ও মা বলে কি গো? দু দিনের সন্ন্যাসী ভাতে রে কয় অন্য ! এক খান বই লিকেচে তাতেই তিনি ধন্য, লিখা শুরু করেছে রম্য রচনা, বলে কি গো ভা-য়া-ই?। ভা-য়া-ই শব্দটা সর্বনাম বাচক হয়ে গেছে, ছোট, বড়, ছেলে বুড়ো, এমনকি মেয়েরাও আজকাল শুনি প্রায়শই বলে থাকে “কি করি ভা-য়া-ই” । ঢাকাইয়া প্রবচন “আবে হালায় কয় কি” সেই হালার মত শব্দটার ব্যবহার ইদানীং বেড়েই চলেছে। আমরা তো পাকিস্তানীই ছিলাম হঠাৎ করে কি মনে হলো আমরা তারও আগে বঙ্গ-বিহার-উরিষ্যার বাঙ্গাল ছিলাম, তা হলে চলো ভোল পাল্টাই, কিন্তু এ কি? শরীররে তো পর পর দু বার অস্ত্রোপচার হয়ে আবার জোড়া লেগেছে, মানে সিজার হয়ে গেছে। বঙ্গ দুবার ভেঙ্গে গেছে শেষ বার আর জোড়া লাগেনি। একবার বঙ্গভঙ্গে আরেকবার পেকে গিয়ে, মানে কি না ওই পাঁক পবিত্র হতে গিয়ে। আমরা মুসলিম বাঙ্গালী তাই মুসলিম লীগ যা ব্রিটিশ মুক্ত ভারতে করতে পারে নাই তারা দেশ ভাগ করে সেই সাধ মিটিয়েছিল। আমাদের তবে কি হবে গো ভা-য়া-ই? আমরা তো একাধারে মুসলিম আবার বাঙ্গালীও, শরীরের এক অংশ তো গ্যংরিনের মত ভারত খেয়ে ফেলেছে, ওই অংশ এতটাই পচেছে যে তারা তো বঙ্গ ভূমিকে আর একত্রিত দেখতেও চায় না। তারা এখনও এক ভাষী কিন্তু ভিন্ন জাতী যাদের জাতীয়তাও ভিন্ন, ”হামারা ইন্ডিয়া” হয়ে গেছে। আমরা বাংলা অ আ ক খ ছেড়ে আরবি অক্ষরে কি আর বংলা লিখতে পারি? তাই কি ”ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়” আন্দোলন করেছিল সালাম, বরকতরা? আত্মাহুতি দিয়েছিল ৫২তে? শরীরের এক অংশ পচে গেছে দেখে কি আমরা হাল ছেড়ে দেবো বেচে উঠার? হয় রে হয় মাদুল ছুটে যায়, মেঘ গুড় গুড় করে চাঁদের সীমানায়, সরি ধিতাং ধিতাং গানটার প্যারোডি হয়ে গেল না তো আবার? তা তো আমরা করেছিই, ব্রিটিশ রা যখন আলিয়া মাদ্রাসা করলো তখন খানকা শরীফগুলো ধর্মের জিকির জারি রাখলো, তার পর যখন পাকিস্তান হলো তখন কওমীরা আসলো, আলীয়া ওরা তো আলেয়া, খাড়ায় খাড়ায় কি জানি কি করে, ওরা আবার সুদ্ধ সাধু হয় কি করে। কওমীরাই পারবে কায়েম করতে। তাই এক দিকে মম পাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ তুর্য। আমি তাথিয়া তাথিয়া মাতিয়া ফিরি পল্টন শাহবাগ মঞ্চ। একদিকে পাক্কা মুসলমান আরেক দিকে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মঙ্গল শোভা যাত্রা করি, কই যাই রে ভা-য়া-ই? আমরা খেয়েচ্ছো, করিচ্ছো, ঘুমাইচ্ছো জাতের কুলীন বাঙ্গাল না, খাইসি করসি ঘুমাইসি জাতীয় যাচ্ছে তাই বাঙ্গালী তাই প্রাকৃত ভাষায় কথা কই, কিছু মনে কইরেন না কো ভা-য়া-ই। নিজের দেশের ছোটু ছোটু পোলাপাইন ভাইয়ারা / বোইনেরা অহন আমাগো মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায় ! কই রে যাই ! ভা-য়া-ই?
