Tuesday, March 25, 2025

এটি কি তবে নব্য দ্বি-জাতীয়তা ভা-য়া-ই? - একটি ব্যাঙ্গ, রঙ্গ ও রম্য রচনা।

 

 

ও মা বলে কি গো? দু দিনের সন্ন্যাসী ভাতে রে কয় অন্য ! এক খান বই লিকেচে তাতেই তিনি ধন্য, লিখা শুরু করেছে রম্য রচনা, বলে কি গো ভা-য়া-ই?। ভা-য়া-ই শব্দটা সর্বনাম বাচক হয়ে গেছে, ছোট, বড়, ছেলে বুড়ো, এমনকি মেয়েরাও আজকাল শুনি প্রায়শই বলে থাকে “কি করি ভা-য়া-ই” । ঢাকাইয়া প্রবচন “আবে হালায় কয় কি” সেই হালার মত শব্দটার ব্যবহার ইদানীং বেড়েই চলেছে। আমরা তো পাকিস্তানীই ছিলাম হঠাৎ করে কি মনে হলো আমরা তারও আগে বঙ্গ-বিহার-উরিষ্যার বাঙ্গাল ছিলাম, তা হলে চলো ভোল পাল্টাই, কিন্তু এ কি? শরীররে তো পর পর দু বার অস্ত্রোপচার হয়ে আবার জোড়া লেগেছে, মানে সিজার হয়ে গেছে। বঙ্গ দুবার ভেঙ্গে গেছে শেষ বার আর জোড়া লাগেনি। একবার বঙ্গভঙ্গে আরেকবার পেকে গিয়ে, মানে কি না ওই পাঁক পবিত্র হতে গিয়ে। আমরা মুসলিম বাঙ্গালী তাই মুসলিম লীগ যা ব্রিটিশ মুক্ত ভারতে করতে পারে নাই তারা দেশ ভাগ করে সেই সাধ মিটিয়েছিল। আমাদের তবে কি হবে গো ভা-য়া-ই? আমরা তো একাধারে মুসলিম আবার বাঙ্গালীও, শরীরের এক অংশ তো গ্যংরিনের মত ভারত খেয়ে ফেলেছে, ওই অংশ এতটাই পচেছে যে তারা তো বঙ্গ ভূমিকে আর একত্রিত দেখতেও চায় না। তারা এখনও এক ভাষী কিন্তু ভিন্ন জাতী যাদের জাতীয়তাও ভিন্ন, ”হামারা ইন্ডিয়া” হয়ে গেছে। আমরা বাংলা অ আ ক খ ছেড়ে আরবি অক্ষরে কি আর বংলা লিখতে পারি? তাই কি ”ওরা আমার মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায়” আন্দোলন করেছিল সালাম, বরকতরা? আত্মাহুতি দিয়েছিল ৫২তে? শরীরের এক অংশ পচে গেছে দেখে কি আমরা হাল ছেড়ে দেবো বেচে উঠার? হয় রে হয় মাদুল ছুটে যায়, মেঘ গুড় গুড় করে চাঁদের সীমানায়, সরি ধিতাং ধিতাং গানটার প্যারোডি হয়ে গেল না তো আবার? তা তো আমরা করেছিই, ব্রিটিশ রা যখন আলিয়া মাদ্রাসা করলো তখন খানকা শরীফগুলো ধর্মের জিকির জারি রাখলো, তার পর যখন পাকিস্তান হলো তখন কওমীরা আসলো, আলীয়া ওরা তো আলেয়া, খাড়ায় খাড়ায় কি জানি কি করে, ওরা আবার সুদ্ধ সাধু হয় কি করে। কওমীরাই পারবে কায়েম করতে। তাই এক দিকে মম পাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণ তুর্য। আমি তাথিয়া তাথিয়া মাতিয়া ফিরি পল্টন শাহবাগ মঞ্চ। একদিকে পাক্কা মুসলমান আরেক দিকে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মঙ্গল শোভা যাত্রা করি, কই যাই রে ভা-য়া-ই? আমরা খেয়েচ্ছো, করিচ্ছো, ঘুমাইচ্ছো জাতের কুলীন বাঙ্গাল না, খাইসি করসি ঘুমাইসি জাতীয় যাচ্ছে তাই বাঙ্গালী তাই প্রাকৃত ভাষায় কথা কই, কিছু মনে কইরেন না কো ভা-য়া-ই। নিজের দেশের ছোটু ছোটু  পোলাপাইন ভাইয়ারা / বোইনেরা অহন আমাগো মুখের ভাষা কাইরা নিতে চায় ! কই রে যাই ! ভা-য়া-ই

অনেক আগে সমাজবিদ্যায় পড়েছিলাম কয়েকটা ধর্মীয়, ভাষার জাতি একত্রিত হয়ে একটি রাষ্ট্র গঠন করতেই পারে বেলজিয়াম সেরকম, ভারতও সেরকম, কিন্তু আমরা এতটা হোমজেনাস, মানে একই ভাষায় কথা বলি, একই রকম কপড় পড়ি তার পরও এক জাতি হয়ে উঠতে পারছি না কেন। ওই যে হুজুগটা মাত্রাতিরিক্ত, মাতামাতি করতে খুব পছন্দ করি, তাই অতি ঘনিষ্ঠ সবাই। কয়েকটা খালি পাতিল কাছাকাছি রাখলে ঠনঠনানি বাড়ে । ঠনঠনানি বাড়তে বাড়তে ঠুনকো জাতি হয়ে গেছি আমরা, কেউ কাউকে আর বিশ্বাস করতে পারছি না। ওই যে বলে না, খুব বেশি ঘনিষ্ঠ হইও না, তাতে দেখবা পরস্পরের প্রতি ঘৃণার জন্ম নিবে। তা-য়া-ই হইছে রে ভা-য়া-ই।

