Wednesday, February 3, 2021

তাহার সীমানা আছে, কিনারা নাই।

ব্ল্যাক হোল বইয়ে মহাবিশ্ব সম্পর্কে হকিংস মহাশয়ের মন্তব্য “তাহার সীমানা আছে কিন্তু কিনারা নাই” শুনলে মনটা যার পর নাই হতাশায় ছেয়ে যায়। হতাশাটা অযৌক্তিক নয়, কারণ উনি ব্যাখ্যা করেছেন, এটা হল অনেকটা যেমন এই পৃথিবী সীমানা আছে কিন্তু আপনি যেদিকেই যান না কেন কখনই নিচে পড়ে যাবেন না, তার মানে এর কোন কিনারা নাই। সেই রকম এই মহাবিশ্ব অসীম নয় ঠিকই তবে তার কিনারাও নাই, যার অর্থ দাড়ায় এই মহাবিশ্বটা গোলক টাইপের বা বেলুনের মত বটে। যদি তাই হয় তবে এই মহা-বেলুনটা আছে কোথায়? উনারা বলছেন এরকম আর বেলুন আছে আবার বেলুনের ভিতর আর বেলুন থাকতে পারে। মহাবিশ্বটা এরকম কেন তা কিন্তু এই ব্যাখ্যা বর্ণনা করে না। বেলুন গুল কোথায় আছে তা’রও কোন সদউত্তর তাহার মন্তব্যে পাওয়া যায় না।

সেই ছোট বেলার কথা, আবদুল্লাহ আল মূতী সরফুদ্দিন সারের বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা ক্লাস ফাইভের বিজ্ঞান বিষয়ক পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম আদি কালে মানুষ বিশ্বাস করত, আব-আতস-খাক-বাত (পানি, আগুন, মাটি,  আর বাতাস) দিয়ে এই বিশ্ব চরাচর গঠিত। এই বিশ্ব প্রকৃতিতে যা কিছু তা এই চারটি পদার্থ দিয়ে গঠিত। তাদের চিন্তার কোন এক পর্যায়ে তাদের তা মনে হয়েছে। আজও শব্দ গুলর প্রচলন আছে যেমন আতস বাজি, আবে জম জম, সব পুরে খাক আর বাতায়ন তো এখন হাউজিং সোসাইটির নামও হয় যেখানে বাসা গুল বাতাসে ভরপুর থাকবে বলে দাবি করা হয়।  মজার ব্যাপার হল আজ আমরা জানি এই বিশ্ব প্রকৃতিতে চারটি বল বা ফোর্স কাজ করে। যা কিছু সংঘটিত হতে দেখা যাচ্ছে তা এই চারটি ফোর্সের পরস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল, যে গুল হল (১) গ্র্যাভিটেশন বা মহাকর্ষ, (২) ইলেকট্র-মেগনেটিজম, (৩) উইক ও (৪) স্ট্রং নিউক্লিয়ার ফোর্স। হলিউড মুভি ট্রান্সফরমার কিংবা কণিকা বলবিদ্যার টারমিনলজিতে মজা করে বলা যেতে পারে গ্রাভিটন, ইলেক্ট্রো-মেগাট্রন, উইক ও স্ট্রং নিউক্লিয়ট্রণ। আব আতস খাক বাতের মত এটা মনগড়া ভাবনার অনুমান নয়, বরং ৩০০০ বছরের গণিত, পদার্থ বিদ্যা, প্রযুক্তির উন্নয়ন এ সবের সম্মিলিত গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সত্যাসত্য। হলিউডের আরেক মুভি স্টার ওয়ার্স এ বলা হচ্ছে “মে দ্যা ফোর্সেস বি উইথ ইউ” যার মানেটা হল একটা অত্যাধুনিক জনগোষ্ঠী স্রষ্টাকে বা যদি বলি আন মুভড্ মুভার কে ফোর্সেস এর সাথে একাত্ম করে ফেলেছেন। যাকে বলা হয় সর্ব শক্তিমান, তার মানে তো ওই দাঁড়াল, সুপ্রিম ফোর্স। কল্পনার জাল আর বিস্তার করলে পাওয়া যাবে সিংগুলারিটি বা সকল শক্তির উৎস বা দ্যা সোর্স অব অল ফোর্সেস। হলিউডের আরেক মুভি স্টার ট্রাকে এরকম সোর্স খুঁজতে খুঁজতে শেষে দেখান হয় যে তারা সেই পুরাতন আনুমানিক ১৯৮০ সালে প্রেরিত স্পেস ক্র্যাফ্ট ‘ভয়েজার’ এর ধ্বংশাবশেষ খুঁজে পেয়েছে যা থেকে অজানা সংকেত আসছিল। যাকে তারা মহাবিশ্বর অজানা অঞ্চল হতে আগত বিস্ময়কর বার্তা বলে ভুল করেছিল। এত আকাশ কুসুম কথা মালার কারণ আর কিছুই নয়, বেলুন গুল কোথায় আর এই ফোর্স গুল কেন বিশ্বচরাচরে বিরাজ করছে তার আদি কারণ মানুষ এখনও পুরপুরি বুঝতে পারে নাই। একটাই বাই-ডিফল্ট উত্তর আছে তা হল, এ সবই স্রষ্টা’র ইরাদা বা ইচ্ছা। এই উত্তরটা সকল অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য যা কোন সন্দেহ প্রকাশ ছাড়াই মেনে নেয়া যায়। যা মানুষের সকল অনুসন্ধিৎসা প্রেরণার ফুল স্টপ।

একবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ এর এক জার্নালে পড়েছিলাম বৃত্তের পরিধি আর ব্যাস এর অনুপাতে এক অনন্ত সংখ্যা ”পাই=৩.১৪১৫৯......” বিদ্যমান আছে, যার মানে হল বৃত্তের পরিধি আর ব্যাস এর মধ্যে অনন্ত পার্থক্য লুকায়ে আছে। এই বিশ্ব চরারটাও মনে হয় এক মহা গোলক ধাঁধাঁ যার কারণে এর সিমানা আছে কিন্তু কিনারা নাই। ব্যাপারটা অনেকটা সেই গ্রীক দার্শনিক জেনোর কচ্ছপ এর স্টেডিয়ামের কেন্দ্রে পৌছাতে না পারার প্যারাডক্স এর মত। কচ্ছপটাকে স্টেডিয়ামের কেন্দ্রে পৌছাতে হলে তাকে তার অর্ধেকটা পেরতে হবে কিন্তু তা করতে হলে অর্ধেক দূরত্বের অর্ধেকটা তো পেরুতে হবে --- এভাবে অর্ধেকটা পার হতে হতে সে আর পুরটা পার হতে পারে না। তাই বিশ্ব চরাচরে শুধু এক আছে কারণ এক হতে দুই এ পৌছাতে পুরটার অর্ধেকের মাঝে যে অনন্ত অর্ধেক আছে তাতে সবাই হারায়ে যাবে। সেই অর্ধেকটা আর কখনই শেষ হবে না। এক হতে দুই এর দূরত্ব তাই অসীম যেখানে এক্স টেন্ডস টু ইনফিনিটি। এ এক অসীম অন্ধকারে ঝপ দেয়ার মত ব্যাপার। যেমনটা ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ গহ্বরে হয়ে থাকে যা থেকে এমনকি আলোর কণাও বের হয়ে আসতে পারে না। এই প্রক্ষিতে বলা যায় এক আর দুই এর মাঝে একটা বড় ব্ল্যাক হোল আছে যা সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান সীমিত।