অনেক আগে সমাজবিদ্যায় পড়েছিলাম কয়েকটা ধর্মীয়, ভাষার জাতি একত্রিত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করতেই পারে বেলজিয়াম সেরকম, ভারতও সেরকম, কিন্তু আমরা এতটা হোমজেনাস, মানে একই ভাষায় কথা বলি, একই রকম কপড় পড়ি তার পরও এক জাতি হয়ে উঠতে পারছি না কেন। ওই যে হুজুগটা মাত্রাতিরিক্ত, মাতামাতি করতে খুব পছন্দ করি, তাই অতি ঘনিষ্ঠ সবাই। কয়েকটা খালি পাতিল কাছাকাছি রাখলে ঠনঠনানি বাড়ে । ঠনঠনানি বাড়তে বাড়তে ঠুনকো জাতি হয়ে গেছি আমরা, কেউ কাউকে আর বিশ্বাস করতে পারছি না। ওই যে বলে না, খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হইও না, তাতে দেখবা পরস্পরের প্রতি ঘৃণার জন্ম নিবে। তা-য়া-ই হইছে রে ভা-য়া-ই।
এবার তবে গেন-জি থুরি জেন-জী দের সম্পর্কে বলি, ওরা নাকি ভিনগ্রহ থেকে নেমে এসেছে. ২এক্স ৩এক্স স্পিডে অনলাইন ভয়েস ম্যাসেজ শুনে থাকে। ওদের আছে এআই ব্যবহারের সক্ষমতা। কতক পত্রিকায় বিশিষ্ট জনেরা তাহাদিগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যারা তাদের শিক্ষকদের ধইরা জুতাইতে পারে তারা ভীনগ্রহবাসী হইলেও হইতে পারে, তাতে আর কি বা অবাক হওয়ার আছে ভা-য়া-ই। ওরা দেশের তামাম দেয়াল বিদ্রহের আগুনে পুড়াইয়া স্বহস্তে শিল্প রচনা করিয়া প্রমাণ করিয়াছে তাহারা বিশেষ প্রজাতি। বেইলি রোডের দেয়াল লিখন গুলো তো বার্জার পেইন্ট স্পনসরও করেছে দেখলাম। কি আপার শক্তি গেঞ্জির, সবাই দেয়াল লিখন আর্টিস্ট। কিশোর গ্যাং দেরই এখন জয় জয়কার। জয় বাংলা, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ফেল মারলো কোই থন ইনখেলাফ পত্রিকা প্রকাশ হওয়া শুরু করলো বুঝতেই পারলাম না, বুঝুম কেমতে, আমরা তো জেন-ও মানে ওল্ড জেনারেশন, আমার অত শত বুঝবার পারমু কেমতে। হলিউড্ডা একটা মুভি দেখছিলাম বহু আগে নাম ছিল ইনাফ ইজ ইনাফ, ভুল শুনেন না ভা-য়া-ই ইনসাফ ইজ ইনসাফ না কিন্তু। এটা হলো আমার বাপের সেই মাইর কারে কয় সেই স্মৃতি। জীবনে একবারই খাইছিলাম আর আজও পছতাইতাছি। আমার মত শান্ত শিষ্ট লেজ বিশিষ্ট পোলাও যে বাচ্চা কালে