কঠিন বাংলায় বলা হয় পরমত সহিষ্ণুতা তাই অনেকেই এটা বুঝেন বলে মনে হয় না। ভাষার বিবর্তন সহজে চোখে পরে। আগে সাধু ভাষায় বাংলা সাহিত্য রচনা করা হতো আর এখন সাধু ভাষায় কিছু লেখা হলে পাঠক সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। অন্যদিকে কথ্য ভাষা সাহিত্যর ভাষা হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত তার উপর আঞ্চলিক ভাষা গুলোও সাহিত্যে স্থান পাচ্ছে যেমন চিটাগাং এর “মেজবাইন্না গোস্ত হাইলে আইয়ুন” মানে হলো মেজবান এর গোস্ত খাইলে আসেন। আবার আঞ্চলিক ভাষার সংক্ষেপকরণও গ্রহণযোগ্য হচ্ছে যেমন “আই কিত্তাম” আমি কি করবো হয়ে গেল আই কিত্তাম। তিন তিন টা বাংলা শব্দ সংক্ষেপ করে আঞ্চলিক ভাষায় হয়ে গেল দুইটা শব্দ। সব কিছুরই যে বিবর্তন হচ্ছে তা স্পষ্ট দেখা যায় অথচ বিবর্তন বাদ এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কত বাদ প্রতিবাদ। মুসুল্লিদের ক্রমাগত মুসল্লিপনা বৃদ্ধিও যে একটা বিবর্তন তা তারা দেখেও দেখে না। তাদের কথাবার্তা মনোযোগ দিয়ে শুনলে মনে হতে পারে নতুন নতুন হাদিস আবিষ্কার হচ্ছে দিন কে দিন যা তাদের পুরাতন ক্রিড বা মূল বিশ্বাসকে বা বিশ্বাস গুলোকে ভেঙ্গে শতধা বিভক্ত করে দিচ্ছে সে বিষয়ে তারা উদাসীন। জামাতুল মুসলিমিন বা তবলিগ জামাতেও যে বিভক্তি বা রাজনীতি ঢুকতে পারে তা’ও আজ সত্য হয়ে দেখা গেল। যা হোক মুসল্লিদের মুসল্লিপনা নিবে বেশি কথা বলা বিপদজনক তাই এ প্রসঙ্গে আর কিছুই বলবো না। আমার স্কুল বন্ধুদের ভাইবার গ্রুপ ৮৯আর’স ডিজি বয়েজ বা ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুলের ১৯৮৯ এর এসএসসি ব্যাচের ভাইবার গ্রুপে এই মুসুল্লিপনা (মুসলমানদের ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি ধরনের প্রচার প্রচেষ্টা) বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই বিরক্ত হচ্ছিল কিন্তু কিছু বলতে পারছিল না। তাই এক দিন বললাম আমি ইদানীং বেদ, বেদান্ত উপনিষদ অর্থ সহ পড়া শুরু করছি আর তাতে একটা শ্লোক আছে এমন যে “ভগবৎ বিষদ ভরকেং বিশ্ব” মানে হল বিধাতা ভরকে গিয়ে বিশ্ব সৃষ্টি করেছিল। বলা বাহুল্য রস করে বলেছিলাম বানানো শ্লোক, আর বাল্য বন্ধুদের আড্ডায় তা বলাই যায়। তাতেও তারা বুঝল না বলে পরে এক সময় লিখলাম ধর্ম সকল মানুষের কল্পনা বা মিথ, সর্গ, নরক বলে কিছু নাই। বিধাতা বলে কিছু নাই, কোন কালে ছিলোও না। মানুষই বিধাতা সৃষ্টি করেছে আর নিজেদের প্রয়োজনে তাকে বাচিয়ে রেখেছে। “There is no God, never was. Man created God and keeping him alive for their own need” এই পোষ্ট দেয়ার পর যা হলো তা বলাই বাহুল্য। তুল কালাম কাণ্ড শুরু হয়ে গেল কয়েক জনের মেধ্যে। একজন আমাকে ওই পোষ্ট গুলো মুছে ফেলতে বললো, একজন বললো কবিরা গুনাহ হবে তাই তওবা করতে। সবার আঘাত গুলো আমি ঠাণ্ডা মাথায় উত্তর দিলাম আর বললাম যে, আমাদের