Thursday, October 27, 2022

সমসাময়িক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে আমার রাজনৈতিক অভিমত

বেশ কয়েক বছর আগে ১৩-১২-২০১৮ তারিখে লিখেছিলাম “রাজনীতি কি যেন তেন ব্যাপার” আজ আবার প্রয়োজন বোধ করলাম আমার মতামতটা পর্যালোচনা করার। আমি কোন রাজনৈতিক দল কিংবা গোষ্ঠীর সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত নই তার মানে আমি একেবারে নিরপেক্ষও নই। পক্ষপাতিত্ব বলতে যা বোঝায় তা হলো কোন মতাদর্শের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি। আমার সেটা নেই, বরং বলা চলে সমকালীন রাজনীতির গতি প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে আমার মতামতও পরিবর্তিত হয়। রাজনৈতিক পরিভাষায় যাকে বলে ফ্লোটিং ভোটার আমি অনেকটা তাই। তাই আমি দাবি করি আমি নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গি থেকে মতামত দেয়ার সামর্থ্য রাখি। আমি দু দু বার ভোট গ্রহণের সময় এসিস্ট্যান্ট প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি আর দু বারই চোখের সামনে ভোট গ্রহণে দুর্নীতি হতে দেখেছি। এই দেশে তাই নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না তার পরও বোলব জাতীয় প্রয়োজনে সকলেরই একটি রাজনৈতিক মতামত থাকা অত্যাবশ্যক। আমরা সামরিক শাসন চাই না জনগণই হওয়া উচিত সকল ক্ষমতার উৎস। যারা রাজনীতি নিয়ে মতামত দেয়ার যোগ্যতা রাখেন তারা দেশের চলমান রাজনীতির বিষয়ে আমার চেয়ে অনেক অভিজ্ঞ আর দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলীর প্রতি তাদের রয়েছে সমকালীন খবরাখবর। আমি অতটা খবর রাখি না তার পরও লোকজনের কথাবার্তা মন্তব্য ও পেপার কিংবা টিভি নিউজ দেখে আমার মধ্যে রাজনীতি নিয়ে যতটুকু মতামত তৈরি হয় তার প্রেক্ষিতেই লিখে প্রকাশ করলাম আমার ধারণাগুলো। রাজনীতি নিয়ে গতবার যা লিখেছিলাম পড়ে দেখলাম সেই ধারনা গুলোর আমার মধ্যে তেমন কোন পরিবর্তন হয় নাই তবে তার শেষে নতুন কিছু যোগ করার প্রয়োজন আছে। আমার আগের লেখাটা পুনরাবৃত্তি করে এর শেষে নতুন কিছু যোগ করলাম আমার সমসাময়িক মতামত প্রসঙ্গে।

