Saturday, November 11, 2023

সলিপসিজম , বস্তুবাদ আর বাস্তববাদ

 

ধর্মের অন্তরালে বিশ্বাস ভিত্তিক চেতনায় শ্রেণি সংগ্রামের আভাস – মুহাম্মদ তানিম নওশাদ এর লেখা বইয়ের পৃষ্ঠা ৩৩ এ বলেছেন “সলিপসিজমের (Solipsism) বাংলা করা হয়েছে আত্মজ্ঞানবাদ। এই তত্ত্বের মতে, ব্যক্তি শুধু তার নিজের মনই কেবল অস্তিত্বশীল তা জানতে পারে। অন্যসব কিছুর অস্তিত্ব সম্পর্কে সে নিশ্চিত নয়। ফলে স্বভাবতই পৃথিবীকে বোঝার ক্ষেত্রে তার নিজের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।” আত্মজ্ঞানবাদের এই কথা থেকে অনেক আগে দেখা ডকুমেন্টারি ”দ্যা সিক্রেট ইন দ্যা মেটার” এর কথা মনে পরে গেল, ওখানে দেখানো হয়েছে আমাদের মথায় চোখ দুটো ছাড়া আলো প্রবেশের আর কোন পথ নাই, তাও আলো রেটিনায় পড়ে তা নিউরো সংকেতে আমাদের অপটিক্যাল নার্ভ দিয়ে মস্তিষ্কের নার্ভাস সিস্টেমে পৌছায় যেখানে তার একটা চিত্র ফুটে তুলানর নিউরো প্রক্রিয়াই আমাদের বাস্তবতার চিত্র। আমরা একটা পাখিকে গান গাইতে শুনি আর তার অবস্থান গাছের ডালে তা চোখ দিয়ে দেখি কিন্তু এই দুয়ের মধ্যে সংযোগ সাধন মানে পাখির গানটা যে তার গলা থেকেই আসছে এটা আমরা কি ভাবে  বুঝতে পারি তাও কিন্তু এক রহস্য বটে। দুটো চোখ আর দুটো কান একসাথে কাজ না করলে আমরা মনে হয় এই সংযোগ টা ধরতে পারতাম না। দুটো চোখের কারণে আমরা দূরত্বের ব্যবধান বা ডেপ্থ অফ ফিল্ড ধরতে পারি এই ত্রিমাত্রিক বিশ্বে। আমাদের পাঁচটা ইন্দ্রিয় যা দিয়ে আমরা বাস্তবতাকে অনুভবে নিয়ে আসি তা সত্য সত্যই কি বাস্তবে অস্তিত্বশীল নাকি তা কেবল আমার মনের কল্পনা মাত্র এই দ্বন্দ্ব খন্ডন করার মত কোন বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ আমাদের কাছে নাই। ঠিক এই বিষয়বস্তুর উপর আরেকটি ডকুমেন্টারিতে প্রশ্ন করা হয় যদি তাই হয় আর মানুষের মনকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তবে কি হতে পারে। ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ তে দেখা The minds of Men (2018)  ডকুমেন্টারিতে বলা হয়েছিল এভাবে  “if both the past and the external world exist only in the mind and if the mind itself is controllable – What then?” George Orwell, 1984. আমার দেখা অদ্ভুত সুন্দর চেহারার এক নারী যে সত্যি সত্যি একটি আলাদা মানুষ তা প্রমাণ করার জন্য আমার কাছে বাস্তবিক অর্থে কোন দালিলিক প্রমাণ নাই। আমি কেন অন্য যাদেরকে আমি বাস্তবে অস্তিত্বশীল মনে করছি তারা যদি আমার মতই মানুষ হয়ে থাকে তবে তাদের কাছেও কোন যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা নাই যে আমি বাস্তবতায় তার সাপেক্ষে অস্তিত্বশীল ও তার মনের কল্পনা নই। এ কারণেই অস্তিত্ব বলতে আমরা যা বুঝি তা নিয়ে চিরন্তন দ্বার্থকতা রয়েছে আর তা মানুষের আদি চিন্তা লগ্ন থেকেই। আমার লেখা “অস্তিত্ব বলতে আমরা যা বুঝি” আর্টিকেল টাতেও আমি বিস্তারিত এ বিষয়েই লিখেছি।  