এবার তবে গেন-জি থুরি জেন-জী দের সম্পর্কে বলি, ওরা নাকি ভিনগ্রহ থেকে নেমে এসেছে. ২এক্স ৩এক্স স্পিডে অনলাইন ভয়েস ম্যাসেজ শুনে থাকে। ওদের আছে এআই ব্যবহারের সক্ষমতা। কতক পত্রিকায় বিশিষ্ট জনেরা তাহাদিগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। যারা তাদের শিক্ষকদের ধইরা জুতাইতে পারে তারা ভীনগ্রহবাসী হইলেও হইতে পারে, তাতে আর কি বা অবাক হওয়ার আছে ভা-য়া-ই। ওরা দেশের তামাম দেয়াল বিদ্রহের আগুনে পুড়াইয়া স্বহস্তে শিল্প রচনা করিয়া প্রমাণ করিয়াছে তাহারা বিশেষ প্রজাতি। বেইলি রোডের দেয়াল লিখন গুলো তো বার্জার পেইন্ট স্পনসরও করেছে দেখলাম। কি আপার শক্তি গেঞ্জির, সবাই দেয়াল লিখন আর্টিস্ট। কিশোর গ্যাং দেরই এখন জয় জয়কার। জয় বাংলা, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ফেল মারলো কোই থন ইনখেলাফ পত্রিকা প্রকাশ হওয়া শুরু করলো বুঝতেই পারলাম না, বুঝুম কেমতে, আমরা তো জেন-ও মানে ওল্ড জেনারেশন, আমার অত শত বুঝবার পারমু কেমতে। হলিউড্ডা একটা মুভি দেখছিলাম বহু আগে নাম ছিল ইনাফ ইজ ইনাফ, ভুল শুনেন না ভা-য়া-ই ইনসাফ ইজ ইনসাফ না কিন্তু। এটা হলো আমার বাপের সেই মাইর কারে কয় সেই স্মৃতি। জীবনে একবারই খাইছিলাম আর আজও পছতাইতাছি। আমার মত শান্ত শিষ্ট লেজ বিশিষ্ট পোলাও যে বাচ্চা কালে বিগড়াইয়া গেছিলাম সেদিন বাপের মাইর খাইয়া বাপ বাপ কইরা টের পাইছিলাম। আজকাল পোলাপাইন গো বাপ-মা ভয় পায়, শিক্ষকরাও। পিনাকী ভট্টাচারিয়া মোহদয়ের তেড়া তেড়া কথন বাক্য চয়ন দেখিয়া ভড়কাইয়া গেছিলাম। হের কথা বার্তা প্রসঙ্গে আমার পঠনপ্রিয় আলি ভাই তাহার সম্পর্কে যে সাধু বাদ ব্যক্ত করিয়াছিল তাহা মনে করিয়া নিজেকে সংবরণ করিয়াছি বটে। এত পন্ডিত ব্যক্তি কথায় বার্তায় যে এত ক্ষোভ প্রকাশ পায়, উনাকে আমার মতে এক দিনকার রাষ্ট্র নায়ক করে দেয়া উচিত। উনি স্পন্দিত হইয়া উনার বাক্য, বচন, উক্তি শৈলী সকলকে শিখাইয়া দিয়া যাইবেনে ভা-য়া-ই। মহা জ্ঞানী মহা জন যে পথে করে গমন হয়েছেন প্রাতঃ স্মরণীয় সেই পথ লক্ষ্য করিয়া চক্ষু দুটি বন্ধ করি তাহার কথায় মগ্ন হই আমার মরিয়া যাইতে ইচ্ছা করিতেছিল। গেঞ্জিদের বলতে চাই ভা-য়া-ই ভয় পাইছি, বাপের নাম, দাদার নাম পাল্টাতে বলছো তো ছোট ভায়েরা আমার, বড় আদরের ভায়েরা, হলপ করিতেছি যে, উহাদিগের নাম আর ইহকালে মুখেই লইবই না। এই যাও ভুলিয়া গেলাম ভা-য়া-ই

আমার লেখা তাও নাকি অনেকে পড়ে, তবে চুপি চুপি পড়ে আমি বুঝতেই পারি না, গেঞ্জিদের শক্তির উত্থানে উনারা আমাকে বারং বার ফিস ফিস করিয়া সতর্ক করিয়া গেছেন, আপনি কিন্তু লেখেন ভাই, সাবধানে লেইখেন, পাছে না আপনি কালার্ড হয়ে যান। আরে ভাই ভয় পাবো কাকে, পাকিস্তান আর্মিকে নাকি ভারতীয় আর্মিকে? আজকাল তো সবাই আর্মি কারণ সবার কাছেই অস্ত্র আছে, তা চুড়ি, কাছি থুরি ছুরি, কাচি হোক আর পিস্তল রিভলভার, সবাই রাজা আামাদের এই রাজার রাজত্বে, নইলে মোরা রাজার সানে খাইবো কি শর্তে? জেড রে যে ইংরেজি উচ্চারণে জী হুজুর বলে তা তো এই সেদিন মাত্র জানলাম যখন জী টিভি প্রচার শুরু করলো, আমি খালি জী খুজতাম দেখি লেখা উঠে জেড। জেড এর ড লাত্থী দিয়া জী হয়ে গেল, তাই তো আমরা মত জেন-ও জানলো মাত্র সেদিন, আমরা আর কি বুঝমু ভা-য়া-ই? কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়, জেড যদি জী হয় তবে জি কি হবে, এটা কি ইফ যদি ইজ হয় বাট কিন্তু হোয়াট কি হবে রে ভা-য়া-ই?