বিগড়াইয়া গেছিলাম সেদিন বাপের মাইর খাইয়া বাপ বাপ কইরা টের পাইছিলাম। আজকাল পোলাপাইন গো বাপ-মা ভয় পায়, শিক্ষকরাও। পিনাকী ভট্টাচারিয়া মোহদয়ের তেড়া তেড়া কথন বাক্য চয়ন দেখিয়া ভড়কাইয়া গেছিলাম। হের কথা বার্তা প্রসঙ্গে আমার পঠনপ্রিয় আলি ভাই তাহার সম্পর্কে যে সাধু বাদ ব্যক্ত করিয়াছিল তাহা মনে করিয়া নিজেকে সংবরণ করিয়াছি বটে। এত পন্ডিত ব্যক্তি কথায় বার্তায় যে এত ক্ষোভ প্রকাশ পায়, উনাকে আমার মতে এক দিনকার রাষ্ট্র নায়ক করে দেয়া উচিত। উনি স্পন্দিত হইয়া উনার বাক্য, বচন, উক্তি শৈলী সকলকে শিখাইয়া দিয়া যাইবেনে ভা-য়া-ই। মহা জ্ঞানী মহা জন যে পথে করে গমন হয়েছেন প্রাতঃ স্মরণীয় সেই পথ লক্ষ্য করিয়া চক্ষু দুটি বন্ধ করি তাহার কথায় মগ্ন হই আমার মরিয়া যাইতে ইচ্ছা করিতেছিল। গেঞ্জিদের বলতে চাই ভা-য়া-ই ভয় পাইছি, বাপের নাম, দাদার নাম পাল্টাতে বলছো তো ছোট ভায়েরা আমার, বড় আদরের ভায়েরা, হলপ করিতেছি যে, উহাদিগের নাম আর ইহকালে মুখেই লইবই না। এই যাও ভুলিয়া গেলাম ভা-য়া-ই।
আমার লেখা তাও নাকি অনেকে পড়ে, তবে চুপি চুপি পড়ে আমি বুঝতেই পারি না, গেঞ্জিদের শক্তির উত্থানে উনারা আমাকে বারং বার ফিস ফিস করিয়া সতর্ক করিয়া গেছেন, আপনি কিন্তু লেখেন ভাই, সাবধানে লেইখেন, পাছে না আপনি কালার্ড হয়ে যান। আরে ভাই ভয় পাবো কাকে, পাকিস্তান আর্মিকে নাকি ভারতীয় আর্মিকে? আজকাল তো সবাই আর্মি কারণ সবার কাছেই অস্ত্র আছে, তা চুড়ি, কাছি থুরি ছুরি, কাচি হোক আর পিস্তল রিভলভার, সবাই রাজা আামাদের এই রাজার রাজত্বে, নইলে মোরা রাজার সানে খাইবো কি শর্তে? জেড রে যে ইংরেজি উচ্চারণে জী হুজুর বলে তা তো এই সেদিন মাত্র জানলাম যখন জী টিভি প্রচার শুরু করলো, আমি খালি জী খুজতাম দেখি লেখা উঠে জেড। জেড এর ড লাত্থী দিয়া জী হয়ে গেল, তাই তো আমরা মত জেন-ও জানলো মাত্র সেদিন, আমরা আর কি বুঝমু ভা-য়া-ই? কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, জেড যদি জী হয় তবে জি কি হবে, এটা কি ইফ যদি ইজ হয় বাট কিন্তু হোয়াট কি হবে রে ভা-য়া-ই?
