্দেশ্যে কিছু বিষয় তাহাদের নিয়ন্ত্রণে রাখিয়াছেন। তাই বলিয়া জনসাধারণ তাহাদের নিরপেক্ষ মতামত প্রকাশে ভয় পাইবেন কেন? দেশটা তো রাজা কর্তৃক শাসিত নয়, গণপ্রজাতন্ত্রী, তাহা হইলে এহেন মানুষিকতা সৃষ্টি হইবে কেন? আমার যতটুকু বুদ্ধিতে কুলায় তাহাতে বুঝিয়াছি বেশির ভাগ মানুষ এদেশে সুবিধা ভোগী তাহারা অযথা ঝামেলায় জড়াইতে চায় না। দেশের সংবিধান, রাজনীতি, সংসদীয় আইন কি হইলো না হইলো তাহা নিয়া তাহারা ক্ষণকাল বিতর্ক করিবে ঠিকই কিন্তু প্রকাশ্যে কিংবা গন মধ্যমে কোন মতামত দিবে না, পাছে যদি তাহার শান্তি নষ্ট হয় এই ভয়ে। এই সুবিধাবাদী লোকগুলোর কারণেই রাজনৈতিক অঙ্গনে অধিকাংশ দুষ্ট ও স্বার্থান্বেষী লোকজনের আধিক্য দেখা যায়। ভাল লোকেরা মাঠ ছাড়িয়া দিলে তাহাতে খারাপ লোকেরা তো দখল করিয়া লইবেই। ভদ্র ও শিক্ষিত সমাজ কথায় কথায় রাজনৈতিকদের দুষে, তাদের কথা বার্তা নিয়ে হাসি তামাসা করে অথচ তার মতামত সর্বসমক্ষে প্রকাশে ভয় পায়। এই ভীতি এক প্রকার কাপুরুষতার লক্ষণ তা কি তাহারা বুঝেন না? কখন আমরা দেখিব যখন শিক্ষিত লোকেরা রাজনৈতিক অঙ্গন কাপিয়ে তাদের বক্তব্য পেশ করবেন? কখন সেই সময় আসিবে যখন এই সকল মানুষে তাদের সন্তানদিগকে রাজনীতি থেকে দুরে থাকতে বলিবে না। রাজনীতি তো সকল মানুষকে প্রভাবিত করে তা সে চা বিক্রেতা হউক কিংবা কোন ব্যাংকের কর্ণধার। রাজনীতি নিম্নবিত্ত হতে উচ্চ বিত্ত সকলের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে তাই যদি হইয়া থকে তবে কেন ভদ্র, শিক্ষিত ও ভালো মানুষগুলো ইহা হইতে দুরে সরিয়া থাকিতে চাহিতেছেন?

বেশ কয়েক বৎসর পূর্বে কে একজন বলিয়াছিলেন দেশে রাজনৈতিক ভাবে একটি মাত্র দলই ছিল এবং আছে আর সেই দলটি যখন ভুল করিয়া ফেলে তখন তার বিরুদ্ধে বিপরীত একটি শক্তি দাড়িয়ে যায় যাহাকে বিপরীত একটি রাজনৈতিক দলের মত মনে হয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যখন দেখা যাইতেছে রাজনৈতিক টানা পোড়নে দেশের নিরপেক্ষ, শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত সমাজ নিশ্চুপ দর্শকের ভূমিকা পালন করিতেছে যাহাদের একটি বিশাল অংশকে ফ্লোটিং ভোটারও বলা হইয়া থাকে, তাহাতে ইহা সহজেই অনুমান করা যায় যে, ওই একটি মাত্র দল বিশেষ কোন ভুল না করায় বিরোধী শক্তি সৃষ্টি হয় নাই। যাহার কারণে বিরোধীরা জন সমর্থও পাইতেছেন না বলিয়া মনে হইতেছে । বিরুদ্ধবাদীদের বহু নেতা কর্মী কারাবন্দী হওয়া সত্ত্বেও তাহাদের সমর্থকদের রাস্তায় নামিতে কিংবা উচ্চস্বরে প্রতিবাদ করিতে দেখা যাইতেছে না। দেশের সংবাদ মাধ্যম স্বাধীন ভাবে সবিস্তারে সকল সংবাদ প্রকাশ করিতে পারিতেছে ও জনসাধারণের মাঝেও তেমন কোন বিচলিত ভাব পরিলক্ষিত হইতেছে না। অতীত কালে এই বঙ্গে মাৎস্যন্যায় অবস্থায় গোপাল ক্ষমতায় আরোহণ করিয়াছিলেন। সেই ঐতিহ্য এতকাল বহন করিলেও জাতী ধীর গতিতে সুশৃঙ্খলার দিকে ধাবিত হইতেছে বলিয়া মনে হইতেছে। যাহা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বটে।