আমার এই লেখাটা কি ব্যাঙ্গ, রম্য না রঙ্গ বুঝাতেছি ণ, ভাষা বর্ণনায় মিশাল দিয়া ফালাইছি, কথ্য, আঞ্চলিক আর সাধু ঘোটা মিক্স হয়ে গেছে, ঠিক যেমনটা আমাদের দেশের লোকজনের রক্তে হয়ে আসছে বংশ পরম্পরায় ধরে। এবার তবে ব্যঙ্গ রচনায় ঘোড়া টানি আনি ভা-য়া-ই? টুইস্ট না থাকলে কি খেলা জমে? তা যে খেলাই হোক, যত টুইস্ট তাত মজা।

ত্রিশ বছর আগেই আমি এই দ্বন্দটির কথা বলেছিলাম। দ্বন্দ মানে হোল টর্ক, এটা কিন্তু পদার্থবিদ্যায় যেমন পড়ানো হয় তেমনি মনোবিদ্যারও একটি পঠিত বিষয়। যদি গতি থাকে তবে দ্বন্দ থাকবেই, টর্ক তাই খুব স্বাভাবিক একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। একটু উদাহারণ দিয়ে বলি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তখনও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, আন্দোলন হচ্ছে একে পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় করার। আনুমানিক ১৯৯২ সালে শত বর্ষ পূর্তিতে বিশাল আয়োজনে পুর ক্যাম্পাসের প্রতিটি অনুষদে বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়েছিল । আমি মনোবিদ্যা অনুষদের স্টলে এক ছেলেকে দুই দিকে দুটা লাইট আর একটা কাগজে ভি আকা দেখে আকৃষ্ট হই কাছে যাই, সে আমাকে কলম হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলেছিল ভি এর ক্রান্তি বিন্দুতে কলমের নিবটা রাখতে, সে যে দিকের আলো জ্বালাবে সেদিকে আমি কলম চালাবো। এভাবে সে এক সময় ডানদিকেরটা জালায় তো পরের বার বাম দিকের টা, আমিও যথারীতি ভি এর দুই বাহু বরাবর কলম চালাচ্ছি, হঠাৎ একসময় সে এক সাথে দুটা বাতি জ্বেলে দেয় আর আমি থমকে যাই। তাকায়ে দেখি সে বিমল হাসি দিয়ে বলছে এটাই মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব। মাথামুন্ডু তখন কিছুই বুঝি নাই, শুধু বুঝেছি, যারা মনোবিদ্যায় পড়ে তাদের বেশির ভাগই আধা পাগল হয়, এটাও তার একটা নমুনা হবে হয়তো। অনেক পরে বুঝেছি, আমাদের জীবনে এভাবেই অনেক সময়ই এরকম দুদিকের বাতি জ্বলে উঠে আর আমরা থমকে যাই। ওই আধ-পাগলাটা আমাকে আরো বলেছিল, মানুষ যখন দ্বন্দ্বে পড়ে যায় তখন সে কালক্ষেপণ করে বা থমকে যায়, যা সময়ের অপচয়, তার উচিত যে কোন একটাকে বেছে আগায়ে যাওয়া, তাতে তার অপর্চুনিটি লস কমে যাবে। আমি ওই সময়ের বহুবছর পর ব্যবসা প্রশাসন পাঠকালে অপরচুনিটি লস কাকে বলে বুঝেছি, তাই ওই সময় ওই ছাত্রটিকে আমার আধপাগলাই মনে হয়েছিল। জাতির সামনে তাই আজ প্রশ্ন, এই দ্বিধায় পড়ে থ মেরে বসে থাকবেন না কি কচু কাটা শুরু করবেন?

জুলাই ২০২৪ এর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন (জুলাই বিপ্লব-২০২৪) পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ পর্যালোচনায় আমি বিভ্রান্ত বোধ করছিলাম। ৬ মাস পর বুঝতে পারলাম মূল দ্বন্দ্বটা কোথায় আর তখন অবাক হয়ে দেখলাম এই প্রসঙ্গে আমার বন্ধু আড্ডায় বলা সেই কথাটা এতদিনে বাস্তবতায় আত্মপ্রকাশ করছে? পদার্থবিদ্যার ছাত্র আমি তখন, কলেজ বন্ধু জিয়ার বাসায় আমার প্রায়ই যাওয়া হতো। আনুমানিক ১৯৯৫ সালের দিকে সেরকম একদিন কয়েকজন বন্ধু আমরা সমবেত হয়েছিলাম ওর বাসায় আর তখন কথা প্রসঙ্গে আমি বলেছিলাম, দেশে দুটি ভিন্ন ধারার শিক্ষাক্রম বা ব্যবস্থা চলমান আছে, এক সময় না এক সময় এই দুই শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে একধরনের সংঘর্ষ হবেই। সেই সংঘর্ষ কেন হচ্ছিল না তা আমি বুঝতে পারতাম না কিন্তু ৩০ বছর পর আজ যা দেখছি সেই সংঘাতের জায়গাটাই ফুটে উঠেছে। স্যামুয়েল এইচ হানটিংটনের বিখ্যাত গবেষণা পত্র ”ক্ল্যেস অব সিভিলাইজেশনস” প্রসঙ্গে প্রথম জানতে পারি ২০০৪ সালে সোনালী ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিভিশনে কর্মরত অবস্থায় শ্রদ্ধেয় আলফাজ স্যারের কাছে। তার সেই আর্টিক্যাল পড়ার বহু আগেই আমি এই সংষ্কৃতিগত ক্ল্যেস যে অবধারিত তা বুঝতে পেরেছিলাম।

