মনে হয় সময় এসেছে এখন এসোসিয়েশনটা একটা আকৃতি বা শেইপ পেতে যাচ্ছে। এখনই সময় সবাইকে ভেবে দেখার অদূর ভবিষ্যতে আমরা এই এলমনাই এসোসিয়েশনকে কি অবস্থায় দেখতে চাই। যেহেতু এই সংঘটি সমাজের উচ্চ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী সমন্বয়ে গঠিত তাই সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের দিকে এর সজাগ নজর রাখা উচিত। তাই আমি এর অন্যান্য অবজেক্টিভের সাথে যুক্ত করার প্রস্তাব রেখেছি “ওয়াচ-ডগ অন সোসিও ইকনমিক কন্ডিশন এন্ড এ কনসার্নড ভয়েস ইন সোসাইটি” মানে হলো সমাজের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির উপর সজাগ নজর রাখবে ও প্রয়োজনে সমাজে গ্রহণযোগ্য মতামত প্রদান করবে। সংগঠনটি তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রাখার পাশাপাশি আর্থ সামাজিক অবস্থার উপর নজর রাখবে আর কোন অসংগতি যেমন দ্রব্যমূল্যের অনৈতিক ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক সংকট, বাজেটে ত্রুটি কিংবা সামাজিক বৈষম্যর উপর তাদের বক্তব্য সমাজে দিবে যাকে উচ্চ স্তরের সমাজবেত্তাগন গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করবেন। সমাজে যাতে বক্তব্যটি গ্রহণযোগ্য হয় তাই প্রেস কনফারেন্সের প্রবন্ধে গবেষণা পত্র পাঠ করতে হবে যার জন্য বেক গ্রাউন্ড কার্যাবলী তো লাগবেই। এই উদ্দেশ্যটা আমি বহু বছর ধরে বলে আসছি। আজ যখন আমরা একটা আকৃতি পেতে যাচ্ছি তাই এর উল্লেখ না করে পারলাম না। এই লেখার মাধ্যমে আপনাদের সবাইকে জানয়েও দিলাম। দেশ তথা সমাজের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এই সংগঠনটি জোড়াল প্রস্তাবনাও পেশ করতে পারে যেমন ময়লা-আবর্জনা মুক্ত নগর চাই, কিংবা ভিক্ষুক মুক্ত ও পুনরবাসনকৃত এলাকা আর বৃদ্ধি করা হোক। আমাদের মধ্য হতে একটা প্যানেল নির্বাচন করে প্রেস কনফারেন্সে আমরা আমাদের বক্তব্য প্রবন্ধ আকারে প্রকাশ করতে পারি যা পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু বক্তব্য দিলেই তো হবে না এর পিছনে গবেষণা থাকতে হবে, তথ্য উপাত্ত সম্বলিত প্রবন্ধ থাকতে হবে তবেই তা জনগণের কাছে তা প্রকাশ করা যাবে। বছরে একটা কিংবা দুটা কিংবা জনগুরত্বপূর্ণ সংকটে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে সমাজের কাছে বক্তব্য প্রদান বাৎসরিক কেলেন্ডারে পূর্ব নির্ধারিত থাকতে পারে। এ জাতির শিক্ষিত সন্তানদের এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। আমার বৃদ্ধ হতে শুরু করেছি আর অনেক নূতন তরুণ সদস্য সংগঠনে চলে আসছে আর আসতেই থাকবে, এই সংগঠনটি পরবর্তী প্রজন্মের হতে তলে দিয়ে যেতে হবে যাতে তারাও দায়িত্ব গুল দক্ষতার সাথে চালু রাখতে পারে। এমন ভাবে কাজ করতে হবে যাতে একটি ঐতিহ্যগত পরম্পরা সৃষ্টি হয়।