আর আর কয়েক মাসের মধ্যেই পুরো জাতি একটি মতামত দিবে পরবর্তী পাঁচ বছর কারা দেশ চালাবে। প্রত্যেকবার নানা ঝামেলা হয় এই সময় গুলোতে, সাধারণ মানুষের মতামত তাই নানা রকম, কেউ বলে আমার ভোট আমি দেওয়ার আগেই দেয়া হয়ে যায়, লাভ কি ভোট দিয়ে? কারচুপি তো হবেই।  যে যায় লংকায় সেই হয় রাবণ। সব শিয়ালের এক রা। এই বিশাল জন সমষ্টিতে এরকম নানা মতামত তো থাকাটাই স্বাভাবিক। আর উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে দুর্নীতি? তা কম বেশী সকল দেশেই আছে। অনেক জনমতের মধ্যে একটি মত এরকম যে, রাজনীতি করে খারাপ লোকে, অর্থ ও ক্ষমতার প্রতি যাদের লোভ তারাই এই নোংরা রাজনীতিতে সময় দেয়। মজার ব্যাপার হলো এঁরা কোন রাজনীতির কথা বলছে? রাজনীতি কিন্তু সকল গোষ্ঠিবদ্ধ মানবিক কর্মকাণ্ডতেই আছে। সর্বনিম্ন তিন জনের প্রতিষ্ঠানেও রাজনীতি হয়। উল্লেখিত মতটি মূলত জাতীয় রাজনীতিকে উদ্দেশ্য করে বলা। একটি বিশাল জন গোষ্ঠিকে একক ভাবে সঠিক দিকে পরিচালনা করা, ঐ জন গোইষ্ঠির নানা মানুষের নানা মত, নানা ভেদ-বিভেদ, ভাল-মন্দ, সুবিধা-অসুবিধা অতিক্রম করে তাদের একক নেতৃত্বে সুনির্দিষ্ট দিকে পরিচালনা করা কি ভাবে একটি নোংরা কাজ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে? অনেকে বলবে যারা রাজনীতি করে তারা ভাল লোক নয়, রাজনীতিতে ভালো লোক থাকলে দেশ ও জাতীর আজকে এই দুরবস্থা হতো না। ভালো লোক বলতে তারা আসলে কাদের কথা বলছে? ফুটবলের মাঠে ক্রিকেটার নামালে তারা হয়তবা ভালই খেলবে বা অন্তত খেলতে পারবে কিন্তু মাঠে ভাল লোক নামাতে গিয়ে যদি কবি-সাহিত্বক-তাত্ত্বিক-জ্ঞানী লোক নামায়ে দেয় তবে খেলার মাঠ সংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাজনীতি করবে যারা রাজনীতি বোঝে, যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আছে, যারা সমাজের সকল স্তরের লোকদের জীবনযাপন গভীর ভাবে অনুভব করার ক্ষমতা রাখে। এই লোকেরা তাত্ত্বিক নাও হতে পারে, হলে ভাল কিন্তু দেশ ও সমাজের সকল স্তরের মধ্য হতেই তাদের উঠে আসতে হয় বিধায় লোক গুলো উচ্চতর স্তরের লোকের কাছে নোংরা মনে হলেও করার কিছু নাই, লোকটি খেলতে জানে কিনা তা এখানে বিচার্য । জাতীকে ভালবাসে কি না, সাধারণ জনতা ও জনমতকে মূল্যায়ন করে কি না, জাতীর উদ্দেশ্য সম্পর্কের সচেতন কি না? নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা আছে কি না? বিরোধ মীমাংসা করতে পারে কি না? ইত্যাদি বিষয়ে পারদর্শিতাই তাকে রাজনীতি করার উপযোগীতা বিচারের মাপকাঠি হওয়া উচিত। সে উচ্চ শিক্ষিত হলে তো অনেক ভাল কিন্তু তা হওয়াটা আবশ্যকীয় নায়। এই যে এইটি আবশ্যকীয় নয় তা অনেকে মানতে চায় না, এটা কি সম্ভব যে দেশের সবকটি লোক সমান ভাবে উচ্চ শিক্ষিত হবে, সব একই রুচির হবে, সবাই যেহেতু একই ভাষায় কথা বলে তাই সবাইকে একই ভাবে চিন্তা করতে হবে?