দ্বিজাতি তত্ত্ব ২ বার ভেঙ্গেছিল দেশ, আবারও কি ভাংতে চাচ্ছে? বাংলা বিহার উড়িষ্যা নিয়ে যে বঙ্গ তাও ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল, ১৯০৫ সালে, পরে স্বদেশী আন্দোলন আর বঙ্গভঙ্গ রদ ১৯১৫ সালে, লর্ড হার্ডিঞ্জ এর ঢাকায় আগমন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আশ্বাস দিয়ে এপার বাংলার সহজ সরল মানুষগুলোর চোখে ধুলো দিয়েছিল। পরবর্তীতে শের-ই-বাংলা’র দ্বিজাটি তত্ত্ব ছিল অনেকটা এরকম, মোঘল আমলে মুসলিম প্রাধান্য (বৈষম্য) আর ইংরেজ আমলে হিন্দু জমিদারদের আধিপত্য (বৈষম্য) মূলত আসমুদ্রহিমাচলে দুইটি জাতির জন্ম দিয়েছে, যাদের এক করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়, তাই যদি দেশটাকে স্বাধীনতা দিতে হয়ে তবে তাকে পাকিস্তান আর হিন্দুস্তান এই দুই ভাগে ভাগ করাটা যুক্তি যুক্ত, এই মতের ঐতিহাসিক প্রমাণ আজ ভারত ও পাকিস্তান যা মহাত্মা গান্ধি চাননি, তিনি দ্বিজাটি তত্ত্বের বিরোধী ছিলেন কিন্তু তাতে তিনি সফল হননি। আমার বিচার বোধে বাংলাদেশের এই বর্তমান সংকটটিও একটি নব্য দ্বি-জাতি বিভেদের ফলশ্রুতি। বিভেদটা স্বাধীনতার পক্ষের বিপক্ষের শক্তি নয়, বিভেদটা অন্য জায়গায়। দুই বিপরীত ধারার শিক্ষাক্রমই এই সংকটের মূল যা ছিল আমার ৩০ বছর আগের একটি অনুমান। আমার এককালের সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুর বাড়িতে এক আড্ডায় বলেছিলাম কথাটা। আচ্ছা আমাকে একটু বুঝায়ে বলবেন কি? একই দেশে দুই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা কেন ছিল এতদিন? দুই ধারার শিক্ষায় শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে এক সময় সংঘাত হবেই তা আমি ৩০ বছর আগে আমার মত আবে হালায় বুঝেছিল। আমি অবাক হতাম হচ্ছে না কেন তা চিন্তা করে। হওয়াটা তো স্বাভাবিক ছিল আরো বহু বছর আগেই। এখন বুঝি কেন হয়নি, পশ্চিমা ধারার শিক্ষাক্রমে যারা শিক্ষিত তারা এগিয়ে ছিল আর মাদ্রাসা ধারায় যারা শিক্ষিত তারা পেছনে ছিল, আজ তারা তাদের দাবি নিয়ে সামনে আগাতে শুরু করেছে, কারণ আর কিছুই না, এই দেশটা তে তো তাদেরও সমান অধিকার, তা হলে কেন পশ্চিমা ধারায় শিক্ষিতরাই কেবল সর্বক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে? পুর দেশ ইসলাম বান্ধব আর সেই ধারার শিক্ষিত মানুষেরা পশ্চাদপদ হিসেবে সমাজে অবহেলিত, তা কি করে হয় ভা-য়া-ই? তাই আজ সংঘাতটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

বাস্তবতা সবাই এক সাথে এক চোখ দিয়ে দেখে না, সবাই খন্ডিত বাস্তবতাটা দেখে, সংবাদ মাধ্যম তাতে হেল্প করে, মানে সবার দৃষ্টিটার সীমাবদ্ধতা দুর করতে হেল্প করে। সংবাদ মাধ্যম গুলোর মাধ্যমে আর বিভিন্ন মানুষ জনের সাথে আড্ডায় আমার হয়তো পুর বাস্তবতার অনেকটাই একসাথে দেখতে পাই, অনেকটা বার্ড আই ভিউর মত। ১৮ কোটি মতান্তরে ৪৩ কোটি জনগোষ্ঠীর সবাইকে খুশি ও শুখি করতে পারে এমন ব্যক্তি তার সংশ্লিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক গন সহ প্রকৃত অর্থে মহামানব। মানব প্রকৃতির কেউ যদি তাতে সফল হয়ও তবে সে মানবাকৃতির অন্য কিছু হবে হয়তো। এই রাজনৈতিক টানা-পোড়নটা আমার মানসে প্রচন্ড ঝড় তুলেছে, কোন কিছু ঠিক মত করতেই পারতেছিনা। চিন্তা ভাবনা থেকে শুরু করে প্রাত্যহিক কাজে সব গন্ডোগোল বেধে যাচ্ছে। আমার সন্তানদের আমি বিগত বছরে একটা কথা খুব গুরুত্ব দিয়ে শিখাইলি “অনেক মানুষের দেশে জন্মাইছো, এখানে কেউ সেধে দিবে না, কাইরা নিতে হবে” । দেশে এক দল আরেক দলকে সেধে কিছু দিবে না, এক দল আরেক দলের কাছ থেকে কেড়ে নিবে ক্ষমতা, এই সূত্রই আজকালকার রাজনৈতিক বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করতে পারে মনে হচ্ছে।