এ প্রসঙ্গে আমার ফ্রেশমেন অর্থাৎ ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষ কলিন একটি স্মৃতি মনে পরিয়া গেল। ১৯৯১ সালে আমি তখন সদ্য আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে ভর্তি হইয়াছি। সেখানে নতুন কিছু বন্ধু পাইলাম, কঙ্কণ, দিয়াব, সুমন এরকম আরো অনেকে। আমি কঙ্কণ, দিয়াব, সুমন এর সাথে তৎকালীন চিফ মার্শাল ল এডমিনিস্ট্রেটর হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের বাড়ির সামনে দিয়া যাওয়ার সময় এক সেন্ট্রিকে উদ্দেশ্য করিয়া দিয়াব বলিতেছিল ইহারা মাত্র ষষ্ঠ শ্রেণী পাশ করিয়া এই কর্মে যোগদান করিয়াছেন। তার কণ্ঠে তাচ্ছিল্যের ভাব ছিল তাহা ওই সেন্ট্রি শুনিয়া ফেলেন। তো গন্তব্য হইতে ফেরার পথে সেই সেন্ট্রি আমাকে বাদ দিয়া বাকি তিন জনকে ডাকিয়া কোথায় যেন লইয়া গেল। আমি একা কলেজে ফিরিয়া আসিলাম, পরে শুনিয়াছ ওদের তিন জনকে এক আর্মি অফিসে নিয়া গিয়া ইচ্ছা মত অপমান করা হইয়াছিল। সেই দিয়াব এখন আর্মি অফিসার, ইতোমধ্যে হয়তো লেফটেনেন্ট কর্নেল হইয়া গেছে। চিফ মার্শাল ল এডমিনিস্ট্রেটর একটি এক নায়কোচিত অবস্থা। ওই সময় রাজনৈতিক মতামত প্রকাশে সাবধান হওয়াটা স্বাভাবিক কিন্তু যখন দেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলমান আছে তাকে সন্দেহ করিয়া কেন সাধারণ মানুষ ভীত হইয়া তাহদের মত প্রকাশ করিতে পারিবেন না তাহা আমার বোধগম্য নয়।

এমন এক সময় অতি সত্তর আসা করা যায় যখন দেশের অধিকাংশ মানুষ শিক্ষিত ও ভদ্র হইয়া যাইবে। তখন তাহারা সংবিধানকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করিয়া ও নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখিয়া ভোট গ্রহণকে সাবলীল করিবে। তাহারা তখন প্রত্যেক পর্যায় পরিবর্তনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধুয়া তুলিয়া আন্দোলন করিবার প্রয়াস পাইবে না। দেশ ও জাতির মঙ্গল সাধনে তাহার বুঝিতে পারিবেন যে নিয়ম শৃঙ্খলা ব্যতিরেকে বারং বার সংবিধান পরিবর্তন কাহারো জন্যই মঙ্গল বহিয়া আনিবে না। প্রতি পঞ্চম বার্ষিকীতে সংবিধানে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী নির্বাচন করিয়াই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করিতে হইবে। এই বোধ তখন সকল মানুষের বোধগম্য হইবে ও তাহারা সেই মত চলিবে। আমার বিশ্বাস সেই দিন অচিরেই বাস্তবে পরিণত হইবে। দিন দিন ভদ্র ও শিক্ষিত সম্প্রদায়ের সংখ্যা বাড়িতেছে ইহাই এক সুসংবাদ বটে।

ভিডিওটি দেখতে অসুবিধা হলে লেখাটাতে মানে এখানে ক্লিক করুন বা টেপ করুন

এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ১০নভেম্বর২০২৩> ২২নভেম্বর২০২৩> ৩ডিসেম্বর২০২৩> ৬ডিসেম্বর২০২৩>

আমার কাছে অনেকের প্রশ্ন
আপনি এত সময় কই পান? এত বড় বড় লেখা কখন লিখেন?

উত্তরঃ আমি একটা লেখা শুরু করার পর বিভিন্ন সময় তাতে আমার চিন্তা গুলো যোগ করে যখন দেখি তা অন্যর সাথে শেয়ার করার উপযুক্ত হয়েছে তখন তা ব্লগে প্রকাশ করে মতামত আশা করি। আমার লেখার উদ্দেশ্য মূলত অন্যর সাথে আমার চিন্তা ভাবনা গুলো শেয়ার করা। অনেকের প্রশ্ন লেখার জন্য এত সময় আমি পাই কই। একটু একটু করে লিখি অনেক দিন ধরে, কোন কোন লেখা বছর গড়ায়ে যায়। তাই আমার প্রতিটি লেখার নিচে কবে কবে লিখেছি তার একটা উন্নয়ন ও সম্পাদনা ইতিহাস যোগ করা থাকে। আমার এক বন্ধুর জানার আগ্রহে বলেছিলাম, কেউ আছে যারা দুইটা বল নিয়ে জাগল করতে পারে না আবার কেউ কেউ আছে যারা ৪, ৫ টা বল নিয়ে দুই হাতে জাগল করতে পারে। এটা তার বা যার যার দক্ষতার বিষয়। তাছাড়া বিন্দু বিন্দু করেই তো সিন্ধু হয়। অল্প অল্প করে লিখি একসময় তা অনেক হয়ে যায়, তখন সম্পাদনা করে কাট ছাট করে দরকারি কথা গুলো রেখে বাকি গুলো বাদ দিয়ে দেই। আজকের জমানায় এত এত সফটওয়ার আর অনলাইন টুল চলে আসছে যে আমরা অল্প সময়ে অনেক কাজ ও অনেকের সাথে যোগাযোগ করতে পারি তবে সেটা তখনই পারি যখন আমরা এই উন্নত টুলস গুলো সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে শিখি। সিস্টেমেটিক ভাবে কাজ করলে প্রচুর কাজ ও জটিল কাজ গুলো সহজে করা যায়। তাই যারা যত বেশি টুল ব্যবহার করতে শিখেছে তারা তত বেশি অন্যর চেয়ে বেশি কাজ করতে পারছে। আমি টুলস গুলো ব্যবহার করে অনেক কাজ দ্রুত করে ফেলতে শিখেছি তাই অন্য কারো কাছে মনে হতে পারে আমি হাইপার একটিভিটি শো করছি, প্রকৃত পক্ষে তা নয়, বরং ডিসিপ্লিন ও মেথড ব্যবহার করে আমি প্রচুর কাজ করছি স্বচ্ছন্দে ও সাবলীল ভাবেই। অন্যরা পারছে কি না সেটা আমার ধর্তব্যের বিষয় না।