স্কুল বন্ধদের এই আড্ডাটা মানে এই নয় যে সবার মধ্যে একই বিশ্বাসে থাকতে হবে। ভিন্ন মতের বন্ধুও থাকতে পারে তাই ধর্ম নিয়ে এত মাতা মাতি না করাই ভাল। বন্ধু প্রতিম ভালবাসা আমাদের একত্র করে ঘৃণা নয়। আর কেন সংখ্যা লঘুদের মতকে এতটা ঘৃণা করা হবে যখন আমাদের এই দেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার। তাই যদি হয় তবে ভিন্ন মত হলে তোদের এত আঘাত লাগছে কেন বা আঘাতটা কোথায় লাগছে বুঝে দেখতে আর সেখানেই মনের অসুখ। এর পর থেকে তাদের মুসুল্লিপনার রাশ টানা গেল। তারা বুঝতেই পারছিলনা অসাম্প্রদায়িকতা বলতে কি বুঝান হয়ে থাকে আর তাকে বাস্তবে কিভাবে অনুভব করতে হয়। আমি মূলত হাতে কলমে তা দেখায়ে দিলাম। অর্থাৎ নিজেকে ভিন্ন মতের মানুষ হিসেবে তাদের কাছে উপস্থাপন করার পর তাদের আচরণগুলো তাদের কাছেই উন্মোচন করে দিলাম। এরা তো ছোট খোকা নয়, সবারই বয়স ৫০ এর উপরে কার কার বা এক দুই বছর এদিক ওদিক। কেউ আর্মি কর্নেল, কেউ প্রতিষ্ঠিত আর্কিটেক্ট (শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রণেতা), কেউ বড় ডাক্তার, কেউ উচ্চপদস্থ ব্যাংকার। এদের মানুষিক অবস্থা যদি এহেন হয় তবে পুর দেশটার বহু মানুষের মানুষিক অবস্থাটা কি হতে পারে তা এ থেকে কল্পনা করা যায়। আমি নিজেই মুসুল্লিপনা করেছি ২০০২ থেকে ২০১০ পর্যন্ত তাই আমি ওদের মানসিকতাটা কম বেশী বুঝতে পারি। আমার ইদানীং কালের মানুষিক অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে আর তা হতেই পারে। আমি গোঁড়া মুসলিম হতে ধর্ম নিরপেক্ষ কিংবা আর ভাল করে বলতে গেলে নাস্তিকতার দিকে কিছুটা ঝুঁকে পরছি আর তা আমার নিজস্ব বিশ্বাস এর মধ্যে পরিবর্তন বা বিবর্তন। আর আমার ভাগ্য ভাল যে আমি সেকুলার ডেমোক্র্যাটিক বা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি। আমাকে আমার বিশ্বাস পরিবর্তন এর জন্য কার কাছে জবাব দীহি করার প্রয়োজন পরে না।
১৮মে২০২৩ তারিখে লাইক মাইন-ডেড হোয়াটস এ্যাপ গ্রুপের (প্রাক্তন মুসলিম প্রফেশনাল ফোরাম এর সদস্যদের গ্রুপ) এর এক অতি প্রিয় ভাই এর পোষ্ট দেখে যখন বললাম পুরোপুরি একমত হতে না পারার জন্য দুঃখিত তখন আরেকজন বললো কোথায় ভিন্ন মত পাচ্ছেন জানালে বিষটা আরো পরিষ্কার হতো। তার উত্তরে আমি যা লিখেছিলাম তা নিম্নরূপ, আমার উত্তর গুলো বন্ধনী আবদ্ধ ও বোল্ড আন্ডার লাইন করা।
// কখনো কি এমন দেখেছেন যে, কোন নাস্তিক তার ধর্ম ত্যাগ করে নাস্তিকতা কে আপন করে নেয়ার গল্প খুব আবেগ, ভালোবাসার কান্নার সহিত প্রকাশ করছে? বা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে কনভার্ট হওয়া কোন লোককে একইভাবে অন্তরের গভীর থেকে ভাব প্রকাশ করতে দেখেছেন? "আজ যদি নাস্তিকতার দেখা না পেতাম, তাহলে জীবনটাই বৃথা হয়ে যেতো", নাস্তিকতার এই সত্য পথে আপনিও চলে আসুন" এমন দরদী আবেদনে কখনো কোন নাস্তিককে বলতে শুনেছেন?"