আমার এই লেখাটা কি ব্যাঙ্গ, রম্য না রঙ্গ বুঝাতেছি ণ, ভাষা বর্ণনায় মিশাল দিয়া ফালাইছি, কথ্য, আঞ্চলিক আর সাধু ঘোটা মিক্স হয়ে গেছে, ঠিক যেমনটা আমাদের দেশের লোকজনের রক্তে হয়ে আসছে বংশ পরম্পরায় ধরে। এবার তবে ব্যঙ্গ রচনায় ঘোড়া টানি আনি ভা-য়া-ই? টুইস্ট না থাকলে কি খেলা জমে? তা যে খেলাই হোক, যত টুইস্ট তাত মজা।
ত্রিশ বছর আগেই আমি এই দ্বন্দটির কথা বলেছিলাম। দ্বন্দ মানে হোল টর্ক, এটা কিন্তু পদার্থবিদ্যায় যেমন পড়ানো হয় তেমনি মনোবিদ্যারও একটি পঠিত বিষয়। যদি গতি থাকে তবে দ্বন্দ থাকবেই, টর্ক তাই খুব স্বাভাবিক একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। একটু উদাহারণ দিয়ে বলি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তখনও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আন্দোলন হচ্ছে একে পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় করার। আনুমানিক ১৯৯২ সালে শত বর্ষ পূর্তিতে বিশাল আয়োজনে পুর ক্যাম্পাসের প্রতিটি অনুষদে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়েছিল । আমি মনোবিদ্যা অনুষদের স্টলে এক ছেলেকে দুই দিকে দুটা লাইট আর একটা কাগজে ভি আকা দেখে আকৃষ্ট হই কাছে যাই, সে আমাকে কলম হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল ভি এর ক্রান্তি বিন্দুতে কলমের নিবটা রাখতে, সে যে দিকের আলো জ্বালাবে সেদিকে আমি কলম চালাবো। এভাবে সে এক সময় ডানদিকেরটা জালায় তো পরের বার বাম দিকের টা, আমিও যথারীতি ভি এর দুই বাহু বরাবর কলম চালাচ্ছি, হঠাৎ একসময় সে এক সাথে দুটা বাতি জ্বেলে দেয় আর আমি থমকে যাই। তাকায়ে দেখি সে বিমল হাসি দিয়ে বলছে এটাই মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। মাথামুন্ডু তখন কিছুই বুঝি নাই, শুধু বুঝেছি, যারা মনোবিদ্যায় পড়ে তাদের বেশির ভাগই আধা পাগল হয়, এটাও তার একটা নমুনা হবে হয়তো। অনেক পরে বুঝেছি, আমাদের জীবনে এভাবেই অনেক সময়ই এরকম দুদিকের বাতি জ্বলে উঠে আর আমরা থমকে যাই। ওই আধ-পাগলাটা আমাকে আরো বলেছিল, মানুষ যখন দ্বন্দ্বে পড়ে যায় তখন সে কালক্ষেপণ করে বা থমকে যায়, যা সময়ের অপচয়, তার উচিত যে কোন একটাকে বেছে আগায়ে যাওয়া, তাতে তার অপর্চুনিটি লস কমে যাবে। আমি ওই সময়ের বহুবছর পর ব্যবসা প্রশাসন পাঠকালে অপরচুনিটি লস কাকে বলে বুঝেছি, তাই ওই সময় ওই ছাত্রটিকে আমার আধপাগলাই মনে হয়েছিল। জাতির সামনে তাই আজ প্রশ্ন, এই দ্বিধায় পড়ে থ মেরে বসে থাকবেন না কি কচু কাটা শুরু করবেন?