আমার সব লেখারেই উপসংহার আছে, এটারটায় বলতে চাই, বিশ্বের অন্যান্য জাতির তুলনায় এ জাতিটা পুরাতন কিন্তু স্বাধীন ভুখন্ড প্রাপ্তির সময়কাল থেকে ধরলে মাত্র তার ৫০ বছর উত্তীর্ণ হয়েছে, তাই যেন কৈশরিক উন্মাদনা প্রদর্শন করছে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দেন, চারটি গণতান্ত্রিক অধিকার ১)ব্যক্তিগত ২)মালিকানা ৩)বিশ্বাস ৪) বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত নিরঙ্কুশ করে দেন, তা আজ হোক আর কাল হোক দিতেই হবে, নয়তো ”পুনর মুষিকি ভব” জসিমুদ্দিনের সেই গল্পটা সত্য হয়ে যাবে। ভা-য়া-ই মাফ করবেন আমার বাঙ্গালী হওয়ার সাধ মিটে গেছে, আমি এখন ক্যানাডিয়ান হয়ে বাচতে চাই, ও ভাই কেনাডা আমারে নিবা? আমারে পুরাপুরি নেওন লাগবো না, আমার পোলা মাইয়াডিরে নাও দয়া কইরা।
 

সম্পাদনা ও উন্নয়ন ইতিহাসঃ ২০ফেব্রুয়ারী২০৪> ১০মার্চ২০২৫>২৬মার্চ২০২৫> 


Wednesday, March 12, 2025

DExSA futsal 2024 & Hajaribag buriganga boat ride

 

Written by Musab Bin Surzil

DATE:     29-NOV-2024
VENUE:    
RIVERSHORE SPORTS ARENA, RAYER BAZAAR, HAZARIBAG

On 29th November, 2024 me and my parents started driving to the River shore Sports Arena. My dad was going to a Futsal event in Hazaribag, beside the Buriganga river. Futsal means a modified form of football played with five players per side on a smaller, typically indoor, pitch. My dad was a player in the event, and so me and my mom also decided to go.

It was a long trip to Hazaribag. There were many ssc-hsc batches there. The oldest batch there was the 81-83 batch. DExSA means "Dhanmondi  Boys Govt. High School's (Estd. 1965) Ex-student's Association. In earlier times the Rivershore sports arena was called the Sand Field (বালুর মাঠ). My dad was in the 89 SSC batch and was playing against the 94-96 batch, who were 7 years younger.

The arena had an astroturf field instead of sand. My father's match  started a few minutes later. Many of my dad's friends were there. A few people were late to the match, like my dad's close friend Runu uncle, who was also in the 89 batch.

After the match began, the 94-96 batch had already fired a goal. They were more fit and were younger, so they had the better chance of winning. After a few minutes the 94-96 batch won.

After the 94-96 batch won we decided to explore the area beside the Buriganga river. There was a long walkway that lay beside the river. There was a very steep incline after the barriers, after which was where the river flowed. After a long walk, we reached a dock where people could cross the buriganga river by boat.


 
My dad spoke to one of the majhi's and he agreed to take us on a boat ride for an hour.Runu uncle's wife, Sonia aunty, was scared on getting on the boat, since the waves rocked the boat a lot. However, the majhi eventually convinced her to get on the boat. There were many cargo vessels and boats on the water. We saw a lot of Kuchuripana plants on the water. After a barge passed by us, our boat was rocked by the waves. The boat was very low to the ground, both when we were getting on and during the boat ride. The ride was very enjoyable but it was also very thrilling, as when we were getting off the boat felt like it would sink.


As we came near the docks we saw more and more boats. After the boat ride was over we all headed back home. This was my first time going to a futsal match. This was also the first time I went on the Buriganga river on a boat ride.

Finally uploaded in Blogspot on 12-Mar-2025.

 

Thursday, March 6, 2025

ভবিতব্য নিয়ে আমার একটি ব্যক্তিগত জরিপ

 

জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী কয়েক মাসে আমি স্বপ্রণদিত হয়ে একটি ব্যক্তিগত সার্ভে করেছিলাম। আমার পরিচিত মহলের সর্ব স্তরের লোকজনকে আমি ৫টা স্পেসিফিক অপশনের মধ্যে থেকে একটি সম্ভাব্যতাকে অনুমান করতে বলেছিলাম আর তার রেকর্ড রাখছিলাম, এটা অনেকটা নিজের স্টাইলে জনমত যাচাই প্রচেষ্টা। আগেই বলে রাখি নিচের ফলাফলটি সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সালের, তাই তদপরবর্তী পরিস্থিতির পরিবর্তনে এই ফলাফল আর কার্যকরী থাকার কথা না। তবে আমার দুটা ভবিষ্যৎ অনুমান ইতোমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়ে গেছে, তাই নিজের চিন্তাভাবনা গুলোর উপর কিছুটা আস্থা পাচ্ছি।

জনমত জরীপের প্রশ্নটি ছিল এরকম, জুলাই বিপ্লবের পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে যে নির্বাচন হবে তার ফলাফল কি হতে পারে বলে আপনি মনে করেন? A, B, C, D & E, এই পাচটির মধ্যে একটি বেছে বলেন। কেউ কেউ বলেছে, আমি চাই A হোক কিন্তু হবে C, তখন তাকে বলেছি আপনি যা হবে বলে ভাবছেন সেটা বলেন। তাদের উত্তর গুলো শুনে টালি করে নিচের ফলাফলটি পেয়েছিলাম, যা বর্তমানের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভিন্ন ফলাফল দিতেই পারে।