না এমন শুনবেন না, দেখবেন না, দেখা সম্ভব ও না। কিন্তু কেনো? (আমি দেখেছি নাস্তিকেরা বা বামপন্থীরা ভেনগগ পত্রিকা বিতরণ করছে, তাদের আমার অফিস থেকে অপমান করে বিতাড়িত করেছিলাম তা’ও বহু বছর আগে, ও’রা কথা বলতে পারে না কারণ ইদানীং মুসলমানদের অতিরিক্ত মুসল্লিপনা এতই বেড়েছে যে ওরা কোন ঠাসা হয়ে পরেছে, এই মুসলিম পাগল সমাজে ভিন্ন ধর্ম কি ভিন্ন মত প্রকাশ করাও কঠিন। লিবিয়ায় যেমন ছিল গাদ্দাফির নাম নেয়া যেত না, তা হলেই বিপদ। এ দেশে ইসলাম ব্যতীত কিছু বললে খবর আছে।)
অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা অন্য ধর্ম বা ধর্মহীনতা থেকে ইসলামে ফিরে আসে, তাদের গল্পগুলো খুব ই হৃদয়গ্রাহী হয়, আবেগ ঘন হয়, তাদের জীবনের গল্প শুনে, পড়ে, দেখে মনের অজান্তেই কান্না চলে আসে। এমনভাবে তারা তাদের ফিরে আসার ঘটনা বর্ণনা করেন যেনো ছোটবেলায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া আপন কারো চাইতেও প্রিয় কিছু ফিরে পেয়েছেন। (ইসলামের এই আবেগ টাই ইদানীং জনপ্রিয়। আগে আবেগ তার পর ইসলাম। আবেগ আসবেই বা না কেন, প্রচণ্ড আত্ম তৃপ্তি যে দেয় এই ইসলাম বা অন্য যে কোন ধর্মে, জীবনের সকল অমীমাংসিত প্রশ্নের ব্যাখ্যা আছে ধর্মে। ভাল হলেও একই ব্যাখ্যা, খারাপ হলেও একই ব্যাখ্যা। ফুল প্রুফ সল্ভ টু অল ক্রিটিক্যাল কোয়েশচেন। সকল ধর্মেই তাই আবেগ প্রধান। ভাব জগতেই তার আসল বাস্তবতা। ইন্ডিয়াতে এই আবেগ হিন্দু ধর্মে বা সনাতন ধর্মেও দেখা যাবে। একই ভাবে তারাও আবেগে আপ্লুত হয়ে তাদের ফিরে আসার কাহিনী শুনাবে আপনাকে। নাস্তিক রা এই আত্ম তৃপ্তি থেকে বঞ্চিত তাদের কাছে সকল প্রশ্নের উত্তর নাই আর তাদের প্রাঙ্গণে নিত্তই নতুন হাদিসও উন্মোচিত হয় না। তারা আবেগ পাবে কই বরং তারা বাস্তববাদী আর বিবর্তনে বিশ্বাস করে। অপেক্ষা করে নতুন কোন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যাতে রহস্যের ঘোর কিছুটা কমে। তাদের তো মোল্লা শ্রেণী নাই যে রোজ শুক্রবার আরবি ভাষায় খুদবা পড়বে আর সবাই গদ গদ হয়ে তা শুনে পুণ্যবান হবে।)
রিভার্টেড মুসলিমদের অভিব্যক্তিই বা এমন কেন হয়? (শুধু রিভার্টেড মুসলিম কেন যে কোন ধর্মে রিভার্টেড আবেগাপ্লুত হবেই কারণ তারা বস্তু জগত থেকে ভাব জগতে প্রবেশ করে এক মহা আত্মতৃপ্তির সন্ধান পেয়ে গেছে। আগে ছিল ছন্নছাড়া আর এখন তার অভিভাবক আছে।)