জুলাই ২০২৪ এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন (জুলাই বিপ্লব-২০২৪) পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ পর্যালোচনায় আমি বিভ্রান্ত বোধ করছিলাম। ৬ মাস পর বুঝতে পারলাম মূল দ্বন্দ্বটা কোথায় আর তখন অবাক হয়ে দেখলাম এই প্রসঙ্গে আমার বন্ধু আড্ডায় বলা সেই কথাটা এতদিনে বাস্তবতায় আত্মপ্রকাশ করছে? পদার্থবিদ্যার ছাত্র আমি তখন, কলেজ বন্ধু জিয়ার বাসায় আমার প্রায়ই যাওয়া হতো। আনুমানিক ১৯৯৫ সালের দিকে সেরকম একদিন কয়েকজন বন্ধু আমরা সমবেত হয়েছিলাম ওর বাসায় আর তখন কথা প্রসঙ্গে আমি বলেছিলাম, দেশে দুটি ভিন্ন ধারার শিক্ষাক্রম বা ব্যবস্থা চলমান আছে, এক সময় না এক সময় এই দুই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে একধরনের সংঘর্ষ হবেই। সেই সংঘর্ষ কেন হচ্ছিল না তা আমি বুঝতে পারতাম না কিন্তু ৩০ বছর পর আজ যা দেখছি সেই সংঘাতের জায়গাটাই ফুটে উঠেছে। স্যামুয়েল এইচ হানটিংটনের বিখ্যাত গবেষণা পত্র ”ক্ল্যেস অব সিভিলাইজেশনস” প্রসঙ্গে প্রথম জানতে পারি ২০০৪ সালে সোনালী ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিভিশনে কর্মরত অবস্থায় শ্রদ্ধেয় আলফাজ স্যারের কাছে। তার সেই আর্টিক্যাল পড়ার বহু আগেই আমি এই সংষ্কৃতিগত ক্ল্যেস যে অবধারিত তা বুঝতে পেরেছিলাম।
দ্বিজাতি তত্ত্ব ২ বার ভেঙ্গেছিল দেশ, আবারও কি ভাংতে চাচ্ছে? বাংলা বিহার উড়িষ্যা নিয়ে যে বঙ্গ তাও ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল, ১৯০৫ সালে, পরে স্বদেশী আন্দোলন আর বঙ্গভঙ্গ রদ ১৯১৫ সালে, লর্ড হার্ডিঞ্জ এর ঢাকায় আগমন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশ্বাস দিয়ে এপার বাংলার সহজ সরল মানুষগুলোর চোখে ধুলো দিয়েছিল। পরবর্তীতে শের-ই-বাংলা’র দ্বিজাটি তত্ত্ব ছিল অনেকটা এরকম, মোঘল আমলে মুসলিম প্রাধান্য (বৈষম্য) আর ইংরেজ আমলে হিন্দু জমিদারদের আধিপত্য (বৈষম্য) মূলত আসমুদ্রহিমাচলে দুইটি জাতির জন্ম দিয়েছে, যাদের এক করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়, তাই যদি দেশটাকে স্বাধীনতা দিতে হয়ে তবে তাকে পাকিস্তান আর হিন্দুস্তান এই দুই ভাগে ভাগ করাটা যুক্তি যুক্ত, এই মতের ঐতিহাসিক প্রমাণ আজ ভারত ও পাকিস্তান যা মহাত্মা গান্ধি চাননি, তিনি দ্বিজাটি তত্ত্বের বিরোধী ছিলেন কিন্তু তাতে তিনি সফল হননি। আমার বিচার বোধে বাংলাদেশের এই বর্তমান সংকটটিও একটি নব্য দ্বি-জাতি বিভেদের ফলশ্রুতি। বিভেদটা স্বাধীনতার পক্ষের বিপক্ষের শক্তি নয়, বিভেদটা অন্য জায়গায়। দুই বিপরীত ধারার শিক্ষাক্রমই এই সংকটের মূল যা ছিল আমার ৩০ বছর আগের একটি অনুমান। আমার এককালের সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাড়িতে এক আড্ডায় বলেছিলাম কথাটা। আচ্ছা আমাকে একটু বুঝায়ে বলবেন কি? একই দেশে দুই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা কেন ছিল এতদিন? দুই ধারার শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে এক সময় সংঘাত