--------- সার্ভের সময়কাল ------ :: সেপ্টেম্বর – ডিসেম্বর ২০২৪ :: -----

A = একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসতে পারে। ৩৮%
B = দুই তৃতীয়াংশ জনসমর্থনে বিএনপির নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করতে পারে। ২৮%
C = ছাত্রদের একটি নতুন দল গঠিত হবে এবং তারা সরকার গঠন করতে পারে। ২০%
D = মুসলিম ধর্মীয় দলগুলোর মোর্চা গঠিত হবে ও তারা সরকার গঠন করতে পারে। ১০%
E = উপরের কোনটিই হবে বলে মনে হয় না, অন্য কিছু হতে পারে। ৪%

আমার তখনকার চিন্তা ভাবনাতে A to D এই ৪টি পরিণতিই কেবল সম্ভব হতে পারে বলে মনে হয়েছিল, তার পরও আমি E অপশনটা রেখেছিলাম, আউট অফ দ্যা বক্স কেউ যদি কিছু বলে। উপরের পাই-চার্টটিতে পাঁচটি অপশনের স্টেক প্রতিটি ভোট সংগ্রহের পর বদলে যাচ্ছিল, যা আমি উপভোগ করছিলাম । একটি সময় এই সার্ভে শেষ করি যখন একটি স্যাম্পল সাইজ পূর্ণ হয়। তাতে দেখা যাচ্ছে আমার পরিচিত লোকজনের মতামতে অধিকাংশই সর্বদলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রত্যাশা করেছে কিন্তু তাদের স্টেকও কিন্তু দুই তৃতীয়াংশ হয়নি, বরং বিএনপির অধিকতর জনসমর্থনে সরকার গঠন করতে পারার পক্ষে বহু জন মত দিয়েছেন, যা আমার জরীপে দ্বিতীয় বৃহত্তম স্টেক। কোটা আন্দোলনে ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যে সকল ছাত্র ও সমন্বয়করা কাজ করেছেন তাদের যে একটি দল গঠন করতেই হবে তা আমি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম, যা আজ সত্য হতে দেখা গেল। কিন্তু সেই C অপশনের স্টেক মাত্র ২০%, আর মুসলিম ধর্মীয় দলগুলোর মধ্যে যে একটা সমঝতা হতে পারে তাও কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম তখনই, যা পরবর্তীতে সবাই হতে দেখেছেন। আমার জনমত জরীপে এই ডি অপশনের স্টেক মাত্র ১০%। তার মানে হলো C+D = ৩০% হয়, তার পরও তারা A ৩৮% অতিক্রম করতে পারেনি। দুই তৃতীয়াংশ মানে হলো অন্তত পক্ষে আপনাকে ৬৬.৬৬% এর ক্রান্তি বিন্দু অতিক্রম করতে হবে। আমার জরীপে দুই তৃতীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ সেরকম কোন প্রতিফলন দেখতে পেলাম না। জরীপটির বটম লাইন তাই বলা যায়, বেশির ভাগ লোক একটি সর্বদলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন চাচ্ছেন কিংবা হবে বলে প্রত্যাশা করছেন। আমার মনে হচ্ছে পরিস্থিতিগত কারণে পূর্ণ নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনেকের প্রত্যাশা হলেও সেই প্রত্যাশা মনে হয় পূরণ হবার নয়।

মাঝে মাঝে অসুর উঠে আসে সভ্যতা বিনাশে, কিন্তু মেঘনাদ বধের মত তাকে বধ না করলে সভ্যতা টিকে না। দেশে যে অসুর উঠেছিল তার বধ হয়েছে, নতুন কোন অসুর উঠলে তারও বধ হবে একদিন না একদিন। একজন কামাল পাশার আমাদের এখন খুব দরকার বলে মনে হচ্ছে। কাজী নজরুলের কামাল পাশা কবিতাটা মনে পড়ে গেল  “অসুর-পুরে শোর উঠেছে জোরসে সামাল সামাল ভাই। কামাল! তু নে কামাল কিয়া ভাই !” রাজনৈতিক বিষয়ে আমার যে কয়টা লেখা আছে ২০২৪ সালের শেষের দিকের কয়েকটাতে আমি বিগত সরকারের বৃহৎ প্রজেক্টগুলো সফলতার সাথে শেষ করে চালু করে দেওয়াতে অনুরক্ত হয়ে পরেছিলাম তার প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু পিছন দিয়ে যে তারা গাঁঠ কাটছে আর পুকুর ডাকাতি করছে তা তাদের অপসারেনের পর জানতে পেরে বিশ্বয় বোধ করেছি ও বিরক্ত হয়েছি। ইসলামী শরিয়া ভিত্তিক ব্যাংক গুলোতে এস আলম গ্রুপ যে ডাকাতি করে গেছে তা কিন্তু সবাই দেখছিল, তখন আমার একটা লেখা “দেকি না কি করে” ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যঙ্গাত্মক উক্তি দিয়ে প্রকাশ করেছিলাম। সবার চোখের সামনে দিয়ে ওরা এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ গুলোর টাকা পাচার করে নিয়ে গেল, তা তৎকালীন সরকার না দেখার ভান করে বসেছিল, এটা তো কোন ভাবেই সমর্থন করা যায় না। তেমনি শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারির সময়ও বিগত সরকারের এক উপদেষ্টা জড়িত ছিল তা জানা সত্যেও তাকে কেন উপদেষ্টা করা হলো তা আমার বোধগম্য হতো না। কোন একটা বাসায় বহুদিন থাকার পর সেই বাসা বদল করলে বা আসবাব পত্র সরালে নিচ থেকে যে ময়লা আবর্জনা বের হয়ে আসে, বিগত সরকারের পতনের পর সেরকম জঘন্য সব ময়লা আবর্জনা বের হয়ে জনসমক্ষে চলে আসছে। তা থেকে বুঝা যায় এদেশে হা’ভাতের সংখ্যা এখনও কমে নাই, সুযোগ দিলেই যে কেউ গোগ্রাসে গিলতে থাকবে হয়তো আবারও।