সত্য কে খুঁজে পাবার যেমন ইন্টেলেকচুয়াল আবেদন আছে, তেমনি আছে অন্তরের গভীর থেকে আবেগের আবেদন ও। (ইন্টেলেকচুয়াল আবেদন নাই, সত্য তাই যাকে আপনি সত্য বলে মনে করেন আপনার মনো-অভিজ্ঞতা দ্বারা। যুক্তিও ইন্টেলেকচুয়াল আবার ভাবও ইন্টেলেকচুয়াল, দুটার বাসাই মগজে সমান ভাবে কাজ করে, কেউ একদিকে বায়াসড অন্য কেউ আরেক দিকে।) ধরুন, দীর্ঘদিন যাবত আপনি একটা বিশেষ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছেন, যার উত্তর মিলছেনা, কিন্তু চেষ্টা করতে করতে একদিন ঠিক ই উত্তর টা পেয়ে গেলেন। তখন সেই উত্তর পাবার যেই বুদ্ধিবৃত্তিক আবেদন তা যেমন উপলব্ধি করবেন, তেমনি করবেন সেই উত্তর পাওয়ার আবেগি, কান্না মাখা আবেদন ও। সেটা আপনার ইন্টালেক্ট থেকে না অন্তর থেকে উৎসারিত হবে। (ইন্টালেক্টই অন্তর, এই দ্বন্দ্ব বহু পুরাতন মনই কি আত্মা না কি মন হলো বুদ্ধি, আসলে পুরটাই ইন্টালেক্ট, একজন বিজ্ঞানী আবিষ্কারে আনন্দে আপ্লুত হয় আবার একজন বিধর্মী বা নাস্তিক আস্তিকতার প্রশান্তিতে আবেগাপ্লুত হয় কিন্তু যখন একজন ধার্মিক ধর্মের ভণ্ডামি ধরতে পেরে নাস্তিক হয় সে তখন হতাশ হয় আর যারা ধর্মান্ধ তাদের প্রতি করুণা বোধ করে।)
ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে, বা নাস্তিকতায় কনভার্টদের গল্পে একটা জিনিস ই কমন, অহংকার। তারা জ্ঞানের এমন স্তরে পৌঁছে গেছে, যা বাকি সব ধর্মান্ধ, বর্বর জনগোষ্ঠী অর্জন করতে পারেনি, পারবেনা। তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশে থাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য, ব্যঙ্গ, আর সুপেরিয়রিটি কমপ্লেক্স। এক্ষেত্রে তাদের কঠিন আত্মসংযম বা ত্যাগের কোন দৃষ্টান্ত থাকেনা, থাকেনা বিশাল কোন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে জীবনের বিলাসী স্বপ্নগুলোকে বিলিয়ে দেয়ার কোন কার্যকারণ। দিন শেষে তাদের মৌলিক উদ্দেশ্য তো কেবল এই ই যে প্রবৃত্তির অনুসরণ, বা নফসের দাসত্ব। (ধার্মিকেরা মনে করে তারা সবজান্তা আর অন্য ধর্মের লোকজন সব গাধা আর নাস্তিকেরা তো চরম দুর্ভাগ্যের মধ্যে আছে। ধার্মিক বা নাস্তিক দু দলই নিজের অবস্থান নিয়ে গর্ব করে। ধার্মিকদের টা আত্মশ্লাঘায় পরিণত হয় আবেগের কারণে আর নাস্তিকদের অহং বোধ আসে অন্যদের মূর্খ মনে করে। যারা গোঁড়া ধার্মিক আর যারা গোঁড়া নাস্তিক দু দলই খারাপ ভাবে তাদের অহংকার প্রকাশ করে।)