রাজনীতি কি নীতির রাজা নাকি রাজার নীতি তা নিয়েও অনেক বাক বিতণ্ডা রয়েছে। আমার মতে এটি দুটোই। রাজাই নীতি প্রণয়নের অধিকার সংরক্ষণ করতো, আজ প্রজাতন্ত্রে এই নীতি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে প্রণীত হয়। তাই এটি রাজার নীতি বটে, আবার সকল নীতির নেতৃত্ব স্থানীয় নীতি হিসেবে এটি নীতির রাজাও বটে। মূল কথা রাজনীতিতে সকলের অংশ গ্রহণ করা উচিত, সক্রিয় রাজনীতি না করলেও সবার উচিত রাজনীতির খোজ খবর রাখা, তা সবাই করেও কিন্তু জিজ্ঞাসা করলে বলবে, ভাই, রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাই না, সব গুলোই চোর। দুর্নীতিবাজ লোকগুলোকে যদি আপনি মাঠ ছেড়ে দেন তো তারা চুরি করবে না কেন? এর জন্য তো ওরা নয় বরং আপনাকে দায়ী করা উচিত। সমাজের দায়িত্ব সম্পন্ন লোকগুলো যদি তাদের রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ না করে তবে অসৎ/অসাধু লোকেরা তার সুযোগ নিবেই। যে কোন চা’এর দোকানের আড্ডায় রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডায় রাজা উজির মারার প্রবণতা আছে। ঠিক ভেটের আগদিয়েই চা’এর কাপে ঝড় উঠে। এ সব আলোচনা রাজনীতিতে আপাত কোন প্রভাব ফেলে বলে মনে হয় না, তবে জনমত যাচাইয়ের জন্য ভাল তথ্য প্রদান করে। ওই আড্ডায় যদি একজন অন্তত শিক্ষিত লোক উপস্থিত থাকে ও অংশগ্রহণ করে তবে আলোচনা ভালোচনায় পরিণত হতে বাধ্য। আজকালকার টিভি টক-ঝাল শো গুলো ইদানীং রাজনৈতিক জনমত গঠনে ভালো ভূমিকা রাখছে বলে অনুমান করা যায়।

বেশ কিছুদিন আগে এক বড় ভাই বলেছিল, বাঙ্গালীরা কোন কিছু সহজভাবে গ্রহণ করে নি কোন সময়। এদেশের জনগণকে আলু খাওয়ান শিখিয়েছে পর্তুগীজরা, কিন্তু তারা কখনো আলু ভর্তা করে খায়নি। বাঙ্গালীদের সবকিছুই যেন একটু বেশী বেশী, আবেগ প্রবণতার প্রভাবে আসল বিষয়বস্তু গোলায়ে ফেলে। সেই গোপালের আমল থেকেই মাৎস্যন্যায় অবস্থাতেই নির্বাচন / নির্ধারণ হয়েছে রাষ্ট্র ক্ষমতার। একটু উনিশ বিশ করে সেই একই অবস্থা আজো বহাল আছে। রাজা-প্রজা সম্পর্ক কিংবা মালিক-দাস প্রথা আজ ভিন্ন ভাবে চালু আছে, যাদের তৃতীয় নয়ন আছে তারা তা ঠিকই দেখেতে পায়। সম্পদের সমান বন্টন স্বাভাবিক নয়, সুষম বন্টন হওয়াটা কাম্য কিন্তু সুষম হওয়ার মানদণ্ড কি হবে এবং কে তা নির্ধারণ করবে সে বিষয়ে কোন মীমাংসা আজো হয়নি। সর্বজন সম্মত মানদণ্ড বিধাতা ছাড়া কোন মানব বা মানবগোষ্ঠির পক্ষে প্রণয়ন করা সম্ভব নয়। পক্ষপাত মুক্ত মানব মন সম্ভব নয়। নিজের ভাই, নিজের ছেলে, আমার আত্মীয় ইত্যাদি বিষয়গুলো মানব মনে সাধারণ থেকে নিকটবর্তী হিসেবে বিবেচিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। এটি যদি না হয় তবে বলতে হবে সে অতিমানব বা দেবাত্মা।

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিছুটা নিরপেক্ষ মতামত এরকম হতে পারে যে, যেহেতু এই মুহূর্তে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা একটি চলমান প্রক্রিয়াতে রয়েছে আর যেহেতু এই প্রক্রিয়ায় চলমান থাকলে অদূর ভবিষ্যতে কিছু বৃহৎ প্রকল্প সফল ভাবে সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই তাকে সেভাবেই চলতে দেয়া উচিৎ। হটাত গাড়ির চালক পরিবর্তন  করলে কিংবা রোড ম্যাপ বদল করলে গন্তব্যে পৌছান দুষ্কর হয়ে যেতে পারে। কেবল খাম খেয়ালী-পনা করে কেউ যদি এরূপ মনোভাব পেষণ করে যে, গত বার যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের বদলে দেখা যাক না অন্যরা হয়তবা আরো ভাল ভাবে দেশ চালাবে, যে সিদ্ধান্তের সাথে দেশের সকল ব্যক্তির ভাগ্য-জীবনযাপন জড়িত, যে সিদ্ধান্তর জন্য দেশের সকলের মতামত চাওয়া হচ্ছে, সে মতামত এত সহজে নেয়া উচিত নয় বলে আমি মনে করি। নিরপেক্ষ দৃষ্টি কোন থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যারা যোগ্যতার বিচারে সঠিক বলে মনে হয় তাকেই নির্বাচন করা উচিত।