সংগঠনটি কেবলমাত্র নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর সেমিনার আয়োজন করতে পারে। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বিজনেস সমন্বয়ে কেরিয়ার মেলার আয়োজন করতে পারে যাতে করে নতুন যারা গ্র্যাজুয়েট হয়ে বের হচ্ছে তারা উপক্রিত হয়। কোর্সটির পাবলিসিটি কিংবা কোর্সের মান উন্নয়নে সংগঠনটি স্কুল অব বিজনেসকে পরামর্শও প্রদান করতে পারে। কিছুদিন আগে আমাদের বাউবির ভর্তি সংক্রান্ত এ্যাড টি সম্পর্কে মিলিনিয়ামের মাহমুদ ভাই মন্তব্য করেছিলেন যে, এটা মলম পার্টির এ্যাড হয়ে গেছে। ওই সময়কার শ্রীলংকা ওপেন ইউনিভার্সিটির এ্যাডটি খুব সুন্দর হয়ে ছিল। একটা ছোট একুরিয়াম আর একটা বড় একুরিয়াম যা থেকে বাছাই করা মাছগুলো ছোট একুরিয়ামে যেতে পারছে। শ্রীলংকার এ্যাডটি উচ্চ মানের এক্সপ্রেশন দেয়। আমাদের বাউবি’র এ্যাডও সেরকম উন্নত হওয়ার বিষয়ে এই সংগঠন থেকে উদাহারণ সরবরাহ করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি নিয়মিত কার্যক্রম তো আছেই, যেমন বাৎসরিক পিকনিক আয়োজন, পুনর্মিলনই অনুষ্ঠান, সাংস্ক্রিতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। আমাদের মধ্য হতে দু জন জীবনাবসান করে ওপারে চলে গেছে ইতোমধ্যেই, তাদের একজনের পরিবার অতটা সচ্ছল নয়, আমাদের জমান টাকা বা ফান্ড হতে তাকে এক কালীন কিংবা মাসিক সহায়তা প্রদানেরও সিদ্ধান্ত এই সংগঠন নিতে পারে। সামাজিক দুর্যোগে ত্রাণ প্রদান তো দেশের সকল সামাজিক সংগঠনের নৈতিক দায়িত্ব। এ ছাড়া দেশের উন্নয়নেও এই সংঘটন দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক সংঘ সমূহ সমাজে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। সমাজের একক যদি হয় পরিবার তা হলে এর বৃহত্তম প্রকাশ হলো রাষ্ট্র কিন্তু এই রাষ্ট্র চলে শক্তিশালী সংঘ সমূহের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে। সমাজের যে সকল লোক সর্বদা অর্থসংকটে কিংবা উপার্জনের সংগ্রামে নিরন্তর বেস্ত তারা এরূপ সংগঠন করতে অসমর্থ। যারা সমাজে শিক্ষিত ও সচ্ছল তাদেরই এটা দায়িত্ব। সে হিসাবে সিম্বা এলমনাই এসোসিয়েশন বাংলাদেশ যথার্থ একটি সংঘটন বা সংঘ বটে।
সংগঠনটির অবকাঠামো হেসেবে ৬টি সাব কমিটি প্রস্তাব করা হয়েছে। যার মানে হলো ৬টি ফ্রন্টে আপাতত এটি কার্যকর ভাবে আগায়ে যাবে। যেগুলো হলো ১) Constitution and Policy ২) Finance, Budget, Audit, Fund Collection ৩) ICT, Branding, Registration, Website ৪) Cultural and CSR Activities ৫) PR, Liaison, Branding and Capacity Building ৬) Industry Development, Education, Training & Development এই ছয়টি ফ্রন্টে যদি সম্মিলিত ভাবে অগ্রসর হওয়া যায় তবে তা নিঃসন্দেহে সবার সামগ্রিক উপকারে আসবে। কাজটা একা কারো পক্ষে করা সম্ভব নয়। দশের লাঠি একের বোঝা। সবার সম্মিলিত ও একীভূত প্রচেষ্টায় একটা আশানুরূপ ফল পাওয়ার আশা করা যেতে পারে। প্রথম