অন্ধকার থেকে আলোতে আসার বা মিথ্যের জগত থেকে বহু দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে সত্যে আসার ইনিশিয়াল ফলাফল হচ্ছে আপনি অহংকারী না হয়ে বিনয়ী হবেন, নিজের জন্য কষ্ট হলেও, সত্যের পথে অন্যকে ডাকতে ত্যাগ স্বীকার করবেন। কিন্তু অন্য ধর্মে বা নাস্তিকতায় কনভার্টদের মাঝে এমন কোন নজির পাবেন না, ভুলেও না। কারণ তাদের পথটা মিথ্যা, আর মিথ্যার ইনিশিয়াল ইফেক্ট হচ্ছে অহংকারী বহিঃপ্রকাশ, আর মন যা চায় তাই করা, সেটা ভালো নাকি মন্দ তা নিয়ে বিচলিত হবার প্রয়োজন বোধ না করা। (প্রতিটা ধর্মের লোকজনই ভাল ও মন্দর নিজ নিজ ব্যাখ্যা নিয়ে চলে, এমনকি নাস্তিকেরাও মানবতার কথা বলে তাদের ভাল মন্দের ধারনা ঠিক করে নেয়। প্রত্যেকের কাছে তার চিন্তা অন্ধকার থেকে আলোয় উত্তরণের পথ। প্রত্যেকে যার যার মত বিনয়ী।)
অন্যদিকে ইসলামে রিভার্টদের মাঝে আপনি দেখতে পাবেন, সত্য পাবার সেই অমূল্য অনুভূতি, বিনয়ের সেই অসাধারণ বহিঃপ্রকাশ, আমিত্বের সকল প্রকার শির্ক কে বর্জন করে আত্মসমর্পণের ফিতরাতি স্বভাবে ফিরে আসার উপলব্ধি গত কান্না। সত্যের ফিতরাত ই এমন যে, তা আপনাকে যেমন ইন্টালেকচুয়ালি প্রভাবিত করবে তেমনি আপনার অন্তরের গহীনে লুকিয়ে থাকা সত্য খুঁজে পাবার আবেগকেও এড্রেস করবে। সত্যের নেচার ই হলো ত্যাগ, ত্যাগের মাধ্যমে সবচেয়ে আপন স্বত্বা কে কাছে পাবার বাসনা। অবিশ্বাস মানুষকে বাই ডিফল্ট শয়তানের মত অহংকারী বানায়, প্রবৃত্তির দাস বানায়। অন্যদিকে, ইসলামের আত্মসমর্পণ এর বিশ্বাস বাই ডিফল্ট মানুষকে বিনয়ী, পরোপকারী বানায়, নিজের ভুল, পাপ স্বীকারের মানসিকতা দান করে, ক্ষমা চাইতে উদ্বুদ্ধ করে।
সত্যের এই আবেদন অন্য কোন ধর্ম বা ধর্মহীনতার আদর্শে অনুপস্থিত, আর এটা সত্যকে চেনার অন্যতম এক বিশেষ ক্রাইটেরিয়া! (শেষের কথা গুলোয় ইসলাম বাদ দিয়ে যে কোন ধর্মের নাম বসালে এর ফাংশন একই ফলাফল দিবে। অর্থাৎ সকল ধর্মের মানুষের মানুষিকতা একই রকম তা জরথুস্তই হোক কিংবা বৌদ্ধ ধর্মই হোক সবার দাবি এই একই। নাস্তিকরা বিনয়ী নয় কিংবা সত্য খুঁজে পায় না কথাটা ঠিক না তারা তাদের মত বিনয়ী ও সত্য খুঁজে পেয়েছে বলে বিশ্বাস করে। নাস্তিক হোক বা ধার্মিক হোক সব বিষয়েই বাড়াবাড়িটা খারাপ আর আমাদের সমাজে ইদানীং মুসলিমদের বাড়াবাড়িটা বেশি চোখে পড়ে। তবে সেটা খোলস ইসলাম, মানে ইসলামের ফ্লেভার মাত্র। এখানে সুদখোর ব্যাংকার বেশী নামাজী হয়। ঘুষ অনেকে নিয়ে ভাবে তার এর জন্য আখিরাতে জবাবদিহিতা আছে তাই কাজটা করতে হবে, ইত্যাদি নানা মিশাল টাইপ মুসলিম ধর্মান্ধ লোকজনে ভরা এ দেশ। সৎ চিন্তা থেকেই সত্যকে খুঁজে পাওয়া যায় আবেগ দিয়ে নয়। ধর্মের ভাববাদে নিমজ্জিত অবস্থা থেকে বস্তুবাদের নাস্তিক মানুষগুলোকে বুঝতে পারবেন না তার জন্য ভাববাদ থেকে মাথা বের করে তার পর দেখতে হবে। ধার্মীকেরা যেমন বিধর্মীদের ধর্মের পথে আনতে চাচ্ছে তেমনি নাস্তিকেরা ধর্মের মোহাচ্ছন্ন লোদের মোহ মুক্ত করে মুক্ত মনা করতে চাচ্ছে। এই চাওয়া চাওইটাই অনৈতিক। আমারা বিভিন্ন সম্প্রদায় মিলে রাষ্ট্র গঠনের উপায় পেয়ে গেছি আর তা সফল ভাবে চলছেও, তাই এত চাওয়া চাওইর আর দরকার কি? যার যার বিশ্বাস নিয়ে তাকে শান্তিতে থাকতে দিন। ) //