সলিপসিজম নতুন কিছু নয়, যারা বলে মন সবকিছুর সৃষ্টি করেছে মানে হলো যা কিছু দেখি তা মনের কল্পনা মাত্র তাদের সাথে একমত হওয়া ছাড়া গতি না থাকলেও মন মানে না, মনে হয় তা হতে পারে না কারণ আমার মন বিরক্তিকর বাস্তবতার অভিজ্ঞতা লাভ করেছে যে পরিস্থিতিকে সে বদলাতে বা তৎক্ষণাৎ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নি। আমার মন নিশ্চয়ই সেই বিরক্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি। বাস্তবতা যা আমরা অনুভব করি তার মন নিরপেক্ষ ভাবে অস্তিত্বশীল কারণ অন্য একাধিক মন যা আমার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে তারাও সেই বাস্তবতার হুবহু বর্ণনা করে। সবার মন কি তবে একই প্রকৃতির? না হয়ে উপায় কি, সকল প্রাকৃতিক প্রভাবকে সব মন একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। তাই সকল বিভ্রান্তির অবসান ঘটায়ে এটা মেনে নেয়া সহজ যে বস্তু মন নিরপেক্ষভাবেই অস্তিত্বশীল আর আমরা আমাদের ইন্দ্রিয় দিয়ে সেই বাস্তবতাকে অনুভব করি ও তার অর্থ নির্ধারণ করি মাত্র। ফেইসবুকে কেউ আমার পোস্টে লাইক দিলে কিংবা কেউ আমার লেখা পড়ে ভালো মন্তব্য করলে কিংবা কেউ কারো প্রশংসা করলে সে আনন্দ অনুভব করে কারণ তার মন অন্য মনের কাছে তার প্রতিবিম্ব আশা করে, অন্যের মনকে সে আয়নার মত মনে করে তাতে নিজের ছবি দেখতে চায়। অন্যের মন্তব্য তাই তার নিজেকে মূল্যায়নের কাজে আসে। যদিও এটা আমার নিজের ধারনা তবে তা যুক্তিযুক্ত মনে হয় আমার কাছে। সকল প্রাণীর মনও একই প্রকৃতিরই হওয়ার কথা, কারণ বাস্তবতার প্রভাবকে সকল প্রাণী একই রকম অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। তারা দুখ, আনন্দ, বেদনা, বিরক্তি সকল একই ভাবে প্রকাশ করে তাই সকল প্রাণীর মন একই প্রকৃতির মনে করাটাই স্বাভাবিক। এই বাস্তবতা যদি আমার কল্পনা মাত্র হতো তা হলে তা নিয়ন্ত্রণের উপায়ও আমার জানা থাকতো বা থাকতে পারতো, ধরে নেয়া যাক কোন না কোন ভাবে আমি এই প্রকৃতিতে আবির্ভূত হলাম, মানে আমার জ্ঞান চক্ষু উন্মোচিত হলো। সাধারণত বয়স ৭ বা ৮ না হলে কারো পক্ষেই বাস্তবতার প্রভাবক গুলো সনাক্ত করা সম্ভব হয় না যা স্মৃতিতে সে সংরক্ষণ করে থাকে। তার অবস্থাটা হবে রবীন্দ্রনাথ যেমনটা বলেছেন তার কণিকার মোহের আশঙ্কা কবিতায়,


“শিশু পুষ্প আঁখি মেলি হেরিল এ ধরা
শ্যামল, সুন্দর, স্নিগ্ধ, গীতগন্ধভরা--
বিশ্বজগতেরে ডাকি কহিল, হে প্রিয়,
আমি যত কাল থাকি তুমিও থাকিয়ো।”

যার মানে হলো জ্ঞান হওয়ার পরপরই সে শ্যামল, সুন্দর, স্নিগ্ধ, গীতগন্ধভরা বিশ্বজগতকে অনুভব করতে পারে আর তার মধ্যেই তাকে টিকে থাকতে হবে তা সে বুঝতে পারে। এখনকার যুগে আমরা জানি মন কোন বিচ্ছিন্ন অলৌকিক উপাদান নয় যা অবিনশ্বর। মন নিউরন সমষ্টির ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় এক সচল অর্থবহ প্রক্রিয়া মাত্র। অবিনশ্বর আত্মার ধারনা তাই এখানে শেষ হয়ে যায়। যার সাথে অলৌকিকতার গাল গল্পেরও সমাপ্তি এখানেই। সলিপসিজম থেকেই ভাববাদের উৎপত্তি আর তার সমাপ্তি বিজ্ঞানের আবিষ্কার গুলোর মধ্যে দিয়ে। যদিও সেই দ্বন্দ্বটা খন্ডানো যায়নি কি ভাবে বুঝবো আমার অনুভূত জগতে যা কিছু দেখছি তা আমার মনের সামষ্টিক কল্পনা নয়। আমার পাঁচটা মাত্র ইন্দ্রিয় তাই কাউকে যদি একটা যন্ত্রে ভরে বাস্তবতার অনুভবের সব উপাদান গুলো দেয়া হয় তবে সে ভাববে সে বাস্তবে চলাফেরা করছে। হলিউডের ম্যাট্রিক্স মুভিটা এই থিমের উপরই নির্মিত। মানুষে মানুষে বিস্তর যোগাযোগ ও তদকর্তৃক নির্মিত শিল্প সাহিত্য জ্ঞান বিজ্ঞানই আজ প্রমাণ করেছে যে ভাববাদ বাস্তবিকই একটা মায়ার জগত আর আমরা বস্তুজগতে অত্যন্ত গতিময়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।