কমিটি সংবিধান রচনা করবে, দ্বিতীয় কমিটি অর্থনৈতিক দিকটা দেখবে, ৩য় কমিটি ওয়েবসাইট নির্মাণ ও রেজিস্ট্রেশন এর বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে। ৫ম কমিটি পাবলিক রিলেশন এর উন্নয়ন আর বাউবি ও এসওবি’র সাথে লিয়াজো রক্ষা করার বিষয়গুলো নজরে রাখবে। ৬ষ্ঠ কমিটি সিম্বা গ্র্যাজুয়েটদের চাকুরী জগতে যোগ্যতার বিচারে যথার্থ স্থানে সুপারিশের কাজটা করবে, প্রয়োজনে ট্রেনিং এর ব্যবস্থাও করবে। ৬ষ্ঠ কমিটিটা খাইরুজ্জামান সবুর ভাই এর প্রস্তাবে গৃহীত হয়, তিনি বলছিলেন এই উদ্দেশ্যটাই আমরা বহু দিন ধরে বলে আসছি কিন্তু এ বিষয়ে কাজ খুব কম হয়েছে। প্রতি ব্যাচ থেকে এক জন করে কাউন্সিলর নির্বাচনের প্রস্তাবটাও তার দেয়া। উনি পূর্বে বাউবিতে চাকুরী করায় ওখানকার সাথে লিয়াজোর কাজটিও ভালভাবেই করতে পারবেন বলে আশা করা যায়। উনার সাংগঠনিক চিন্তাভাবনা গুলো আমার খুব ভাল লেগেছে। মফিজ ভাই ২০ মে ২০২২ এ সাম্পান মুঘল কাবাব হাউজ ধানমন্ডিতে আমাদের মাইল ফলক গেট টু গেদারে যে দীর্ঘ বক্তব্য দেন তার সূত্র ধরে উনি দায়িত্ব নিয়ে যে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তা অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও আমাদের সংগঠিত হতে দারুণ ভাবে কাজ করেছে। উনার অভিজ্ঞ দিক নির্দেশনা আমাদের সব সময় লাগবে তা সবাই এক বাক্যেই স্বীকার করবেন। সাম্পানের মাইল ফলক গেট টু গেদারটির পর হতে বেশ কিছু আভ্যন্তরীণ মিটিং এর মাধ্যমে কমিটি গুলো নির্ধারণের কাজ করা হয় আর এভাবে এর মিনিটসটির ৪টি ভার্সন পর্যালোচনা পূর্বক গৃহীত হয়। এর পরবর্তী ৫ম ভার্সনটি সবাইকে প্রদান করা হয় যাতে সবার মতামতের প্রতিফলন ঘটে। ইতোমধ্যে অত্যন্ত ব্যস্ত আমাদের প্রথম ব্যাচের সহপাঠী মাহমুদ ভাই ও তাহমিদ ভাইকে মিটিং মিনিটস টা দেখার অনুরোধ করেছিলাম। মিলিনিয়ামের মাহমুদ ভাই শত ব্যস্ততা সত্যেও তা সম্পর্কে সহমত দেন আর তাহমিদ ভাইও অনুরূপ সহমত পোষণ করেন বলে আমার বিশ্বাস।
সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সংঘটি সামনে আগাতে পারবে। সবার মধ্যে একই ভাবধারা আনয়ন করা এত সহজ নয়, তাই কনভেনার হিসেবে মফিজ ভাই সবার মতামত নিতেই সবাইকে ই-মেইলে মিটিং মিনিটস টা পাঠাতে উদ্যোগ নিয়েছেন এবং এড হক কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নির্মাণের প্রস্তাবনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে তাই এই গন যোগাযোগ পদ্ধতিটি মনে হয় ঠিক আছে। অনেকেরই প্রশ্ন এতটা সময় লাগছে কেন? এত বিভিন্ন ট্র্যাকের এত ভিন্ন ভিন্ন প্রফেশনের লোকদের সংগঠনটি সামগ্রিকভাবে জোড়া লাগাতে সময় একটু লাগছে বটে কিন্তু যখন পূর্ণাঙ্গ কাঠামোটি তৈরি হয়ে যাবে তখন তা বৃহৎ কলেবরে দ্রুত আগানর ক্ষমতা বা শক্তি রাখবে বলে আমরা আশাবাদী। এ ক্ষেত্রে সবার অংশগ্রহণটা খুবই জরুরী। ২০১৬ থেকে ২০২১ আমরা