লেখাটা পোস্ট করার পর লিখেছিলাম “সকল প্রকার মুসলমানের প্রতি সমান স্রদ্ধা জ্ঞাপন করে উপরের বক্তব্য পেশ করলাম “। লেখাটা কার কার বিশ্বাসে আঘাত লাগতে পারে বলে লিখতে চেয়েছিলাম কিছু ভুল বলে থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিয়েন। কিন্তু তা আর লিখি নাই কারণ আমার বক্তব্য কাউকে যদি আঘাত করে থাকে তবে সেটা তার সাম্প্রদায়িক মানসিকতায় আঘাত করবে যা’র বিরুদ্ধেই আমার মূল বক্তব্য। মজার ব্যাপার হলো আমার প্রত্যুতরে অতি প্রিয় লেখক ভাই কোন প্রতিবাদ করে নাই কিন্তু অন্য আরেকজন একের পর এক আঘাত করতে লাগলো, যাকে আমি ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবেলা করেছিলাম। বাদ-প্রতিবাদ থেকেই সংবাদের সৃষ্টি হয়, যাকে বলে থিসিস<>এনটি থিসিস = সিনথেসিস। যদি ভদ্র ভাষায় বাদ প্রতিবাদ না হয় তবে নতুন সংবাদ বা উন্নত মানুষিকতা কোথা থেকে আসবে। তাই কারো বক্তব্যর প্রতিবাদের প্রয়োজন আছে, লক্ষ্য রাখতে হবে তা যেন ক্রিয়েটিভ ক্রিটিসিজম হয় ও ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে আঘাত না করে । ইদানীং কালের টিভি টক শো গুলো তাই সামাজিক চিন্তাধারায় নতুন মতবাদ বা মনোভঙ্গি তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুখ বন্ধ করে থাকলে তো হবে না। যা কিছু অসংগতি সৃষ্টি করছে তার প্রতি ভাল মানুষিকতার মানুষগুলোকে সরব হতে হবে তা না হলে অশুভর কিংবা ভুল চিন্তা চেতনার জয় হবে আর তার প্রতিঘাত এক সময় না এক সময় আপনার উপরও এসে পরবে। আমরা এই সমাজেরই সন্তান, জন্ম নিয়েছি এখানেই আর এখানেই মরবো। আমাদের সন্তানেরা এখানেই বসবাস করবে তাই এই সমাজে যাতে সঠিক ও শুভ চিন্তার চর্চা হয় তার দিকেও আমাদের নজর রাখা উচিত বলে আমি মনে করি। বাদ প্রতিবাদ ভাল কিন্তু তা যেন ঝগড়ায় পরিণত না হয়। ভদ্র সমাজে তা হওয়াও উচিত নয়। পরের মতকে সহ্য করতে হবে তা ভাল হলে গ্রহণ করুন কিংবা তাকে তার ভুল গুলো ধরিয়ে দিন। আপনার চিন্তায় ভুল থাকলে তার সংশোধন করে নিন। পরমত সহিষ্ণুতা তাই একটা মহৎ গুন যা সমাজে কেবল মঙ্গলই বয়ে আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
এডিট ও আপডেট হিস্ট্রিঃ ১২মে২০২৩>১৮মে২০২৩>২০মে২০২৩>
No comments:
Post a Comment