 

Google মামা Wikipedia র বরাত দিয়ে বললেন চীনা দর্শনে ইন এবং ইয়াং (চীনা: 陰陽 yīnyáng, "অন্ধকার-উজ্জ্বল", "ঋণাত্মক-ধনাত্মক") এই কথা বোঝায়, যদিও দেখতে বিপরীত শক্তি সমূহ কিন্তু আসলে একটি অন্যটির পরিপূরক, সম্বন্ধিত এবং পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলও বটে। ইয়িন এবং ইয়াং  চীনা দর্শনের একটি জটিল সম্পর্কগত ধারণা যা হাজার হাজার বছর ধরে বিকশিত হয়েছে। ইয়ানইয়াং প্রসঙ্গে ব্রিটানিকা বলছে আরো বিস্তারিত, তাতে উল্লেখ আছে চিনের অতি প্রাচীন চিন্তাধারায়, দুটি পরিপূরক শক্তি যা জীবনের সমস্ত দিক এবং ঘটনা তৈরি করে। একটি বাড়ার সাথে সাথে অন্যটি হ্রাস পায় যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সকল প্রক্রিয়া এবং এর মধ্যে থাকা সমস্ত কিছুর বর্ণনা করা যায়।  ”ইয়ান-ইয়াং” ধারণার উৎপত্তি অস্পষ্ট তবে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে চীনে, এটি বিশ্ববিক্ষায় একটি সম্পূর্ণ চিন্তাধারার ভিত্তি তৈরি করেছিল (ইনইয়াং স্কুল), যার প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন জু ইয়ান । সংক্ষেপে বলতে গেলে, ইয়িন এবং ইয়াং-এর অর্থ হল মহাবিশ্ব একটি মহাজাগতিক দ্বৈততা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, দুটি বিপরীত এবং পরিপূরক নীতি বা মহাজাগতিক শক্তির সেট যা দিয়ে প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করা যায়। প্রকৃতির সকল সূত্র কে এক সূত্রে আনার চেষ্টাটা মানে থিওরি অব এভ্রিথিং কেবল পদার্থবিদরাই করেছেন তা নয়, বরং এই দর্শনের কাজটি বহু আগেই শুরু হয়েছিল। তারই একটা প্রত্নতাত্ত্বিক উদাহরণ এই ইয়ান-ইয়াং। আইনস্টাইন আর হকিং সাহেব যার জন্য উঠে পরে লেগেছিলেন, সমাধান করতে না পেরে ফেলে রেখে চলে গেছেন, একটা গাণিতিক থিওরি অব এভ্রিথিং যা চীনারা খৃষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দতে অগাণিতিক ভাবেই পেয়ে গিয়েছিল। আমার কাছে এটা সুর-অসুরের ঘূর্ণায়মান বাস্তবতার প্রতীক।  আমি এতদিন ভুল জানতাম, মনে করতাম এটা কনফুসিয়াস মতবাদ হবে হয়তো। ইয়ান-ইয়াং যে সম্পূরক শক্তিকে নির্দেশ করে তাও বুঝতাম না, ভাবতাম একটা ভালো ও অন্যটা মন্দের পর্যায়ক্রমিক উত্থান ও পতন, সনাতন কিংবা হিন্দু ধর্মে যেটাকে বলা হয় সৃষ্টি-প্রলয়-ধ্বংস কিংবা সমাজ তত্বে যেটা নেগেশন অব নেগেশন বলে সেরকম কিছু একটা। ১৯৯০ এর ডিসেম্বরে এরশাদ সরকারের পতনের পর এই ইয়ানইয়াং এর চক্র চলছিল দেশটাতে, বর্তমানে জুলাই বিপ্লব উত্তর সংগ্রাম রত বৈষম্য-বিরোধী ছাত্ররা তা বদলাতে চাচ্ছেন ও নতুন দল গঠন করেছেন যা ওই চক্রটাকে হয়তো ভেঙ্গে দিবে আশা করা যায়। প্রশ্ন হলো এই নতুন দল যার বয়স মাত্র কিছু দিন তারা কি বহু বছর ধরে রাজনীতি চর্চা করা বৃহৎ দলগুলোকে টপকে দেশটাতে সত্যি সত্যিই নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারবেন? একমাত্র সময়ই বলে দিবে তারা সফল হবে না কি বিফল হবে। আমার হিসেবে সফলতার সম্ভাবনাটা কম, তার পরও আশা করতে তো কোন দোষ নাই। 

এ যাবত যা দেখে আসলাম এদেশেও  ইং-ইয়ান চলে। একবার এ তো পরের বার ও, এই খেলা চলে। চলুক, এই ফাকে একদল মজা লুটে নেয়, খেলা চলতেই থাকে। তবে তৃতীয় একটা পক্ষ যারা এবার পিছন থেকে কল কাঠি নেড়েছে, তারা আর গোপন নাই, সবাই জানে, ওরা এবার ফসল তুলতে চাইবে, তবে বাঙ্গালী অত সোজা না, ফসল তুলতে পারতেও পারে কিন্তু হজম করতে পারবে বলে মনে হয় না। দুর থেকে মাছ শিকার করা যায় না, রাঘব বোয়াল রা সব হা করে আছে, পুরা গিলে ফেলবে। 