কয়েকজন এসব নিয়ে ভেবেছি আর বছরে একটা গেট টু গেদার করতে পেরেছি মাত্র। এখন মাহমুদাল ভাই, শিবলী ভাই, নরুদ্দিন ভাই, কুতুব ভাই, দীপ্তি আপু, লিপি আপু, ডা. স্বপন হালদার, সিলেটের মওলা ভাই সহ এ রকম বেশ কয়েকজন ডেডিকেটেড টিম পাওয়া গেছে তাই কাজগুলো গুছায়ে আগান যাচ্ছে। বিশেষ করে মফিজ ভাই কনভেনারের দায়িত্বটা নেয়াতে উনার অভিজ্ঞ দিকনির্দেশনা গুলোর জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা জানতেই পারি। এমন একটা সময় ছিল যখন কেবলমাত্র ফেইসবুকে সক্রিয় থাকার কারণে আমরা সেম্বার শ্রীলংকা চ্যাপ্টারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছিলাম ও তাদের গেট টু গেদারে আমাদের বক্তব্য অনলাইনে ভিডিও ক্লিপের মাধ্যমে প্রদান করতে পেরেছিলাম। সক্রিয় থাকাটা জরুরী। আমাদের মধ্যে যত জন সক্রিয় থাকবে তত দ্রুত সংগঠনটি আগে বাড়বে। এড হক কমিটির কাজ দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে সংঘর প্রাথমিক কাজগুলো সম্পন্ন করে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে দেয়া। প্রাথমিক ভাবে ছোট একটি দল সংগঠিত হবে তার পরে পুরো সংঘকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে এরূপ একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এমনটিই সকল ক্ষেত্রে হয়ে থাকে বা হওয়া উচিত। ২০ মে ২০২২ তারিখের বড় গেট টু গেদারটা এ্যারেঞ্জ করতে গিয়ে মাহমুদুল ভাই, শিবলী ভাই, নূরুদ্দিন আকাশ ভাই, স্বপন হালদার ভাই আমাদের মধ্যে যে দারুণ একটা সমঝোতা সৃষ্টি হয়েছে তারই ফলশ্রুতি আজকের এই অবস্থা। আমাদের এই সমঝোতাটা সবার মধ্যে ছড়ায়ে দিতে হবে, যখন সবাই একই ভাবে চিন্তা ভাবনা করবে তখনই অগ্র গমনটা দ্রুততর হবে। হিন্দি মুভির নায়ক গোবিন্দর এক এ্যাড ছিল “জোর কা ধাক্কা ধীরে সে লাগে” সেই রকম বলতে চাই বড় কিছু একটা করতে গেলে ফাউন্ডেশনে সময় একটু বেশি লাগবেই, এটা মেনে নিতে হবে।
অভাবনীয় এই সংগঠনটির কেন্দ্রে বা কোরে কয়েকজন আত্মনিবেদিত ব্যক্তির মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকতে হবে। মূল উদ্যমটা ওখান থেকেই উঠে আসবে। সেরকম একটি কোর ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে। ১০ জন্য সম্মানিত এ্যডভাইজারকে মাথার উপর রেখেই এই কেন্দ্র সক্রিয় ভাবে কাজ গুলো আগায়ে নিয়ে এসেছে। সর্বক্ষেত্রে সামগ্রিক উন্নয়নের স্কোপ সর্বদা উন্মুক্ত থাকে। তাই পরবর্তীতে সংগঠনটির উন্নয়নে সবার মতামতকেই প্রাধান্য দেয়া হবে। এটা কখনই ওয়ান ম্যান শো কিংবা এক ব্যক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান হতে পারে না। প্রবাহমান নদীর মত এটি সময়ের স্রোতে ক্রমাগত আগাতেই থাকবে এই প্রত্যাশা আমরা করতেই পারি।
আপডেট হিস্ট্রিঃ ২৮অক্টবর ২০২২> ১০ডিসেম্বর২০২২> ১৫ ডিসেম্বর২০২২> ১৭ ডিসেম্বর ২০২২
No comments:
Post a Comment