হবেই তা আমি ৩০ বছর আগে আমার মত আবে হালায় বুঝেছিল। আমি অবাক হতাম হচ্ছে না কেন তা চিন্তা করে। হওয়াটা তো স্বাভাবিক ছিল আরো বহু বছর আগেই। এখন বুঝি কেন হয়নি, পশ্চিমা ধারার শিক্ষাক্রমে যারা শিক্ষিত তারা এগিয়ে ছিল আর মাদ্রাসা ধারায় যারা শিক্ষিত তারা পেছনে ছিল, আজ তারা তাদের দাবি নিয়ে সামনে আগাতে শুরু করেছে, কারণ আর কিছুই না, এই দেশটা তে তো তাদেরও সমান অধিকার, তা হলে কেন পশ্চিমা ধারায় শিক্ষিতরাই কেবল সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে? পুর দেশ ইসলাম বান্ধব আর সেই ধারার শিক্ষিত মানুষেরা পশ্চাদপদ হিসেবে সমাজে অবহেলিত, তা কি করে হয় ভা-য়া-ই? তাই আজ সংঘাতটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
বাস্তবতা সবাই এক সাথে এক চোখ দিয়ে দেখে না, সবাই খন্ডিত বাস্তবতাটা দেখে, সংবাদ মাধ্যম তাতে হেল্প করে, মানে সবার দৃষ্টিটার সীমাবদ্ধতা দুর করতে হেল্প করে। সংবাদ মাধ্যম গুলোর মাধ্যমে আর বিভিন্ন মানুষ জনের সাথে আড্ডায় আমার হয়তো পুর বাস্তবতার অনেকটাই একসাথে দেখতে পাই, অনেকটা বার্ড আই ভিউর মত। ১৮ কোটি মতান্তরে ৪৩ কোটি জনগোষ্ঠীর সবাইকে খুশি ও শুখি করতে পারে এমন ব্যক্তি তার সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক গন সহ প্রকৃত অর্থে মহামানব। মানব প্রকৃতির কেউ যদি তাতে সফল হয়ও তবে সে মানবাকৃতির অন্য কিছু হবে হয়তো। এই রাজনৈতিক টানা-পোড়নটা আমার মানসে প্রচন্ড ঝড় তুলেছে, কোন কিছু ঠিক মত করতেই পারতেছিনা। চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে প্রাত্যহিক কাজে সব গন্ডোগোল বেধে যাচ্ছে। আমার সন্তানদের আমি বিগত বছরে একটা কথা খুব গুরুত্ব দিয়ে শিখাইলি “অনেক মানুষের দেশে জন্মাইছো, এখানে কেউ সেধে দিবে না, কাইরা নিতে হবে” । দেশে এক দল আরেক দলকে সেধে কিছু দিবে না, এক দল আরেক দলের কাছ থেকে কেড়ে নিবে ক্ষমতা, এই সূত্রই আজকালকার রাজনৈতিক বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে মনে হচ্ছে।
আমার সব লেখারেই উপসংহার আছে, এটারটায় বলতে চাই, বিশ্বের অন্যান্য জাতির তুলনায় এ জাতিটা পুরাতন কিন্তু স্বাধীন ভুখন্ড প্রাপ্তির সময়কাল থেকে ধরলে মাত্র তার ৫০ বছর উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই যেন কৈশরিক উন্মাদনা প্রদর্শন করছে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দেন, চারটি গণতান্ত্রিক অধিকার ১)ব্যক্তিগত ২)মালিকানা ৩)বিশ্বাস ৪) বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত নিরঙ্কুশ করে দেন, তা আজ হোক আর কাল হোক দিতেই হবে, নয়তো ”পুনর মুষিকি ভব” জসিমুদ্দিনের সেই গল্পটা সত্য হয়ে যাবে। ভা-য়া-ই মাফ করবেন আমার বাঙ্গালী হওয়ার সাধ মিটে গেছে, আমি এখন ক্যানাডিয়ান হয়ে বাচতে চাই, ও ভাই কেনাডা আমারে নিবা? আমারে পুরাপুরি নেওন লাগবো না, আমার পোলা মাইয়াডিরে নাও দয়া কইরা।
সম্পাদনা ও উন্নয়ন ইতিহাসঃ ২০ফেব্রুয়ারী২০৪> ১০মার্চ২০২৫>২৬মার্চ২০২৫>
No comments:
Post a Comment