জার্মান ভাবাদর্শ –কার্ল মার্কস, ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস, অনুবাদ গৌতম দাস (আগামী প্রকাশনী) পৃষ্ঠাঃ ১৮ -১৯ এ লেখা আছে ”চিন্তা মাত্রই বিদ্যমান মত ও মতাদর্শের পর্যালোচনা। যে, চিন্তা নিজের পর্যালোচনা নিজে করতে সক্ষম চিন্তার বিকাশ এই ক্ষেত্রে রুদ্ধ করা কঠিন। এখানে চিন্তা ও জগৎ - কিম্বা জগৎ ও জাগতিক মানুষের চিন্তা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা কিছু নয়। দুনিয়াকে দার্শনিকরা খালি নানান দিক থেকে ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু কাজ হচ্ছে বদলে দেওয়া। দর্শন নিজে যে চিন্তা করে তার ভিত্তি বিশুদ্ধ চিন্তা না। বিশেষ দেশ-কাল-পাত্রে যে বিশেষ ধরনের চিন্তার আবির্ভাব ঘটে দর্শন নিজে তা ব্যাখ্যা করতে পারে না। ব্যাখ্যা দেবার জন্য দরকার নতুন ধরনের চিন্তা।” এই নতুন ধরনের চিন্তা থেকেই তিনি মানুষ ও মানুষের শ্রম নিয়ে বস্তুবাদিক এক ভাবাদর্শ ব্যাখ্যা করেছেন। যে কোন বিচারে তার ব্যাখ্যাকৃত মতটি অনন্য ও গভীর চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। সমাজকে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন শ্রম এর শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে। মালিক শ্রমিক সম্পর্ক কিংবা শাসক ও শোষিতর সম্পর্কর মধ্য দিয়ে । তার ব্যাখ্যায় মানুষের মনের চাহিদার মূল্য মনে হয় ততটা গুরুত্ব পায় নাই।

বস্তুবাদ আর বাস্তববাদ এক নয়, ধর্মের অন্তরালে বিশ্বাস ভিত্তিক চেতনায় শ্রেণি সংগ্রামের আভাস – মুহাম্মদ তানিম নওশাদ এর লেখা বইয়ের পৃষ্ঠা ২৪ এ বলেছেন “বাস্তববাদ বস্তুগত জায়গা থেকে অপরের সাথে তার মোকাবিলার জায়গা নির্ধারণ করে। প্রবল প্রতাপশালী বেইনসাফের সাথে বস্তুগত জায়গা থেকে যুদ্ধ কারার কোন মানসিক সাহস তার থাকবে না। ফলে জগতের কোন আদর্শিক মতাদর্শ বা তার অনুগামী বাস্তববাদকে গ্রহণই করবে না। বাস্তববাদে কোন মূল্যবোধ নেই। তার লক্ষ্য জাগতিক স্বার্থ। প্রবল প্রতাপশালী প্রতিকূল শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইচ্ছাকে সে মতিভ্রম (Delusion) মনে করে।” আমি মনে করি যে সমাজে একটা ভারসাম্য আছে মানে শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে একটা ভালো সমঝোতা আছে সেখানে বাস্তববাদ ভালই কাজ করতে পারে। গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় বাস্তববাদ একটা স্বাভাবিক ঘটনা। প্রত্যেকেই তার স্বার্থের পিছনে ছুটে আর ভাববাদকেও তারা পাশে রাখে, ধর্মের নামে ঘরে আর মসজিদ মন্দির গির্জায়। কিন্তু কর্ম ক্ষেত্রে তারা পুরো দস্তুর বাস্তববাদী। এতে করে তারা ধর্মনিরপেক্ষ একটা নতুন ধরনের সমাজ গড়ে তুলে যেখানে পুঁজিবাদ, বস্তুবাদ আর ধর্মীয় ভাববাদের এক মহা মিশ্রণ করে যখন যেটা দরকার সেটা নিয়ে এক সুবিধাবাদী জীবন চালানোর ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। যেটাকে তাদের স্বরচিত গোঁজামিল ভাবাদর্শ নাম দেয়া যেতে পারে। ভিন্নভাবে বললে তা হলো মৌলিক সুবিধাবাদ এর এক চরম উদাহরণ।