ইউ-টিউবে মিশিকো কাকা’র পদার্থ বিদ্যার ডকুমেন্টারি দেখে তো মহা ধাক্কা খেলাম, তিনি এত সুন্দর করে সব ব্যাখ্যা করল মনে হল নতুন করে শুনছি সব। নিউটন গাছের আপেল পড়া দেখে কেবল গ্র্যাভিটেশন নিয়ে সূত্র আবিষ্কার করেন নাই, বরং তার প্রশ্ন ছিল যদি আপেল গাছ থেকে মাটিতে পড়ে তা হলে চাঁদটা কেন মাটিতে পড়ছে না, পরে নিউটন বুঝলেন চাঁদটা ক্রমাগত পড়ছে কিন্তু সূর্য তাকে পেছনে টানছে বলে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ছে না। এর পরবর্তীতে হ্যালির ধূমকেতুর গতিপথ মাপতে গিয়ে আর আর তথ্য তিনি আবিষ্কার করেন। তার কাজ কর্মর পিছনে একজন প্রভাবশালী ও অর্থশালী ব্যক্তি ছিল যিনি তাঁকে আর্থিক ও মানসিক ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন। এই নিউটন’ও নাকি ফ্রি-মেসন ছিল, এই ফ্রি-মেসনরা তো মুসলমানদের দেখতে পারে না, আর এই নিউটন ব্যক্তি হিসেবেও খুব হিংসুটে আর দুরঅভিষন্ধীকারি ছিলনে বলে বইয়ে পড়েছি। ব্রিটিশ রয়াল সোসাইটিতে তার অনেক গল্প কথা আছে, শুনেছিলাম কোন এক সময়। আন-মুভড্-মুভার সেই মহান স্রষ্টা এক ও সম্পূর্ণ –এই ধর্ম বোধ থেকে হয়ত আমরা উত্তরটা পাই অন্য ভাবে। তাঁহার ইচ্ছাই যথেষ্ট কারণ হওয়ার জন্য। এটা সম্পূর্ণরূপে আবদ্ধ একটা মহা-স্থান, এতটাই বিশাল যা আমাদের অনুধাবনের অতীত। এর বাইরে কি আছে তা আমাদের পক্ষে জানা সম্ভব নয় তেমনি এটি আসলে কোথায় আছে তা জানাও সম্ভব নয়। আর জেনে হবেটাই বা কি? এত শত কোটি আলোকবর্ষ যাওয়ার আগেই তো মরে ভুত হয়ে যাব, তা হলে যদি জানতেও পারি তাতে লাভটা কোথায়? তাই অত গভীর চিন্তা বাদ দিয়ে আসুন সবাই সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে মরার জন্য অপেক্ষা করি। শেষোক্ত উক্তিটি মারাত্মক রকম নেতিবাচক, এই মনোভঙ্গই মানুষের স্বভাবসিদ্ধ নয় মোটেও। এরূপ মনে করলে নতুন আবিষ্কারের সব পথ বন্ধ হয়ে যেত। মানুষ মাত্রই অনুসন্ধান করে আর জানার তাগিদে, নতুন জ্ঞানের সম্ভাবনা তাকে আর জানতে আর আবিষ্কার করতে সব সময় সামনের দিকে ঠেলে দেয়। তাই অধিবিদ্য ধার্মিক মানুষিকতা মুক্ত প্রগতিশীল মানুষিকতার বিপরীতে কাজ করে। হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এমন এক যানবাহন নির্মাণ সম্ভব হবে যা দিয়ে ১০০ আলোকবর্ষ প্রতি ঘণ্টায় বা ১০০ লাইট ইয়ার পার আওয়ার বেগের স্পেস সাটলে করে আমার বৃদ্ধ নাতি কিংবা যুবক পুতি তার নতুন গন্তব্য টাইটানের পথে রওনা হবে। আর তখন মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ২৫০ বছরও হয়ে যেতে পারে। এটা বিজ্ঞান কল্প কাহিনী মনে হলেও বাস্তবে তা হতেই পারে আজি হতে দু/এক শত বর্ষ পরে। 

ফিবোনাক্কি রাশিমালা ১, ১+১=২, ১+২=৩, ২+৩=৫ এভাবে ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১ --- যার একটা অনুপাত বিশ্ব চরাচরে প্রকট ভাবে ধরা পরে। প্রকৃতির গাছপালার পত্র পল্লব বিন্যাস সহ বিভিন্ন প্রাণী ও মানুষের চেহারা ও হাত ও পা এর আনুপাতিক বিন্যাসে যার একটা বিকট প্রভাব লক্ষ করা যায়। এ সূত্র ধরে পাশ্চাত্যের এক লোক নিজেকে আলোকপ্রাপ্ত অলৌকিক জ্ঞানের অধিকারী  দাবি করে বসেছিল। সে সব বুঝে গেছে প্রকৃতির রহস্য আর তার অনেক অনুরক্ত অনুসারীয় তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সকল সমস্যার ব্যাখ্যা দানকারী হিসেবে অনেকে তাকে মেনেও নিতে চেয়েছিল। কিন্তু যা ভণ্ড তা তো ভণ্ডই থেকে যাবে তাই এক সময় তার অবসানও হয়েছে। একের উপর আরেক টিক চিহ্ন দিতে থাকলে যে বরফি গুল তৈরি হয়ে যায় তাকে রাশিমালায় প্লট করলেও এক অদ্ভুত সংখ্যার সারি পাওয়া যায় যা এ রকম ১, ৩, ৬,১০, ১৫ আর এটাকে যদি গণিত দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় তা আমি উদঘাটন করেছিলাম ক্লাস নাইনে। যে সূত্র দিয়ে কতটা টিক চিহ্ন পর পর দিলে কতটা বরফি হবে তার সূত্র বের করতে পরে আমি যার পর নাই বিচলিত ও চমৎকৃত হয়েছিলাম। প্রকৃতিকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করার জন্যই তো গণিতের প্রচলন হয়। সেই গণিত দিয়েই হকিংস মহোদয় বুঝতে পেরেছেন যে মহাবিশ্বটার সসীম কিন্তু এর কিনারা খুঁজে পাওয়া যাবে না। তার মানে হল এটা একটা মহা গোলক এর মত কিছু একটা।