 

আমাদের দেশের একটা অতীত আছে। উরে এসে জুরে বসা কোন সেন্টিমেন্ট সাময়িক কাজ করতে পারে কিন্তু দেশের আপামর জনসাধারণের মানুষিকতার ভাইবটা বুঝতে হবে। দেশের মানুষগুলোকে কাঠ-পাথর-লোহা-তামা-কয়লা বললে তো হবে না, এক মুজিব লোকান্তরে লক্ষ মুজিব ঘরে ঘরে, এক জিয়া লোকান্তরে লক্ষ জিয়া ঘরে ঘরে - এক এরশাদ লোকান্তরে কিন্তু কোথাও সে আর নাই, এক হাসিনা আত্মগোপনে কিন্তু সেও কোথাও নাই বর্তামানে। মুজিব আর জিয়া, মওলানা ভাসানী, শেরে এ বাংলা, এদের কে যে বা যারা অবজ্ঞা করেন, তারা এ মাটিতে বসবাসের অধিকার রাখে বলা যায় না।

বাঙ্গালীর বাঙ্গালীয়ানা এ দেশের মাটি আর নদীর সাথে ওতো প্রতো ভাবে জড়িত। তাই নৌকা কিংবা ধানের শীষ এই দুটাই টিকবে বাকিগুলো আশে পাশে থাকতে পারে কিন্তু মূল ধারায় কখনই আসতে পারে বলে মনে হয় না, এটা এ দেশের জন্য চিরন্তন সত্য বলেই মনে করা হতো। এখন পরিস্থিতি বদলেছে, কোথাকার পানি কোথায় গড়ায় তাই এখন দেখার বাকি।

 

সামনে একটা ত্রিমুখী কিংবা চতুর্মুখী সংঘর্ষ আনন্ন বলে মনে হচ্ছে, এটা আন্ত জাতিগত ক্ষমতার লড়াই যা উপর থেকে বুঝার কোন উপায় নাই। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, দেশটা একটা অস্থিতিশীলতা কিংবা অন্তর্বর্তী অবস্থায় থাকা অবস্থায় জনগণের মধ্যে তীব্র চঞ্চলতা। অর্থনৈতিক ফান্ডের স্থানান্তরেও সেই চঞ্চলতা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। এটা মোটেও স্বাভাবিক বলে মনে হয় নাই আমার কাছে। চতুর্মুখী একটা প্রভাব বলয় সংঘাত আসন্ন বলে আমার মনে হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলার অবনতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৈকল্যর সম্ভাবনা আছে বলে ভয় হয়। সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি বিচার করে যার যার মত নিজেদের সংরক্ষনের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।

আমি বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার পুনর্মিলনের স্বপ্ন দেখি, যা এখন অসম্ভব। কিন্তু দুই বাংলাকে একত্রিত করে একটি একক রাষ্ট্র গঠন করা যেতেই পারে। আমরা এর জন্য চেষ্টা করতে পারি বা করা উচিত বলে মনে করি, কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি তাও সম্ভব নয়। হয়তো কখন সম্ভবও হবেও না। যে কেউ আমার এই মতের সাথে দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন, অনেক মানুষের অনেক মন, ভালোবাসাই হলো সকল পরস্পরবিরোধী ধারণা ও সংঘাত এড়ানোর একমাত্র উপায়।

যা হোক, উপরের সার্ভেটা আমি পুন পরিচালনা করবো এপ্রিল থেকে জুলাই -2025 পর্যন্ত, তাই আপনার মতামত এখনকার পরিস্থিতিতে ওই পাঁচটা অপশনের কোনটা তা আমাকে জানায়ে রাখতে পারেন, ফলাফলে তো কারো নাম প্রকাশ পাবে না, তাই নির্ভয়ে ও গোপনে জানায়ে রাখতে পারেন। ওটার ফলাফলও আমি  এই লেখায় পরবর্তীতে সংযোজিত করে রাখবো।

বিঃ দ্রঃ আমার লেখাগুলো আমার ব্যক্তিগত অভিমত, কারো ভিন্ন মত থাকতেই পারে, তার মতের প্রতি আমার কোন হিংসা কিংবা বিদ্বেষ নাই, সে তার মত করে ভাবতেই পারে, আমি তার চিন্তা ভাবনার প্রতি কোন বিরূপ মনোভাব পোষণ করি না, পরমত সহিষ্ণুতা আমার একটা প্রায়োগিক গুন বলে আমি মনে করি। পর মত সহিষ্ণুতা, যা একটি চর্চাও। অহিংসাও একটি চর্চা, যাকে ভারতীয়রা গান্ধীগিড়ি বলে থাকে, বলিউড হাস্যরসাত্মক মুভি “মুন্না ভাই এমবিবিএস”এ কিন্তু এই গান্ধীগিড়ি নিয়ে রস করে তার উল্লেখ করা হয়েছে। যে কোন ধর্মীয় প্রথাও কিন্তু এক প্রকার চর্চা, ধর্মীয় চর্চা, এর অতিরিক্তই মৌলবাদ নামে সচরাচর অভিহিত হয়।

সম্পাদনা ও উন্নয়ন ইতিহাসঃ ৫ জানুয়ারী২০২৫> ৫মার্চ২০২৫>