আমি যখন সোনালী ব্যাংক হেড অফিসে ছিলাম ২০০৪ থেকে ২০১০, এই ছয় বছরে সোনালী ব্যাংক হেড অফিসের পুর ছয় তলার প্রচুর লোককে ইসলামের দাওয়াত করেছি। নিজে বিভিন্ন বই ফটোকপি করেছি বিতরণ করার জন্য। আনোয়ার আওলাকির লেকচার শুনে শুনে টাইপ করে বুক ফোল্ড প্রিন্ট করে বই এর আকার দিয়ে মানুষজনকে দিয়েছি পড়তে। তারা এখনও সেই সব কথা বলে। মুসলিম প্রফেশনালস এর সাঈদ ভাই যে পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন তাতে সোনালী ব্যাংকের বিজ্ঞাপন দেয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম আমি। এর পর যখন আমার প্রমোশন হলো আর ঢাকার বাইরে পোস্টিং দেয়ার জন্য নোট লেখা হলো, তখন জামাতের লোকজন গোপনে আমাকে মাদ্রাসা বোর্ডর শাখা বিএমইবি তে  পোস্টিং এর ব্যবস্থা করলো। আমি পরে বুয়েট শাখায় তিন মাস থেকে শ্যাওড়াপাড়া বাসার কাছে বেগম রোকেয়া সরণী শাখায় চলে যাই। ২০১৩ সালে  বেগম রোকেয়া সরণী শাখায় যাওয়ার পর পরই ৭ দিনের ইসলামী ব্যাংকিং এর উপর ট্রেনিং এ পাঠানো হয় আমাকে। ২০১৬ সালে আমি মিরপুর প্রিন্সিপাল অফিসে পোস্টিং পেলাম, ওটা নতুন ছিল, ওটাকে চালু করে দিলাম। ওখানে কম্পিউটার ইনচার্জ ছিলাম আর ২২ টা ব্রাঞ্চ এর তথ্য উপরের দপ্তরে পাঠানোর কাজ করতাম। তার পর যখন সোনালী ব্যাংকের এমডি মহোদয় ওবায়েদুল্লাহ আল মাসুদ স্যার  ইসলামী ব্যাংকের জন্য ভালো ও যোগ্য লোকজন খুঁজছিলেন তখন তিনিই বেছে বেছে চার জনকে সোনালী ব্যাংকের প্রথম ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডো যা ২০১০ সালে ফকিরাপুল ব্রাঞ্চে শুরু করা হয়েছিল এবং যা পরে ২০১৫ তে ওয়েজ আরনার কর্পোরেট শাখায় নিয়ে আসা হয় সেখানে পোস্টিং দিয়ে দিল। ওই চার জনের মধ্যে আমিও ছিলাম। এখন পর্যন্ত ওখানেই কাজ করছি। এই আমি আজ ইসলামের না পুর ধর্মীয় ভাবাদর্শের বিরুদ্ধে কথা বলছি। বলতে পারেন আমার মাথা নষ্ট হয়ে গেছে কিন্তু আমি তা মনে করি না। আমার লেখা গুলো পড়লেই কারণগুলো সবাই জানতে পারবেন।

মুসলিম প্রফেশনালস এর মাহবুবুর ভাইকে সেদিন বলেছিলাম আপনার সাথে বিতর্ক করতে ইচ্ছা করে না কারণ আপনি নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে কথা বলেন না। আপনার মাথায় থাকে ডেসটিনেশন মক্কা, আপনি দিল্লি থেকে মক্কা যাবেন আগেই ঠিক করে নেন। তাই তাল গাছটা আপনারই থেকে যায়। আমি দিল্লি থেকে পথ টা মক্কা গেছে না প্যারিস গেছে সেই পথ মাপি তাই দুজনের যুক্তিগুলো খাপ খায় না। পুর বিতর্কের ক্রাক্স পয়েন্ট (মূল বিন্দু) তো একটা দ্বন্দ্ব, হয় আপনি অদৃষ্টে বিশ্বাস করবেন না হয় আপনার মগজে যা কুলায় সেই বাস্তবতায় বিশ্বাস করবেন। আমি অদৃষ্টে বিশ্বাস করবো না সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাই বিতর্কের আর কিছু থাকে না। আপনার ইচ্ছা হয় তো আপনি অদৃষ্টে বিশ্বাস করেন আমার তাতে কিছু যায় আসে না। খামাখা সময় নষ্ট করে লাভ কি? আমি মনে করি আপনার চিন্তায় আগের ভাবনা গুলো নিরপেক্ষ করে, মানে নিউট্রালাইজ করে তার পর নিজেই পথ বেছে নেন। আপনি যেমন ভাবছেন, আমি মোটেই বিচলিত নই, আমার পথ আমি চিনে নিয়েছি।