ধরা যাক মানুষ সব জেনে গেল, মানে হল এই মহা বেলুনটি বা বেলুন গুল কোথায় আছে আর এই সম্প্রসারমান মহাবিশ্বটা কতখানি প্রসারিত হতে থাকবে বা হতে পারবে। এই কতখানি আর কোথায় জানতে চাওয়ার উদ্দেশ্য হল আমরা সীমানা খুঁজছি। সীমানা বিহীন উপপাদ্য আমাদের বোধগম্যতার বাইরের বিষয়। আমরা সব সময় সীমানা যুক্ত বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা করতে অভ্যস্থ। অসীম বা সীমাহীন বিষয়াবলী সম্পর্কে মানব জ্ঞান বিস্তার লাভ করেতে পারেনি এখনও। ইনফিনিটি এমন একটা রাশি যা নিয়ে গবেষনা করার উপায়ও বোধ হয় বেশী নাই। হয়ত অদূর ভবিষ্যতে আরেক নিউটন এসে অসীম নিয়ে ক্যালকুলাস রচনা করে যাবেন। ততদিন আমরা অন্ধকারেই থেকে যাব যদি না ইতোমধ্যেই সেই চেষ্টা কেউ শুরু করে না দেয়। হলিউড অভিনেতা জিম ক্যারির ইয়েস ম্যান মুভিটার শেষে যখন আকাশটা একটা বিশালাকায় ওয়াল পেপার হিসেবে দেখান হয়। যা নায়ক ছবির শেষে ছিঁড়ে ফেলে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করে, তখন দর্শকদের মধ্যে এক প্রকার বিজাতীয় বিভ্রান্তিকর অনুভূতি হয়। সব জেনে গেলে মানব সকলের সেরকম বিজাতীয় বিব্রতকর অনুভূতি হবে নি-সন্দেহে। তাই এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করতেও মানব সকল ভয় পায় বলে মনে হয়।

সবকিছু ব্যাখ্যা করে দিলে মানুষের সকল চিন্তা ভাবনাই তো বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে কেবল থাকবে সৃষ্টিশীল মানুষের নতুন দিগন্ত উন্মচনের বাসনা। যখনই নতুন বলা হবে তখনই বুঝতে হবে সেখানে অজানা কিছু আছে। মানুষ সবজান্তা হতে চায় কিন্তু সব বলে দিলে তা কি সে হজম করতে পারবে? সকল ধর্মই দাবি করে তা সব কিছুর সমাধান দিয়ে দিয়েছে। কি থেকে কি হলো, এর পর কি হবে, এত সব কিছু কি জন্য সবই তা ব্যাখ্যা করে তার পরও তারা অজানা একটা দরজা ঠিকই রেখে দেয় যাতে মানুষ আশাহত হয়ে না পারে। ধরুন আপনি ইহজগতে সফলকাম ও তার পর অনন্ত সৌভাগ্যে স্বর্গে বসবাসরত। এই অনন্তও তো অসীম ধারণা যা মানব জ্ঞানের জন্য অস্বস্তিকর একটি বিষয়। ইটারনাল, ইটারনিটি বা মহাকাল মানব জ্ঞানের অতীত যা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা মানব অধিবিদ্যা কিংবা দ্বান্দিকতা বুঝতে অক্ষম। সংখ্যা দিয়ে প্রকৃতিকে বুঝতে চেষ্টা করেছে মানুষ কিন্তু সংখ্যা’র দর্শনগুলোর মাঝে বিস্তর ফাঁক ফোকর বিদ্যমান। কাল্পনিক সংখ্যা আর প্রতি পদার্থর মত অজানা রহস্যগুলো মানব জ্ঞান আজও পুরোপুরি বুঝতে পারেনি। এ সকল বিষয় নিয়ে ফ্র্যাকটাল জিওমেট্রি তে বিস্তর গবেষণা চলছে হয়তো। মহাশূন্য বলে আমরা যা জানি তা যে মোটেও শূন্য নয় বরং ব্ল্যাক মেটার দিয়ে ভরা তা বুঝার পূর্ণ ক্ষমতাও মানব জ্ঞান সম্পন্ন করতে পারে নাই। কেন্দ্রাতিগ বলে গ্যালাক্সির কেন্দ্রের কাছাকাছি গ্রহ নক্ষত্র গুল জোরে ঘুরার কথা তা না করে তারা নানা গতিতে ঘূর্ণায়মান আর এই রহস্য নিয়েই ব্ল্যাক ম্যাটারের হাইপোথিসিস কল্পনা করেছেন বিজ্ঞানীরা যা নিয়ে গবেষণা চলমান।