গত পাঁচ বছর আগের পরিস্থিতি আর আজকের পরিস্থিতিতে পার্থক্য থাকাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু নিরপেক্ষ বিচার বিশ্লেষণে বলা যায় যে, গত বছর গুলতে দেশের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতিতে তেমন কোন বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটে নাই। বর্তমান সরকার স্বাভাবিক দক্ষতার সাথেই উদ্ভূত সমস্যাগুলোর মোকাবেলা করেছে। কিছু এদিক ওদিক হয়েছে কিন্তু ৫০ বছরের দেশটা বয়সে বেশি বড় নয়, তাই সামান্য এদিক ওদিক হওয়াটাকে তেমন কোন বড় বিপর্যয় বলা ঠিক হবে না। সব থেকে বড় কথা হলো, ধরতে গেলে দেশটাতে দল আছে মোটে দু টা। বাকি গুলা এত ছোট যে তারা জাতীর পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব নেয়ার যোগ্যতা রাখে না। দুটো দলের একটি ক্ষমতায় আছে আরকেটি টিকে আছে তার অতি পূর্বের কিছু অর্জনের জন্য। দুটো দলের মধ্যে শক্তিশালীটিই ক্ষমতায় আছে আর দুর্বলটি সম্পর্কে তার ক্ষমাতয় থাকাকালীন সময়ে কৃত অপকর্ম গুল মানুষ এখনও ভুলে যায় নাই বলেই মনে হয়। আমি রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হই ১৯৮৫ সাল থেকে, হোসিইন মোহাম্মদ এরশাদ এর সামরিক শাসন এবং ১৯৯০ এর পর তিন তিন বার তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র মুক্তি পাক’এ উত্তরণ। তার পর পর্যায়ক্রমে দুটি মূল দলের শাসনামলে এর পালা বদল শেষে আবারও রাজনীতিকে সামরিকীকরণের প্রচেষ্টার ব্যর্থতার পরবর্তী আওয়ামীলীগের পর পর দু বার শাসনামলের সব কিছুই দেখলাম। আমার বিগত ৩৭ বছরের অভিজ্ঞতা বলে যখন বর্তমানের ক্ষমতা বহির্ভূত দলটি ক্ষমতায় থাকে তখন প্রশাসনিক ও দেশ পরিচালনার সকল জাতীয় কল কব্জা গুলো কিছুটা হলেও ঢিলা হয়ে যায়। আর বর্তমান দল যেটি বর্তমানে ক্ষমতায় আছে তা’র সময়ে এই কল কব্জা গুলতে যথাযোগ্য লোকগুলো তার তার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করায় দেশটা দ্রুত আগায়ে যায়। এটা আমার অভিজ্ঞতা লব্ধ জ্ঞান যা কারো মতামত দ্বারা প্রভাবিত নয়। আওয়ামীলীগের দাবি বিএনপি জন-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, কথাটা কম বেশি সত্য। বিএনপিতে নেতৃত্বদানকারী লোকবল কমে গেছে তা যে কারণেই হোক বুঝা যায়। ২০০৪ সাল হতে বর্তমান পর্যন্ত যতগুলো রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় লোকজনের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়েছে তাদের মধ্যে বিএনপি পন্থী লোকগুলোর মধ্যে প্রচুর নেতিবাচক প্রবণতা লক্ষ করেছি যা আওয়ামীলীগ পন্থীদের মধ্যে দেখি নাই। এই অভিজ্ঞতাও আমার পক্ষপাত দুষ্ট মানসিক অভিজ্ঞতা নয় বরং নিরপেক্ষ বিচার থেকেই বলছি। যদিও সর্বাংশে নিরপেক্ষ নির্বাচন এখনো এদেশে আশা করা যায় না তার পরও কেউ না কেউ কোথাও না কোথাও কল কাঠি নেরে সূক্ষ্ম ইঞ্জিনিয়ারিং করে লোক চক্ষুর অন্তরালে কাউকে না কাউকে ক্ষমতায় বসায়। তার পরও বলবো গণতাত্রিক ভাবে প্রস্তাবিত এই দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচন এর আর প্রয়োজন নেই কিংবা বলা যায় যুক্তি যুক্ত নয়। সংবিধান অনুযায়ী কারো হস্তক্ষেপ বহির্ভূত ভাবে নির্বাচন কমিশনকেই নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে এ দায়িত্বে। ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত এ দেশে পুলিশ প্রহরায় সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয় মানে হলো এদেশের মানুষ এখনও ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রর মূল সঞ্জার সাথে সহমত নয় কিংবা অসম্পূর্ণ ধারনা পোষণ করে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি বিন্দু মাত্র সম্মানবোধ রয়েছে বলে মনে হয় না বরং রয়েছে ঘৃণা ও সংঘাত প্রবণতা। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী এই জনগোষ্ঠী মনে হয় যেন জানে না এখানে মানুষের মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা সাংবিধানিক ভাবে ও আইনগত ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। গণতন্ত্রের মূল চারটি স্তম্ভ বা পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা তথা (১) ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, (২) বিশ্বাসের বা ধর্মীয় স্বাধীনতা, (৩) মালিকানার পূর্ণ স্বাধীনতা আর (৪) ব্যক্তিগত মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা। এই চারটি স্বাধীনতা আইনগত ভাবে ও সংবিধানগত ভাবে সকল নাগরিকের জন্য মান্য করা বাধ্যতামূলক। তাই যদি জনগণ বুঝত তা হলে কিছু বিতর্কিত বিষয়ে মতামত প্রকাশের জন্য কেন কিছু লেখককে দেশান্তর হতে হলো কিংবা নির্যাতনের শিকার হতে হলো আবার কিছু ব্লগারকে হত্যা পর্যন্ত করা হলো? এ থেকে বুঝা যায় এ জাতির জনগণ এখনও সংবিধানের কয়েকটি বিষয়ে সর্বসম্মত ভাবে একমত হতে পারে নাই। আমার অভিমত দেশ ও জাতির বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামীলীগকেই আগামী টার্মের জন্য ক্ষমতায় আনা উচিত আর দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগণকে এর পক্ষেই মত দেয়া উচিত। সমসাময়িক প্রেক্ষিতে এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত পক্ষপাতশুন্য নিরপেক্ষ অভিমত যা সময়ের সাথে ঘটনা প্রবাহের প্রেক্ষিতে অর্জিত অভিজ্ঞতার সাপেক্ষে স্বাভাবিক ভাবেই বদলাতে পারে। চলমান রাজনীতি একটি প্রবাহমান বাস্তব প্রক্রিয়া যাতে ধ্রুব বলে কিছু নাই। 

আপডেট হিস্ট্রিঃ ১৩ডিসেম্বর২০১৮ > ২৮অক্টোবর২০২২

No comments:

Post a Comment