২২, সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে আবদুল্লাহ ভাই আমার কথা শুনে বলেছিলেন আমার চিন্তার শিকড় নাই। তাই উনাকে বললাম আপনাদের চিন্তাধারা গত বাধা, ওই গত এর বাইরে যেতে পারেন বলে মনে হয় না। শিকড় বলতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন বুঝলাম না। আকিদাকে যদি শিকড় বলেন তবে তা আমার আছে, আপনাদের বিপরীতটা। কার কথায় না, সাঈদ ভাই, মজিদ ভাই, হানিফ ভাই এদের ব্যাখ্যা করা ইসলাম এর আকিদা আমার সেই সময় যুক্তিযুক্ত মনে হয়েছিল। কিন্তু তার পরবর্তীতে আরো পড়াশুনা ও গবেষণার পর তাদের ব্যাখ্যাগুলোর চেয়ে আর অধিকতর যুক্তিযুক্ত ব্যাখ্যা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। এখানে আপনার দেয়া শিকড় বিহীন তরুলতার উদাহারণ খাটে না। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির মতাদর্শ খাটে। আমার চিন্তার শিকড় আছে যা কারো উপর নির্ভর করে না। আমার চিন্তা ভাবনা মৌলিক ও ব্যক্তি নিরপেক্ষ। আপনারা বায়াস্ড মানে একপেশে অনিরপেক্ষ চিন্তা ভাবনার দোষে দুষ্ট তাই সত্যটা ধরতে পারছেন না। আমি কারো কথায় আবেগাপ্লুত হয়ে মুসলিম প্রফেশনাল ফোরামে যোগ দেই নাই। নিজেই খুঁজে নিয়েছিলাম, আবার এখন তা থেকে দুরে সরে গেছি। আর তাও নিজের চিন্তা ভাবনা থেকেই। আমার শিকড় পোক্ত ও গাছটাও মহিরূহ কোন লতান গাছ তরুলতা না। আপনি শিকড় বলতে কি বুঝাতে চেয়েছেন তা আরো স্পষ্ট করে বলেন তা হলে হয়তো আপনার চিন্তাটা আরো ভালো ভাবে ধরতে পারবো।

স্টিভেন স্কট গাবসার এর (অনুবাদঃ আবুল বাসার) অ লিটিল বুক অব স্ট্রিং থিওরির পৃষ্ঠা ৩৪ এর কয়েকটা লাইন দিয়ে লেখাটা শেষ করছি “অনিশ্চয়তা নীতি যা ধারণ করে, সেটা আসলে আমাদের জ্ঞানের ঘাটতি নয়, বরং অতি পারমাণবিক জগতের এক মৌলিক অস্পষ্টতা।” বইটির শেষে তিনি বলেছেন নিঃসন্দেহে স্ট্রিং তত্ত্ব এক অসমাপ্ত ক্যানভাস। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, এই শূন্যস্থান যখন পূরণ হবে, তখন পুরো চিত্রটি কি জগৎকে উন্মোচন করতে পারবে?

অনেক সময় নিয়ে একটু আধটু লিখি, অনেকদিন পর যখন লেখাটাকে প্রকাশযোগ্য মনে হয় তখন ব্লগে প্রকাশ করি। এভাবে প্রায় ৭০ টার মত লেখা ব্লগে আপলোড করা হয়ে গেছে। সবই আমার মনের কথা, অনেকের সাথে ভাগ করে নিতেই প্রকাশ করা, অন্য কোন উদ্দেশ্য থেকে না। কেউ সময় পেলে পড়বেন এই জন্যই ব্লগে প্রকাশ করা। পড়ে ভালো লাগলেই আমার আনন্দ আর কোন বিষয়ে আলোচনা বা ভিন্ন মত থাকলে বা আপনার সম্পূরক কোন কথা থাকলে তা জানালেও উপক্রিত হই।

এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ২২এপ্রিল২০২৩> ২১সেপ্টেম্বর২০২৩> ২০অক্টোবর২০২৩> ০৩নভেম্বর২০২৩> ১১নভেম্বর২০২৩>
 

No comments:

Post a Comment