আমি আমার লেখায় কম্পিউটার ব্যবহার করি আর আমার চিন্তাভাবনা গুলো লিখে রাখি বিভিন্ন সময়। আমার টাইপ স্পিড বাংলায় মিনিটে ৫০ শব্দ আর ইংরেজিতে ৫৫ শব্দ হওয়ায় প্রচুর কথা লিখতে পারি। টাইপ স্পিড বৃদ্ধির জন্য আমি মেভিস বেকন টিচার্স টাইপিং ভার্শন ফোর এর কাছে আমি ঋণী। বানান ভুল সংশোধনের জন্য আমি অভ্রর স্পেল চেকারের কাছে ঋণী। মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর ট্রেক চেঞ্জ ফাংশন আমাকে আমার লেখা সম্পাদনা করতে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য করে। একটা হাইলি কাস্টমাইজড কম্পিউটার ফাইল আমার লেখাগুলো সংরক্ষণ করে যেটাতে আমি ন্যাভিগেশন টুল ব্যবহার করে যখন যে লেখাটাতে আমার কথা সংযুক্ত করতে চাই তা করতে পারি। এ সব গুলো টুল ব্যবহার করে আমার মনের কথা আপনার কাছে পৌঁছে দেই এই প্রত্যাশায় যে আপনি তা পড়ে আপনার মূল্যবান মতামত দিয়ে আমাকে সমৃদ্ধ করবেন। কিন্তু মানুষ পড়ে (কতগুলো হিট হলো তা আমি দেখতে পাই ব্লগের কন্ট্রোল প্যানেলে) কিন্তু কোন মন্তব্য করে না দেখে প্রায়শই হতাশ হই। বেশির ভাগ পাঠকই হয়তো এত বড় লেখা দেখে সুইপ ডাউন করে চোখ বুলায়ে যায়। পড়লে তো সে মন্তব্য করতো কিন্তু বাঙ্গালীদের মধ্যে ভারচুয়াল রিয়ালিটির কনসেপ্টটা এখনও পুরোপুরি বোধগম্য হয়নি কিংবা তারা সহজে মন্তব্য করতে চায় না, যা আমার বিশ্বের অন্যান্য অংশে দেখি না। ওখানে প্রায়শই তাদের পোস্টে মিলিয়ন মিলিয়ন রিএকশন আসতে দেখা যায়।

আপনি রাজনৈতিক ভাবে কোন মতাদর্শের অনুসারী?

উত্তরঃ আমাদের সংবিধানের মূল নীতি মতে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। ধর্মীয় গোঁড়ামির মধ্যে আমি নাই। এই কিছুদিন আগেও ছিলাম কিন্তু এখন এর চরম বিরোধিতা করি। প্রতিটি ধর্মের ছাতার  নিচেই অন্ধকার আর ঝর বৃষ্টির ভয়ে অনেকেই সেই ছাতা মাথায় দিয়ে আছে, আমি মনে করি ছাতা সরালেই তারা আলোকিত আকাশটা দেখতে পাবে। আমি ছাত্রাবস্থায় কিংবা চাকুরী জীবনে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না তবে ২০০২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত মুসলিম প্রফেশনালস ফোরাম এর সাথে যুক্ত ছিলাম। ওই সময় ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাই। ২০১৬ তে মায়ের মৃত্যুর পর ধর্মের উপর সকল আস্থা হারায়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও পরবর্তীতে প্রথা বিরুদ্ধ মানুষিকতায় চলে আসি। দেশের কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই, কখন ছিলও না। যারা ভালো কাজ করে ও সঠিক পথে চলে আমি তাদের সমর্থন করি আমার লেখার মাধ্যমে তা প্রকাশও করি।

 

No comments:

Post a Comment