জনপ্রিয় ধর্মীয় বক্তা ইমরান নজর হোসেনের গুরু ফজলুর রহমান আনসারী তাঁকে বলতেন অভ্যন্তরের সূত্র গুল এমন ভাবে বিন্যাস্ত হওয়া উচিত যাতে তা বৃহত্তর চিত্রটাকে ফুটায়ে তুলতে পারে। এই বক্তব্যটা মনে হয় অবরোহী চিন্তা ধারা যা ইংরেজিতে যেমন বলা হয় “এন্ডস জাস্টিফাইস দ্যা মিন্স” কিংবা কি গাছ ফলে পরিচয় এই চিন্তা প্রক্রিয়াকে নির্দেশ করে। বাস্তবতা বিচারে ফল থেকে বীজে-এ বা গাছে পৌছতে হবে, অর্থাৎ বাস্তবতার বিচারে অবরোহী হতে মানব বাধ্য কারণ বাস্তবতার অজস্র ঘটনা বিশ্লেষণ করে এর সমগ্রতে পৌঁছানর জন্য যে বিপুল ক্ষমতা প্রয়োজন তা একক কিংবা গোষ্ঠিগত জোটবদ্ধ মানুষের নাই, আজকের প্রজন্মের সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করেও তার সমাধান করা প্রায় অসম্ভব। তার চেয়ে যা প্রকাশ্য বা যা এ্যাপিয়ার করে তা থেকে এর মূলে পৌঁছন মনে হয় অধিকতর সহজ। বিশ্ব প্রকৃতিতে একক কে ভেঙ্গে দুইটা দিক (ভাল-মন্দ, ধনাত্মক-ঋণাত্মক, পুং-স্ত্রী, ইত্যাদি) সব কিছুর আর এ দুটো দিকের মধ্যে ফিউশন বা ফ্রিকশান করালেই যত বিপত্তি কিংবা নতুনের উৎপত্তি। এটা একটা ডিজাইন মোটা দাগে যার কোন ব্যতিক্রম নাই প্রকাশ্য প্রকৃতিতে। এই দ্বি-ভাজিত বা বাই-ফোল্ড বিশ্বটা কেন এ রকম? আমাদের চেহারাতেও বাই ফোল্ড ফিচার আছে, যেন নাক বরাবর চিরে দিলে দুটো মানুষের চেহারা পাওয়া যাবে মনে হয়। যখন এক এর অধিক একাধিক বলব তখন গ্রীক দার্শনিক জেনর প্যারাডক্সের মধ্যে পড়ে যাব, যার মীমাংসা করার অপারগতা মানবীয় সীমাবদ্ধতা। এক ও দুই এর মাঝেই অনন্ত গহ্বর বিদ্যমান যার মানে হল এক ও দুই এর মাঝে অনন্ত সংখ্যামালা যায়গা করে নিতে পারবে। যার কারণে জেন’র কচ্ছপটা স্টেডিয়ামের কেন্দ্রে আজও পৌছাতে পারে নাই। আর এক এর অধিক মানেই তা বহু আর যা বহু তা সতত বহুর মাঝে অনন্তে আর বহু। এটা বুঝার অক্ষমতাও মানবীয় সীমাবদ্ধতা। তাই বিশ্ব চরাচরে দুটো বলে কিছু নাই বরং সবই একই অমীমাংসিত দুর্বোধ্য বাস্তবতা। মানব মনের চিন্তার সীমা এ সব জায়গাতে দেয়াল দেয়া, যার কারণে পুরপুরি সত্যটা আর দেখা যায় না।

আপডেট হিস্ট্রি: ২৩জুন২০২০> ১৬সেপ্টেম্বর২০২০>  25জানু2021> ২৯জানু২০২১> ৩ফেব্রুয়ারী২০২১>

1 comment: